আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, দেশের উচ্চ আদালত ও অধীনস্থ আদালতে বিচারাধীন মামলার সংখ্যা ৩৫ লাখ ৬৯ হাজার ৭৫০ টি ।
যার মধ্যে আপিল বিভাগ ২০ হাজার ৪৪২ টি ও হাইকোর্ট বিভাগে ৫ লাখ ১৬ হাজার ৬৫২টি। আর অধস্তন আদালতে বিচারাধীন রয়েছে ৩০ লাখ ৩২ হাজার ৬৫২টি মামলা। এসব মামলার মধ্যে ফৌজদারী মামলার সংখ্যা ২০ লাখ ৪৮ হাজার ৬৭টি।
সরকার এই মামলা জট কমানোকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে আজ সোমবার একাদশ সংসদের বৈঠকে এম আবদুল লতিফের (চট্টগ্রাম-১১) ও সৈয়দ আবু হোসেন বাবলার (ঢাকা-৪) তারকা চিহ্নিত পৃথক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী এসব তথ্য জানান।
জাতীয় পার্টির এমপি কাজী ফিরোজ রশীদের এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানান, নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনালে মামলা নিষ্পত্তি বিলম্বিত হবার কারণ অনেকে ভয়ে মামলা করতে যান না বা মামলার সাক্ষীগণ ভয়ে অনেক সময় আদালতে হাজির হন না। এ বিষয়ে যাতে সাক্ষীরা নির্ভয়ে আদালতে হাজির হতে পারেন সে জন্য নিরাপত্তা বিষয়ক বিভিন্ন রকমের সহায়তা দিচ্ছি।
এছাড়া মামলায় সাক্ষী দেবার জন্য অনলাইনেও ব্যবস্থা রাখার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এতে মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি হবে বলে জানান তিনি।
এছাড়া পীর ফজলুর রহমানের (সুনামগঞ্জ-৪) এর অপর এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, মতবিনিময়ের মাধ্যমে কিভাবে মামলাগুলো দ্রুত নিস্পত্তি করা যায় সে উপায় বেরিয়ে আসবে আসবে আশা করি।
এম আবদুল লতিফের (চট্টগ্রাম-১১) ও সৈয়দ আবু হোসেন বাবলার (ঢাকা-৪) তারকা চিহ্নিত পৃথক প্রশ্নের জবাবে বিচেরাধীন মামলা কমানোর নানা উদ্যোগ তুলে ধরে আইনমন্ত্রী বলেন, ২০১৪ সাল থেকে এ পর্যন্ত অধস্তন আদালত ৫৭১ জন সহকারি জজ নিয়োগ দেয়া হয়েছে। সারাদেশে চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট/চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পর্যাপ্ত পরিমাণ বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা পদায়ন করা হয়েছে।
১২তম জুডিসিয়াল সার্ভিস নিয়োগ পরীক্ষার মাধ্যমে সহকারী জজ নিয়োগ এর কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এ বছরের শূন্যপদ বিবেচনায় বিজ্ঞাপনে উল্লেখিত সংখ্যার অতিরিক্ত ৫০ জনসহ মোট ১০০ জনকে সহকারী জজ পদে নিয়োগের সুপারিশ করার জন্য বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনকে অনুরোধ করা হয়েছে । আরো ১০০ জন সহকারী জজ নিয়োগ এর জন্য বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশন বরাবর চাহিদা পত্র পাঠানো হয়েছে।
আইনমন্ত্রী আরও বলেন, সরকারি নারী ও শিশু পাচার সংক্রান্ত মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য সারাদেশে আরও ৪১ টি ট্রাইব্যুনাল সৃষ্টি করেছে। আরও সাতটি ট্রাইব্যুনাল সৃষ্টি অনুমোদন পাওয়া গেছে। এছাড়া ৯৫টি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে দায়েরকৃত মামলার নিষ্পত্তি করা হচ্ছে । সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে মামলা নিষ্পত্তি করা হচ্ছে । এসব ট্রাইব্যুনাল সমূহের জন্য ২৪০ কর্মচারীর পদ সৃষ্টি করা হয়েছে। বিদ্যমান অপর সাইবার ট্রাইব্যুনালে ১২২ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত, ১৫৯ টি যুগ্ম জেলা জজ আদালত, ১৯টি পরিবেশ আদালত, ছয়টি পরিবেশ আপিল আদালত, ৩৪৬ টি জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট/ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট /মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এর পদ সৃজনের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।