উত্তরবঙ্গ থেকেই শুরু মোদি-মমতার ‘বক্তৃতা-যুদ্ধ’

ডেস্ক রিপোর্ট

কয়েক দিন ধরে মমতা প্রকাশ্য বিতর্কের আহ্বান জানাচ্ছেন মোদীকে। তিনি বলেছেন, যে কোনও মঞ্চ বা টিভি চ্যানেলে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সরাসরি বিতর্কে বসতে তিনি রাজি। যদি মমতার সঙ্গে মোদী সরাসরি বসতে না চান, তা হলে অন্য কোনও বিরোধী নেতার সঙ্গে এই বিতর্কের ব্যবস্থা করা যেতে পারে বলেও তৃণমূল নেত্রীর প্রস্তাব। তৃণমূলের এক নেতার কথায়, দলনেত্রীর এই প্রস্তাব মোদী মানবেন না,

রাজ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যে দিন প্রথম দফা নির্বাচনী প্রচারে আসবেন, সে দিনই তাঁর নির্বাচনী প্রচার শুরু করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মোদী বুধবার প্রথম সভা করবেন শিলিগুড়িতে। মমতাও ওই দিনই রাজ্যেতাঁর প্রচার শুরু করবেন। সভার জন্য বেছে নিয়েছেন কোচবিহারের দিনহাটা।

তৃণমূল সূত্রে জানা যায়, মোদীর সভা শেষ হলেই যাতে মমতার সভা শুরু হয়, দল সচেতন ভাবে সেই মতো প্রস্তুতি নিচ্ছে। কারণ, নেত্রী মনে করেন প্রধানমন্ত্রী যা বলবেন, উত্তরবঙ্গের মাটিতে দাঁড়িয়েই তার ‘যোগ্য’ জবাব দেওয়া উচিত। যার অর্থ, দুই শীর্ষ নেতার ‘বক্তৃতা-যুদ্ধ’  শুরু হবে উত্তরবঙ্গ থেকে।রাজনৈতিক মহলের মতে, প্রধানমন্ত্রীর সভার ‘একতরফা’ প্রচার আটকাতেই মুখ্যমন্ত্রীর এই সমান্তরাল ‘কৌশল’।

universel cardiac hospital

ভারতের লোকসভার প্রথম পর্বের ভোট ১১ এপ্রিল। সে দিন কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ার— দুই কেন্দ্রে ভোট নেওয়া হবে। আগে পরিকল্পনা ছিল মমতা তাঁর প্রচার-সফর শুরু করবেন ৪ এপ্রিল। প্রথম সভা করবেন মাথাভাঙায়। পর দিন চলে যাবেন লাগোয়া রাজ্য অসমের ধুবুড়িতে। আবার ফিরে আসবেন উত্তরবঙ্গে। কিন্তু মোদীর সফর-সূচি চূড়ান্ত হওয়ার পরেই তৃণমূল নেত্রী তাঁর সফরও একদিন এগিয়ে নেন।

মোদীর সভা অবশ্য কোচবিহার বা আলিপুরদুয়ার কোনও কেন্দ্রের মধ্যেই হচ্ছে না। তিনি শিলিগুড়িতে সভা করে চলে আসবেন কলকাতার ব্রিগেডে। এখনও পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর যে সফর-সূচি জানা যাচ্ছে, তাতে শিলিগুড়িতে দুপুর ১টায় সভার পরে বিকেল তিনটেয় ব্রিগেডে সভা হওয়ার কথা মোদীর।

অন্যদিকে, মমতা কলকাতা থেকে বাগডোগরা হয়ে দিনহাটা পৌঁছে বিকেল চারটে নাগাদ সভা করতে চান। তৃণমূল সূত্রে খবর, শিলিগুড়ি এবং ব্রিগেডে মোদী যা বলবেন, প্রকাশ্য সভামঞ্চে তৎক্ষণাৎ তার ‘জবাব’ দেবেন মমতা। তাই মুখ্যমন্ত্রীর সভার জন্য এই ভাবে সময় স্থির করা হচ্ছে।

গত কয়েক দিন ধরে মমতা প্রকাশ্য বিতর্কের আহ্বান জানাচ্ছেন মোদীকে। তিনি বলেছেন, যে কোনও মঞ্চ বা টিভি চ্যানেলে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সরাসরি বিতর্কে বসতে তিনি রাজি। যদি মমতার সঙ্গে মোদী সরাসরি বসতে না চান, তা হলে অন্য কোনও বিরোধী নেতার সঙ্গে এই বিতর্কের ব্যবস্থা করা যেতে পারে বলেও তৃণমূল নেত্রীর প্রস্তাব। তৃণমূলের এক নেতার কথায়, দলনেত্রীর এই প্রস্তাব মোদী মানবেন না, এটাই স্বাভাবিক। তাই রাজ্যে নির্বাচনী প্রচারের সূচনাতেই মোদীর বক্তৃতার তাৎক্ষণিক জবাব দেওয়ার রাজনৈতিক কৌশল নিচ্ছেন মমতা।

এর আগে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী মালদহে প্রচারে এসে মোদী ও মমতাকে একই বন্ধনীতে রেখে আক্রমণ করেছেন। তিনি বলেছেন, দেশের জন্য মোদী এবং রাজ্যের জন্য মমতা— কেউই কিছু করেননি। তাঁরা শুধু বড় বড় ভাষণ দেন। মমতা অবশ্য এখনও পর্যন্ত রাহুলের বক্তব্যের কোনও জবাব দেননি। বরং বলেছেন ‘‘ও ছোট ছেলে, কী আর বলব!’’

পর্যবেক্ষকদের ধারণা, জাতীয় স্তরে বিজেপি-বিরোধী বৃহত্তর স্বার্থ মাথায় রেখেই তৃণমূল নেত্রী বিষয়টি আপাতত এড়িয়ে গিয়েছেন। তবে দলীয় সূত্রে ইঙ্গিত মিলেছে, মালদহেই তাঁর আসন্ন প্রচারসভায় মমতা রাহুলের কথারও ‘জবাব’ দিতে পারেন।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে