বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ডাকসু (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ) নির্বাচনে ছাত্রসংগঠনগুলো অংশগ্রহণ করছে, আমি সেটাকে স্বাগত জানাই। তিনি বলেছেন, কোন দল জিতবে কোন দল জিতবে না, সেটা পরের বিবেচ্য বিষয়।
আজ ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের আহ্বায়ক কমিটির এক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম এ মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘২৮ বছর ডাকসু নির্বাচন হয় না। এতে আরেকটি ক্যানসারের সৃষ্টি হয়েছিল। রাজনৈতিক নেতৃত্ব সৃষ্টির যে কারখানা, সেই কারখানা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের রাজনীতির প্রতি কিছুটা অনীহা সৃষ্টি হয়েছিল, পিছিয়ে যাচ্ছিল। সে জায়গায় আগ্রহের সৃষ্টি হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘কোন দল জিতবে, কোন দল জিতবে না, কাল নির্বাচনে কী হবে, সেটা আমরা পরে বিবেচনা করব। কিন্তু এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার মধ্য দিয়ে ছাত্ররাজনীতিতে একটি সুবাতাস বইবার সুযোগ হয়েছে এখন পর্যন্ত। এটাকে যদি মেইন্টেন করা যায়, তাহলে রাষ্ট্র, জাতির জন্য এটি নিঃসন্দেহে একটি ভালো কাজ হবে যে আমরা আমাদের রাজনৈতিক নেতৃত্ব সৃষ্টি করতে পারব।’
আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে ফখরুল ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগ সব সময়ই গণতন্ত্রকে ধ্বংসকারী একটি দল। ১৯৭২ সালে তারা নিজেদের সংবিধান নিজেরাই ধ্বংস করেছে। তারা মানুষের অধিকারগুলো কেড়ে নিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সবকিছু তারা নিজেদের পকেটে নিতে চায়। স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ সবকিছু। যাঁরা প্রকৃত অর্থে মুক্তিযোদ্ধা, অতীতে নেতৃত্ব দিয়েছেন, তাঁদের কাউকে আওয়ামী লীগ সম্মান দেখান না। এমনকি মুক্তিযুদ্ধের সময় যাঁরা তাঁদের দলের অবদান রেখেছিলেন, বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধের সময়ে তাজউদ্দীন আহমদ সাহেব, যিনি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, যিনি শেখ মুজিবুর রহমান সাহেবের অনুপস্থিতিতে পুরো দলকে পরিচালনা করেছেন, সেই মানুষটিকেও তারা রিকগনাইজ (স্বীকার) করে না।
আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বিএনপির মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আরও বলেন, আওয়ামী লীগ মারাত্মক যে কাজটি করছে, সেটি হচ্ছে বিশ্বাস, আস্থা নষ্ট করছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে কী দিচ্ছে আওয়ামী লীগ? প্রতারণা? জোর করে কেন্দ্র দখল করা? ভোট মারা, সিল মারা?
দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, দেশের এ অবস্থায় নিজেদের ভেতর ছোটখাটো সমস্যাগুলো সামনে না নিয়ে সংগঠনকে শক্তিশালী করতে হবে। দলের চেয়ারপারসনকে মুক্ত করতে হবে। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে দেশে ফিরিয়ে আনা আর দেশে গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করে তা প্রতিষ্ঠিত করা।
তিনি বলেন, সরকার যদি সত্যিই সুন্দর পরিবেশ তৈরি করতে চায়, তাহলে অবিলম্বে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আবার একটি নির্বাচন দিতে হবে। তা না হলে সব ধ্বংসের দায়দায়িত্ব সরকারকে নিতে হবে।’
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও কৃষক দলের আহ্বায়ক কমিটির আহ্বায়ক শামসুজ্জামান দুদুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে দলের যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলালসহ দলের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।