দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় তিন বছর ধরে কারাগারে থাকা ভুল আসামি টাঙ্গাইলের জাহালম মুক্তি পেয়েছেন। হাইকোর্টের আদেশের পর রোববার রাতে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্ত হলে তার ভাই শাহনুরকে সাথে নিয়ে রাতেই গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার ধুবুড়িয়াতে পৌঁছান জাহালম।
এদিকে আজ সোমবার সকাল থেকেই জাহালমকে একনজর দেখতে তার গ্রামের বাড়িতে ভিড় করে শত শত মানুষ।
একটি জাতীয় দৈনিকে ‘৩৩ মামলায় ভুল আসামি জেলে’ ‘স্যার, আমি জাহালম, সালেক না’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, আবু সালেকের (মূল অপরাধী) বিরুদ্ধে সোনালী ব্যাংকের প্রায় সাড়ে ১৮ কোটি টাকা জালিয়াতির ৩৩টি মামলা হয়েছে। কিন্তু আবু সালেকের বদলে জেল খাটছেন জাহালম। তিনি পেশায় পাটকল শ্রমিক।
ওই প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন সুপ্রিম কোটের আইনজীবী অমিত দাস গুপ্ত। প্রতিবেদনটি আদালতে উপস্থাপনের পর স্বপ্রণোদিত হয়ে রুলসহ আদেশ দেন হাইকোর্ট।
মুক্তির পর জাহালম তার ভাই শাহানুর মিয়াকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন। কারাগার থেকে ভাই শাহানুরের সঙ্গে ভোররাত ৪টায় গ্রামের বাড়িতে আসেন জাহালম। জাহালমকে দেখে জড়িয়ে ধরে মা মনোয়ারা বেগম কাঁদতে থাকেন। রাতে জাহালমকে দুধ দিয়ে গোসল করিয়ে ঘরে তোলা হয়।
এদিকে আজ সোমবার সকাল থেকেই জাহালমকে একনজর দেখতে ভিড় করে গ্রামের মানুষ। ধুবুড়িয়া গ্রাম ছাড়াও আশপাশের গ্রামের লোকজনের ঢল নামে জাহালমের বাড়িতে। জাহালম ও তার পরিবারের সদস্যরা অমানবিক এই ঘটনার বিচার এবং ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে।
সোনালী ব্যাংকের প্রায় সাড়ে ১৮ কোটি টাকা জালিয়াতির অভিযোগে আবু সালেক নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে ৩৩টি মামলা করে দুদক। কিন্তু দুদকের ভুলে সালেকের বদলে তিন বছর কারাগারে কাটাতে হয়েছে টাঙ্গাইলের জাহালমকে।