বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম বলেছেন, সরকারি অনেক প্রকল্প গ্রহণ করি। কিন্তু জামালপুরের শেখ হাসিনা নকশী পল্লী প্রকল্প হবে এই অঞ্চলের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির দিশারী। জামালপুর জেলার আশেপাশের শেরপুর, টাঙ্গাইল ও বগুড়া জেলার মানুষের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির কেন্দ্র বিন্দু হবে এই জামালপুর।
জামালপুরে শেখ হাসিনা নকশি পল্লী প্রকল্পটি স্থাপন করার অনুমোদন দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা ও অভিনন্দন জানাতে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা আজম এসব কথা বলেন। জামালপুর জেলা হস্তশিল্প ব্যবসায়ী সমিতি বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজের অডিটোরিয়ামে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।
মির্জা আজম আরো বলেন, জামালপুর শহরের পাদদেশে ঝিনাই নদীর পাড় ঘেঁষে এই শেখ হাসিনা নকশি পল্লী প্রকল্পের জন্য তিনশ একর জমি অধিগ্রহণ করা হবে। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে পাঁচ হাজার দু’শ কোটি টাকা। প্রথম পর্যায়ে জমি অধিগ্রহণ ও মাটি ভরাট কাজের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একনেকের সভায় ইতোমধ্যে সাতশ ২২ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন।
তিনি বলেন, জামালপুরের নকশি কাঁথা নিয়েই শুধু শেখ হাসিনা নকশি পল্লী নয়। সারা বাংলাদেশের যত ধরনের হস্তশিল্প আছে, তার সবগুলোরই হোল সেল মার্কেট হবে এই শেখ হাসিনা নকশি পল্লীতে। অন্তত তিন হাজার ভবন হবে এখানে। চারজন উদ্যোক্তার জন্য একটি করে কারখানা স্থাপনের জন্য ভবন বরাদ্দ থাকবে। তারা তাদের পণ্য তৈরি করবে সেই জায়গায়। এতে করে ১২ হাজার উদ্যোক্তার কারখানা থাকবে এখানে। তাদের জন্য থাকবে একটি বিশাল শপিংমল। সেই শপিংমলে প্রতিটি পণ্যের জন্য একটি বা দু’টি করে শো-রুম বরাদ্দ দেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, এটি আন্তর্জাতিক মানের হওয়ায় বিদেশি ক্রেতাদের জন্য একটি ফাইভ স্টার মানের হোটেল স্থাপন করা হবে। এর পাশাপাশি এটার ভেতরেই একটি পর্যটন কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। থাকবে থিমপার্ক। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক হস্তশিল্প মেলা আয়োজনের সবরকমের ব্যবস্থা থাকবে। যাতে করে জামালপুরের হস্তশিল্প নকশি কাঁথাসহ বাংলাদেশের সব ধরনের হস্তশিল্পের ব্যবসার প্রসার ঘটে।
তিনি বলেন, এই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশের পরে জামালপুরের পরিচিতি বাড়বে। শুধু জামালপুরের হস্তশিল্পের সাথে জড়িতদের পুনর্বাসনের জন্য নয়। এখানে লাখ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হবে। জাতীয় অর্থনীতিতে ভালো প্রভাব রাখবে এবং জামালপুরের ব্যবসা-বাণিজ্যের সাথে জড়িতরা অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়ে উঠবে। এই প্রকল্প চালু হওয়ার পাঁচ বছরের মধ্যে জামালপুরে কোনো দরিদ্র মানুষ থাকবে না। জামালপুর হবে দেশের অন্যতম একটি জেলা। বিদেশিরা বাংলাদেশের পরে এই জামালপুরকেই চিনবে।
তিনি এই প্রকল্পটি জামালপুরে স্থাপনের সুযোগ করে দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ এবং অভিনন্দন জানান।