ভারতের মহাকাশ ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা: যুক্তরাষ্ট্রের পর্যবেক্ষণ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

‘অ্যান্টি-স্যাটেলাইট’ ক্ষেপণাস্ত্র
ছবি : সংগৃহিত

যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত প্রতিরক্ষামন্ত্রী প্যাট্রিক শ্যানন সতর্ক করে বলেছেন, কোনো জাতি ভারতের মতো অ্যান্টিস্যাটেলাইট অস্ত্র পরীক্ষা চালালে মহাকাশে কৃত্রিম উপগ্রহের টুকরোগুলো বিক্ষিপ্ত পরিস্থিতি সৃষ্টির ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। গতকাল বুধবার ভারত মহাকাশে নিজস্ব কৃত্রিম উপগ্রহ ধ্বংস করে মহাকাশে নিজেদের শক্তিধর দেশ হিসেবে ঘোষণা দেয়।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গতকাল জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে বলেন, ভারতীয় উপগ্রহ ধ্বংসকারী ক্ষেপণাস্ত্র মহাকাশে ৩০০ কিলোমিটার দূরে স্থাপিত একটি ‘লো অরবিট’ উপগ্রহ ধ্বংস করে মহাকাশ শক্তিধর রাষ্ট্রের মর্যাদা আদায় করেছে। মাত্র তিন মিনিটের মধ্যে কাজটি সম্পন্ন হয়েছে। পৃথিবীর মাত্র তিনটি দেশ—মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও চীন —এই ক্ষমতার অধিকারী।

universel cardiac hospital

আজ যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত প্রতিরক্ষামন্ত্রী প্যাট্রিক শ্যানন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় সেনাবাহিনীর সাউদার্ন কমান্ড পরিদর্শনের সময় বলেন, ভারতের দাবি অনুসারে কৃত্রিম উপগ্রহ ধ্বংসের ঘটনার ফলাফল পর্যবেক্ষণ করছে যুক্তরাষ্ট্র।

শ্যানন বলেন, ‘আমার বার্তা হচ্ছে, সবাই মহাশূন্যে বাস করব, কিন্তু একে বিশৃঙ্খল করে তুলব না। মহাকাশ এমন একটি জায়গা হবে, যাতে সবাই ব্যবসা করব। এখানে চলাচলে মানুষের স্বাধীনতা থাকবে।’

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অ্যান্টিস্যাটেলাইট অস্ত্রে কৃত্রিম উপগ্রহ ধ্বংস করা হলে তা থেকে সৃষ্ট ধ্বংসাবশেষ মহাকাশে থাকা অন্যান্য উপগ্রহের সঙ্গে ধাক্কা খেতে পারে। এতে চেইন বিক্রিয়া শুরু হয়ে যেতে পারে।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ ধরনের ঝুঁকির বিষয়টি অস্বীকার করে হয়েছে। তাঁরা বলছে, ধ্বংসাবশেষ ক্ষয়ে যাবে এবং কয়েক সপ্তাহের মধ্যে পৃথিবীতে পড়বে।

ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষায় সৃষ্টি ২৫০ পিচ ধ্বংসাবশেষের ওপর নজর রাখছে যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্র্যাটেজিক কমান্ড। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে আসার আগ পর্যন্ত সেখান থেকে নোটিফিকেশন পাবে তাঁরা।

এ পরীক্ষার আগে থেকেই ওয়াশিংটন ও দিল্লির মধ্যে আলোচনা চলছিল। ওই ঘটনার পর আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন ঝুঁকিতে পড়বে না বলে জানিয়েছে দুই দেশ।

যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান নাসার প্রধান জিম ব্রাইডেনস্টিন বলেছেন, ‘এ ঘটনার ফলাফল হবে দীর্ঘমেয়াদি। মহাকাশে যদি কোনো কিছু গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়, আমরা আর তা ফিরে পাব না।’

১৯৫৯ সালে প্রথম যুক্তরাষ্ট্র অ্যান্টিস্যাটেলাইট পরীক্ষা চালায়।

শ্যানন বলেন, বৈশ্বিক পর্যায়ে মহাকাশ নির্ভরতা বাড়ছে। মহাকাশে যাওয়ার ক্ষেত্রে তাই নিয়মনীতি তৈরি গুরুত্বপূর্ণ।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে