মৃত্যুর কাছে হার মানলেন হাওর আন্দোলনের নেতা আজাদ মিয়া

সারাদেশ ডেস্ক

হাওর আন্দোলনের নেতা আজাদ মিয়া। ছবি সংগৃহিত
হাওর আন্দোলনের নেতা আজাদ মিয়া। ছবি সংগৃহিত

সিলেটের সুনামগঞ্জে দুর্বৃত্তদের হামলায় আহত হাওর আন্দোলনের এক নেতার মৃত্যু হয়েছে। দুই দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে অবশেষে মৃত্যুর কাছে হার মানেন হাওর আন্দোলনের নেতা আজাদ মিয়া।

রোববার রাতে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তার। নিহত আজাদ মিয়া ‘হাওর বাঁচাও, সুনামগঞ্জ বাঁচাও’ আন্দোলনের সদর উপজেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন।

universel cardiac hospital

জানা গেছে, তিনি গত ১৪ মার্চ রাতে শহরের পিটিআই এলাকায় দুর্বৃত্তদের অতর্কিত হামলার শিকার হন। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাকে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে অবস্থা গুরুতর হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন।

মাথায় গুরুতর জখমপ্রাপ্ত এই নেতা নিউরোসার্জারি বিভাগে দুই দিন চিকিৎসাধীন থাকাবস্থায় গতকাল রোববার রাত সাড়ে ৮টার দিকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।

আজাদ মিয়া সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার মোল্লাপাড়া ইউনিয়নের জলালপুর গ্রামের মৃত লাল মিয়ার ছেলে। হাওরের বাঁধের কাজে অনিয়ম-দুর্নীতির প্রতিবাদ করায় এলাকার প্রভাবশালীরা ভাড়া করা সন্ত্রাসীদের দিয়ে আজাদ মিয়ার ওপর হামলা করিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তাঁর পরিবারের লোকজন।

নিহতের বড় ভাই আজিজ মিয়া হামলাকারীদের শনাক্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

আজাদ মিয়ার ভাই আফরোজ রায়হান বলেন, আমার ভাই ফসলরক্ষা বাঁধের কাজে দুর্নীতির প্রতিবাদ করে আসছেন। এতে স্থানীয় প্রভাবশালীরা তাঁকে (নিহত আজাদ মিয়া) বিভিন্নভাবে হুমকিধমকি দিয়ে আসছিল। আমরা আশঙ্কা করছি, স্থানীয় এই প্রভাবশালীরা আমাদের ভাইকে প্রাণে মারার জন্যে ভাড়াটে সন্ত্রাসী দিয়ে এই হামলা চালিয়েছে। আমরা হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

এলাকায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এ হামলা ঘটে থাকতে পারে বলেও আশংকা করছেন স্থানীয়রা।

এদিকে, দুর্বৃত্তদের হামলায় নিহত আজাদ মিয়ার মৃত্যুর ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ‘হাওর বাঁচাও, সুনামগঞ্জ বাঁচাও’ আন্দোলনের নেতারা।

মোল্লাপাড়া ইউনিয়ন কমিটির সাধারণ সম্পাদক আল-আমিন বলেন, আজাদ মিয়ার ওপর যে হামলা হয়েছে- তা মেনে নেয়া যায় না। আমরা সন্ত্রাসীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

‘হাওর বাঁচাও, সুনামগঞ্জ বাঁচাও’ আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট বজলুল মজিদ চৌধুরী খসরু ও সাধারণ সম্পাদক বিজন সেন রায় এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, আজাদ মিয়া ‘হাওর বাঁচাও সুনামগঞ্জ বাঁচাও’ আন্দোলনের একজন সক্রিয় নেতা। তিনি একজন প্রতিবাদী মানুষ। বিগত বছরে হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের কাজে অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে তাঁর অবস্থান ছিল।

আজাদ মিয়ার ওপর হামলার ঘটনার নিন্দা জানিয়ে তারা অবিলম্বে হামলাকারীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

এ ব্যাপারে সদর থানার ওসি মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ গণমাধ্যমকে বলেন, আজাদ মিয়ার মৃত্যুর খবরটি জানানো হয়েছে। তবে এ ব্যাপারে পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে