প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা বলেছেন, রাঙামাটির বাঘাইছড়িতে নির্বাচনী বহরে গুলির ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত। ঘটনার সঙ্গে জড়িত কারা এবং কেনো ঘটনা ঘটলো সে বিষয়ে এখনো জানা যায়নি। নিরাপত্তায় গাফিলতি ছিল না। দুষ্কৃতকারীরা সুযোগ বুঝে এ হামলা ঘটিয়েছে। পুলিশসহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।
আজ মঙ্গলবার চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। এর আগে সিইসি চট্টগ্রাম সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহতদের দেখতে যান।
সিইসি আরও বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে পাহাড় অশান্ত। নির্বাচনকে ঘিরে সেটি আরও বেড়ে যাবে এমনটাই আশংকা করা হচ্ছিল। সম্প্রতি চট্টগ্রামে নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম পাহাড়ে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের তাগিদ দেন। এর মধ্যে আবারও হামলা ঘটনা ঘটল। পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও সতকর্তা ছিল আমাদের। সেনাবাহিনী, বিজিবি, র্যাব, পুলিশসহ নিরাপত্তাবাহিনী ভোটের দায়িত্বে ছিল। কিন্তু বহরে একাধিক গাড়ি ছিল।
তিনি বলেন, সামনে বিজিবির গাড়ি ছিল। কিন্তু পেছনের গাড়িটি হামলার শিকার হয়েছে। সেখানকার রাস্তাগুলো সংকীর্ণ। বহরে নিরাপত্তা বাহিনীর যে গাড়ি ছিল, সেটি সামনে চলে গিয়েছিল। এতে পেছনের গাড়িটির সঙ্গে দূরত্ব সৃষ্টি হয়। সে সুযোগে দুস্কৃতকারীরা হামলা চালিয়ে দ্রুত চলে যায়।
বহরের পেছনে নিরাপত্তা বাহিনীর গাড়ি ছিল না। সে সুযোগে হামলাকারীরা আক্রমণ করেছে কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে কে এম নুরুল হুদা বলেন, পেছনের গাড়িতে সশস্ত্র পুলিশ ছিল। তারাও হামলার শিকার হয়েছে। পুলিশের নিরাপত্তার ঘাটতি ছিল না।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ নির্বাচন কমিশনের নেয়। তবে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
চট্টগ্রাম সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে বর্তমানে ১০ জন আহত চিকিৎসাধীন রয়েছেন। সোমবার রাতে আহত অবস্থায় ১৮ জনকে তিনটি হেলিকপ্টার যোগে সেখানে আনা হয়। আনার পথে মো. তৈয়ব আলী নামে এক ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা মারা যান।
মঙ্গলবার সকালে গুরুতর আহত সাতজনকে ঢাকায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
কর্তব্যরত চিকিৎসকরা জানান, চট্টগ্রাম সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ১০ জনের মধ্যে কয়েকজনের অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়েছে।
প্রসঙ্গত, সোমবার বাঘাইছডড়ি উপজেলা নির্বাচনে বাঘাইরহাট ও মাচালং ভোট কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন শেষে সন্ধ্যা ৬টার দিকে বাঘাইছড়ি ফিরছিলেন ওই দুটি কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করা কর্মকর্তারা। তাদের বহনকারী দুটি গাড়ি দীঘিনালা বাঘাইছড়ি সড়কের নয় কিলোমিটার এলাকায় পৌঁছানোর পর পাশের পাহাড় থেকে অজ্ঞাত বন্দুকধারীরা হামলা করে। ঘটনায় এখনো পর্যন্ত সাতজনের মৃত্যু হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।