অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার এমপিও স্থগিতে পদক্ষেপ

ডেস্ক রিপোর্ট

অধ্যক্ষ সিরাজ উদ-দৌলা
অধ্যক্ষ এস এম সিরাজ উদ-দৌলা। ফাইল ছবি

শ্লীলতাহানীর মামলা তুলে নিতে না চাওয়ায় ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাযিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফির গায়ে আগুন দেয়ার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যুর ঘটনায় ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এস এম সিরাজ উদ দৌলার এমপিও স্থগিতের পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। বৃহস্পতিবার ওই মাদ্রাসার অন্য এক শিক্ষকের এমপিও স্থগিতের জন্যও মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরে চিঠি পাঠায় মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর।

বিষয়টি নিশ্চিত করে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সফি উদ্দিন আহমদ বলেন, চিঠিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাযিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এ এস এম সিরাজ উদদৌলা (ইনডেক্স-৩০৪১১১) ও ইংরেজির প্রভাষক আফসার উদ্দিনের (ইনডেক্স-২০৩০৫০৮) এমপিও স্থগিত চাওয়া হয়েছে।

universel cardiac hospital

চিঠিতে বলা হয়, মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে শ্লীলতাহানী (সোনাগাজী থানায় দায়ের করা মামলা নং-২৪, তারিখ ২৭/০৩/২০১৯) এবং হত্যার (মামলা নং-১০, তারিখ ০৮/০৪/২০১৯) ঘটনায় মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ও ইংরেজি বিষয়ের প্রভাষক গ্রেফতার হয়ে কারাগারে থাকায় তাদের এমপিও স্থগিত হওয়া প্রয়োজন।

নিয়মানুযায়ী, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর এখন তাদের এমপিও স্থগিত করে আদেশ জারি করবে।

গত ২৭ মার্চ নুসরাত জাহান রাফিকে নিজ কক্ষে নিয়ে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা শ্লীলতাহানি করেন অভিযোগ করে তার বিরুদ্ধে মামলা করেন নুসরাতের মা শিরিন আক্তার। মামলায় ওই দিনই অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

এ ঘটনার পর গত শনিবার আলিম পর্যায়ের আরবি প্রথমপত্র পরীক্ষা দিতে নুসরাত সোনাগাজীর ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে গেলে তাকে পাশের ভবনের ছাদে ডেকে নিয়ে শরীরের কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় বোরকা পরিহিত ৪/৫ জন। এতে নুসরাতের শরীরের ৮০ শতাংশ পুড়ে যায়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখান থেকে ফেনী সদর হাসপাতাল হয়ে তাকে নেয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে।

এই ঘটনায় দেশজুড়ে আলোচনার মধ্যে অধ্যক্ষ সিরাজকে সাময়িক বরখাস্ত করে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটিও গঠন করা হয়।

রোববার নুসরাতের চিকিৎসায় ৯ সদস্যের বোর্ড গঠন করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরীক্ষা কেন্দ্রে ছাত্রীর ওপর এমন নির্মমতায় উদ্বেগ প্রকাশ করে সার্বিক চিকিৎসার দায়িত্ব নেন। পাশাপাশি তাকে সিঙ্গাপুরে নিযে চিকিৎসা দেয়ার নির্দেশ দেন। তবে নুসরাতের শারীরিক অবস্থা বিমান ভ্রমণের উপযোগী না থাকায় তাকে সিঙ্গাপুরে নেয়া সম্ভব হয়নি। এরই মধ্যে বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে