সিইসির বক্তব্যের খণ্ডিত অংশ নিয়ে অহেতুক বিতর্ক : হানিফ

মত ও পথ প্রতিবেদক

মাহবুব উল আলম হানিফ
ফাইল ছবি

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেছেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) নির্বাচনী অনিয়মের অভিযোগ থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য ইভিএম পদ্ধতির ব্যবহার যৌক্তিক বলে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। তার বক্তব্যের একটা খণ্ডিত অংশ নিয়ে অহেতুক বিতর্ক করার কোনো যৌক্তিকতা নেই। সেটা নিয়ে বিভ্রান্তির কোনো কারণ নেই।

আজ রোববার আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।

রাতে ব্যালট পেপারে সিল মেরে ভোটের বাক্স ভরা তথা মিডনাইট ভোট নিয়ে সিইসির বক্তব্য নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে হানিফ বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনারের বক্তব্যটা সঠিকভাবে উত্থাপন হয়েছে কি না আমরা জানি না। একটা খণ্ডিত অংশ নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। এ দেশে প্রতিটি নির্বাচনের পরই পরাজিত দল এবং পরাজিত প্রার্থীরা নির্বাচন নিয়ে অভিযোগ করেন। ইভিএম পদ্ধতি যদি ব্যবহার করা যায় তাহলে কিন্তু ব্যালটের সংশ্লিষ্টতা থাকে না। ব্যালট নিয়ে প্রার্থী বা দলের যে অভিযোগ তার যৌক্তিকতা থাকে না।’

তিনি আরও বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার হয়ত এসব অভিযোগ থেকে মুক্ত হওয়ার জন্যই ইভিএম পদ্ধতির ব্যবহার যৌক্তিক বলে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। সেটা নিয়ে বিভ্রান্তির কোনো কারণ নেই। বক্তব্যের একটা খণ্ডিত অংশ নিয়ে এ ধরনের অহেতুক বিতর্কের কোনো যৌক্তিকতা নেই।

নির্বাচনী প্রক্রিয়ার অনিয়মের কারণে বিরোধীদলীয় নেতা থাকাকালীন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার জোরালো দাবির প্রেক্ষিতে এখন স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স, ছবিসহ ভোটার তালিকা ও কিছুক্ষেত্রে ইভিএম পদ্ধতির ব্যবহার চালু হয়েছে বলেও জানান তিনি।

কিছু উপজেলায় স্থানীয় এমপিদের অবস্থানের কারণে ইসি ভোট গ্রহণ স্থগিত করেছে, নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের কারণে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক কোনো ব্যবস্থা নেয়া হবে কিনা- জানতে চাইলে হানিফ বলেন, এমপিরা আচরণবিধি লঙ্ঘন করে স্থানীয় নির্বাচনের সময় এলাকায় উপস্থিত থাকার কারণেই কিন্তু ইসি সেখানে নির্বাচন স্থগিত করেছে। এর মধ্য দিয়ে ইসি আবারও প্রমাণ করেছেন, অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করার জন্য তারা বদ্ধপরিকর। যেসব এমপি আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন, এটার তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই আমরা সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেব।

প্রথম ধাপে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে হানিফ বলেন, আমাদের লক্ষ্য ছিল নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক হোক। এখন অবধি আমাদের কাছে যে তথ্য এসেছে, আমরা যতটুকু জেনেছি, নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হচ্ছে। দু-একটি জায়গায় বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছিল। সে কারণে দু-একটি ভোট কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে। তবে সব মিলিয়ে ভোটের পরিবেশ, পরিস্থিতি অত্যন্ত ভালো। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার তথ্য পাওয়া যায়নি।

বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, নির্বাচনে জয়-পরাজয় আছেই। পরাজিত হলেই অভিযোগ করে নির্বাচন থেকে দূরে থাকা কোনো রাজনৈতিক দলের শুভ বুদ্ধির পরিচয় বহন করে না।

সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দ্রুত আরোগ্য লাভ করে দেশে ফিরে আসবেন এমন আশাবাদ ব্যক্ত করে হানিফ বলেন, আশা করি দু-তিন সপ্তাহের মধ্যে একেবারে পরিপূর্ণ সুস্থ অবস্থায় তিনি দেশে ফিরে আসবেন।

বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার বিএসএমএমইউতে চিকিৎসা নিতে অনীহা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে হানিফ বলেন, উনি যদি নিজেকে সেই পরিমাণ অসুস্থ বোধ না করেন, তাহলে তো চিকিৎসা নিতে অনীহা প্রকাশ করবেনই। আমি যদি সুস্থ থাকি, আমাকে কেউ জোর করে চিকিৎসা দিতে চাইলে আমি কি নেব? আমি হয়তো অনীহাই প্রকাশ করব। উনি হয়ত নিজেকে সুস্থ মনে করছেন বা যে কোনো কারণে মনে করছেন, এই মুহুর্তে তার চিকিৎসার প্রয়োজন নেই। সে কারণে অনীহা প্রকাশ করতে পারেন। একজন দণ্ডপ্রাপ্ত কয়েদির সব কিছুর দায়ভার কারা কর্তৃপক্ষের। কোনো কয়েদি অসুস্থ হলে কারাবিধি অনুযায়ী কারা কর্তৃপক্ষ তার চিকিৎসা সেবা দিয়ে থাকেন। বেগম জিয়াকে সর্বোচ্চ চিকিৎসা দেয়ার জন্য কারা কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন সময়ে পদক্ষেপ নিয়েছেন। তারই একটি অংশ হিসেবে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য সেবার সর্বোচ্চ প্রতিষ্ঠানে তাকে নিয়ে এসেছেন। এরপর তার চিকিৎসার ব্যাপার নিয়ে কারো কোনো অভিযোগ থাকার কথা নয়।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল এমপি, দফতর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ এমপি, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আফজাল হোসেন, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক হারুনুর রশীদ, শিক্ষা ও মানবসম্পদ সম্পাদক শামসুন্নাহার চাঁপা, কার্যনির্বাহী সদস্য এসএম কামাল হোসেন।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে