অমর একুশে গ্রন্থমেলা : আজ নতুন বই এসেছে ৯১টি

ডেস্ক রিপোর্ট

অমর একুশে গ্রন্থমেলা
ফাইল ছবি

আজ ২৪ ফেব্রুয়ারি রোববার অমর একুশে গ্রন্থমেলার ২৪তম দিন। গ্রন্থমেলা চলে বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। মেলায় আজ নতুন বই এসেছে ৯১টি।

বিকেল ৪টায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় বলধা গার্ডেন : আমাদের উদ্যান-ঐতিহ্য শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মোকারম হোসেন। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন হাশেম সূফী, মোহাম্মদ আলী খান, নূরুন্নাহার মুক্তা। সভাপতিত্ব করেন বিপ্রদাশ বড়–য়া।

প্রাবন্ধিক বলেন, আমাদের অন্যতম উদ্যান-ঐতিহ্য বলধা গার্ডেন আজ বিপন্ন। চারপাশের সুউচ্চ দালানকোঠা বাগানের বিরল সংগ্রহকে হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছে। তাছাড়া বিভিন্ন দুঃসময় ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে হারিয়ে গেছে বাগানের অনেক গুরুত্বপূর্ণ সংগ্রহ। সঠিকভাবে পরিচালনার অভাবেও এসব হারিয়ে যেতে পারে বলে কেউ কেউ ধারণা করেন। কারণ বলধা বাগানের সমস্ত সংগ্রহের

উৎস, পরিচয়, পরিচর্যার পদ্ধতি, গুনাগুণ সবকিছুই লিপিবদ্ধ ছিল। বলধা বাগানের সমপরিমাণ জায়গা নিয়ে অথবা বিকল্প কোনো নকশায় মূল বাগানের প্রতিটি উদ্ভিদের চারা একটি করে রোপণ করে সৃষ্টি করা যায় নতুন বলধা গার্ডেন। এরজন্য আগে থেকেই বানাতে হবে বিশেষ বীজতলা, বীজ আসবে বাগান থেকে, ইতোমধ্যে যেসব গাছ হারিয়ে গেছে তা আবার সংগ্রহ করতে হবে, যেসব গাছ বংশবৃদ্ধির ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে সেসবও। তবে খেয়াল রাখতে হবে কোনোভাবেই যেন উদ্যানের পুরনো নকশার বিকৃতি না ঘটে, আদি উদ্যানও অবহেলার শিকার না হয়। বাগানের নাম ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক ক্ষেত্রে কোনো ধরণের পরিবর্তন বাঞ্ছনীয় নয়।

আলোচকবৃন্দ বলেন, বলধা গার্ডেন নেহায়েত একটি উদ্যান নয়, এটি আমাদের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের অন্তর্গত অঞ্চল। এই উদ্যান নগর ঢাকার নৈসর্গিক সৌন্দর্যকে ধারণ করে আছে বহুকাল। এই উদ্যান রবীন্দ্রনাথের স্মৃতিবিজড়িত, বহু স্মরণীয় কবিতা ও সাহিত্যকর্মের জন্ম হয়েছে এই উদ্যানে।

তারা বলেন, আজ কালের প্রহারে ঢাকার উদ্যান-ঐতিহ্য হারিয়ে যেতে বসেছে প্রায়। মানুষের প্রকৃতি-বিধ্বংসী প্রবণতা বলধা গার্ডেনকেও গ্রাস করতে উদ্যত হয়েছে। ঢাকাকে বাঁচাতে হলে ধ্বংসের হাত বলধা গার্ডেনসহ আমাদের উদ্যান-ঐতিহ্যের আশু সুরক্ষা প্রয়োজন।

সভাপতির বক্তব্যে বিপ্রদাশ বড়–য়া বলেন, বলধা গার্ডেন শুধু বাংলাদেশের নয় সামগ্রিকভাবে বিশ্ব উদ্যান-ঐতিহ্যের অন্যতম সংযোজন। এখানে বৃক্ষরাজি-তরুলতার যে বৈচিত্র্যপূর্ণ সমাবেশ ঘটেছে তা যেমন প্রাণপ্রকৃতির রক্ষাকবচ অন্যদিকে শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতিরও প্রেরণাদায়ক। কালের বিবর্তনে এই উদ্যানের বিন্যাসে পরিবর্তন এলেও এর মূল কাঠামো অক্ষুণœ রাখা প্রয়োজন।

লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন প্রকাশিত গ্রন্থ বিষয়ে আলোচনায় অংশ নেন বিশ্বজিৎ ঘোষ, এম. আবদুল আলীম, বিমল গুহ, জেসমিন মুন্নী, ড. চৌধুরী শহীদ কাদের।

ছড়া পাঠ করেন ছড়াকার মাহমুদউল্লাহ, রফিকুল হক, আলী ইমাম, ফারুক নওয়াজ, লুৎফর রহমান রিটন, আমীরুল ইসলাম, আলম তালুকদার, খালেক বিন জয়েনউদ্দিন, রহীম শাহ, ফারুক হোসেন, আনজীর লিটন, সুজন বড়–য়া।

আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী ফয়জুল্লাহ সাঈদ এবং সৈয়দ শহীদুল ইসলাম।

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ছিল এ. কে আজাদের পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘আনন্দন’ এবং প্রসাদকৃষ্ণ ভট্টাচার্যের রচনায় এবং ভিক্টর দানিয়েলের পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী’র পরিবেশনা।

আগামীকালের কর্মসূচি :

আগামীকাল ২৫ ফেব্রুয়ারি সোমবার মেলা চলবে বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত।

আলোচনা অনুষ্ঠান : বাংলাদেশের অনুবাদ সাহিত্যের চালচিত্র বিকেল ৪টায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে বাংলাদেশের অনুবাদ সাহিত্যের চালচিত্র শীর্ষক

আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন অধ্যাপক কাজল বন্দ্যোপাধ্যায়। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন মানিক মোহাম্মদ রাজ্জাক, আনিসুর রহমান, আলম খোরশেদ এবং রাজু আলাউদ্দিন। সভাপতিত্ব করবেন হাবীবুল্লাহ সিরাজী।

সন্ধ্যায় রয়েছে কবিকণ্ঠে কবিতাপাঠ, কবিতা-আবৃত্তি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

গ্রন্থমেলা বিষয়ে সাপ্তাহিক সংবাদ সম্মেলন :

আজ বিকেল ৩টায় বাংলা একাডেমির শহিদ মুনীর চৌধুরী সভাকক্ষে ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৯’ বিষয়ে সাপ্তাহিক সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী গ্রন্থমেলার বিভিন্ন বিষয়ে নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন একাডেমির সচিব মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৯-এর সদস্য-সচিব এবং একাডেমির পরিচালকৃন্দ।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে