বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু প্রধানমন্ত্রীর প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীকে স্পষ্ট করে বলতে চাই, এখনও সময় আছে, হুঁশিয়ার হোন। এই পার্লামেন্ট অবৈধ। এই সরকার অবৈধ।
আজ বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত এক মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন। বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেলসহ দলীয় নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে চেতনা বাংলাদেশ নামের একটি সংগঠন এ মানববন্ধনের আয়োজন করে।
নির্বাচনের মধ্য দিয়ে মানুষের অধিকারকে হরণ করা হয়েছে
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও নির্বাচন কমিশন গত ৩০ ডিসেম্বর ভোটের নামে যে কাণ্ড করেছে, তাতে দেশ ও বিদেশে মুক্তিযুদ্ধকে ছোট করা হয়েছে। গণতন্ত্রের পক্ষে আমাদের সুদীর্ঘকালের সংগ্রামকে ছোট করা হয়েছে। শেখ মুজিবুর রহমান, শহীদ জিয়াউর রহমান, সোহরাওয়ার্দী, শেরে বাংলাকে ছোট করা হয়েছে। এ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে মানুষের অধিকারকে হরণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, এ জন্য আমি বলব, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সময় থাকতে বিবেচনা করুন। বেগম জিয়াকে মুক্তি দিন। একটি সঠিক স্বাভাবিক গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ক্ষেত্র রচনা করুন, তা না হলে যে পরিস্থিতি সামনে অপেক্ষা করছে, সেটা আপনার জন্যে দেশ, রাজনীতি কারো জন্যই ভালো কিছু বয়ে আনবে না।
সরকারের সমালোচনা করে দুদু বলেন, মিথ্যা মামলায় দেশের হাজার হাজার বিএনপি নেতাকর্মীকে বিনা বিচারে আটকে রাখা হয়েছে। তারেক রহমানকে অন্যায়ভাবে মিথ্যা সাজা ঘোষণা করে নির্বাসিত জীবনে বাধ্য করা হচ্ছে।
সাংবাদিকরা দেশের সঠিক চিত্র তুলে ধরতে পারেন না
বিএনপির এই নেতা বলেন, দেশে যারাই যখন স্বৈরতন্ত্রের বিরোধিতা করেছে, তখনই ফ্যাসিবাদীরা তাদের ওপর আক্রমণ করেছে। দেশে গণতন্ত্র নেই। মৌলিক অধিকার নেই। দেশের কৃষক-শ্রমিক, মেহনতি মানুষ, ছাত্র-যুবক যারাই তাদের অধিকারের কথা বলছে, তাদের ওপর নির্যাতন করা হচ্ছে। ইচ্ছেমতো সভা করা যায় না, সংগঠন করা যায় না। এখানে সাংবাদিকরা দেশের সঠিক চিত্র তুলে ধরতে পারেন না। বাংলাদেশে এক ধরনের ভীতি গ্রাস করেছে। এক ধরনের স্বৈরতন্ত্র বাংলাদেশকে এগিয়ে যেতে পথরোধ করছে।
খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি জানিয়ে দুদু বলেন, বেগম জিয়া দেশের সেই নেত্রী, যিনি মানুষের স্বপক্ষে কাজ করেছেন, কৃষকের স্বপক্ষে কাজ করেছেন, নারীদের স্বপক্ষে কাজ করেছেন, শিক্ষা-শিল্প-সংস্কৃতির পক্ষে কাজ করেছেন, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কাজ করেছেন। সেই নেত্রীকে একেবারে মিথ্যা একটি মামলায় তথাকথিত সাজার নামে আটকে রাখা হয়েছে। তাকে আটকে রাখার মানে গণতন্ত্রকে আটকে রাখা। তাকে আটকে রাখার মানে মৌলিক অধিকার হরণ করা।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি শামীমা রহিমের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে অন্যদের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সুকোমল বড়ুয়া, কৃষকদল নেতা মিয়া মোহাম্মদ আনোয়ার, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আখতারুজ্জামান বাচ্চু, দেশ বাঁচাও, মানুষ বাঁচাও সভাপতি কেএম রকিবুল ইসলাম রিপন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।