আদালত বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আগামী ১৩ মার্চ কারাগার থেকে আদালতে হাজির করতে কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন।
আজ মঙ্গলবার ঢাকার ২ নম্বর বিশেষ জজ এএইচএম রুহুল ইমরানের আদালত শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
একইদিন মামলাটির অভিযোগ (চার্জ) গঠনের শুনানির দিনও ধার্য করেন।
পুরান ঢাকার বকশিবাজারস্থ অস্থায়ী এজলাসে খালেদা জিয়া অরফনেজ ট্রাস্ট মামলায় কারাগারে রয়েছেন জানিয়ে আইনজীবীরা তার পক্ষে হাজিরা দেওয়ার পর এসব আদেশ আসে।
আদালত সূত্র জানায়, হাইকোর্ট এ মামলার আসামি ব্যারিস্টার মো. আমিনুল হকের বিচারিক কার্যক্রমে যে স্থগিতাদেশ দিয়েছিলেন, তা সোমবার তুলে নিয়েছেন। একই সঙ্গে বিচারিক আদালতকে ছয়মাসের মধ্যে মামলার বিচার শেষ করারও নির্দেশ দিয়েছেন। তাই আদালত ১৩ মার্চ আসামিদের আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দিয়ে চার্জগঠনের শুনানির দিন ধার্য করেছেন।
মামলার অপর আট আসামি হলেন- সাবেক তিন মন্ত্রী এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও একেএম মোশাররফ হোসেন, জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব নজরুল ইসলাম, পেট্রোবাংলার সাবেক চেয়ারম্যান এসআর ওসমানী ও সাবেক পরিচালক মইনুল আহসান, বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত ঠিকাদার সুজু কোল মাইনিং গ্রুপ কনসোর্টিয়ামের পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম এবং হোসাফ গ্রুপের চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন।
মামলায় সাবেক মন্ত্রী জামায়াত নেতা মতিউর রহমান নিজামী ও আলী আহসান মুহাম্মাদ মুজাহিদ এবং বিএনপি নেতা আব্দুল মান্নান ভূঁইয়া, সাইফুর রহমান, এমকে আনোয়ার ও এম শামসুল ইসলামও আসামি ছিলেন। প্রথম দুজনের যুদ্ধাপরাধের দায়ে ফাঁসি কার্যকর হওয়া এবং অন্যরা মারা যাওয়ায় আসামি তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ২০০৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়া ও তার মন্ত্রিসভার সদস্যসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে রাজধানীর শাহবাগ থানায় মামলাটি করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তৎকালীন সহকারী পরিচালক মো. সামছুল আলম।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দরদাতা কনসোর্টিয়াম অব চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইম্পোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট করপোরেশনকে (সিএমসি) রাষ্ট্রীয় বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির কয়লা উত্তোলনের অনুমোদন দিয়ে ওই কয়লাখনির উৎপাদন, ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণ চুক্তি করায় সরকারের প্রায় ১৫৮ কোটি ৭১ লাখ টাকার ক্ষতি হয়।
পরে এ মামলা দায়েরের বৈধতা চ্যালেঞ্জ হাইকোর্টে রিট করেন খালেদা জিয়া। ২০০৮ সালের ১৬ অক্টোবর হাইকোর্ট মামলাটির কার্যক্রম স্থগিত করেছিলেন, যা পরে তুলে নেওয়া হয়। একই বছরের ৫ অক্টোবর আদালতে এ মামলায় চার্জশিট দেওয়া হয়।