আড়াই বছরেই হবে শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম

ডেস্ক রিপোর্ট

ক্রিকেটের সাথে জড়িত কমবেশি সবারই জানা আছে রাজধানী ঢাকার পূর্বাচলে হবে সর্বাধুনিক আন্তর্জাতিক মানের ক্রিকেট স্টেডিয়াম। যার নামকরণ করা হয়েছে শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ তথা সরকার এ ব্যাপারে জায়গাও বরাদ্দ দিয়েছে।

আগামী দুবছরের মধ্যে পূর্বাচলে অন্তত ৫০-৬০ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতার আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম নির্মাণকাজ শেষ করার কথা বলেছেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। তবে সে নির্মাণকাজের অগ্রগতি থাকলেও আজ দুপুর পর্যন্ত কাজের অগ্রগতির খবর  আসেনি মিডিয়ায়। আর আসবেই বা কী করে? যারা এ স্টেডিয়াম নির্মাণকাজ তদারক, পরিচালনা ও তত্ত্বাবধানে থাকবেন সেই প্রস্তাবিত শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের ‘প্রজেক্ট ইমপ্লিমেন্টেসন কমিটি’র (প্রজেক্ট বাস্তবায়ন কমিটি) কাজই তো এখন পর্যন্ত শুরু হয়নি। 

universel cardiac hospital

আজ দুপুরে বিসিবি কার্যালয়ে প্রজেক্ট ইমপ্লিমেন্টেশন কমিটির প্রথম সভা হয়। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের অন্যতম শীর্ষ কর্তা, নামি ক্রিকেট সংগঠক বিসিবি পরিচালক মাহবুব আনামকে আহ্বায়ক করে বোর্ডের বিভিন্ন স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যানদের সমন্বয়ে আপাতত পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠিত হয়েছে।

মাহবুবুল আনাম আহ্বায়ক এবং বাকি চার সদস্য হলেন চার বোর্ড পরিচালক মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস, ফ্যাসিলিটিস কমিটির চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন ভুঁইয়া, ডিসিপ্লিনারি কমিটির চেয়ারম্যান শেখ সোহেল এবং পারচেজ কমিটির চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আনোয়ার হোসেন।

এর বাইরে আরো তিনজন কমিটির সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হবেন। সেখানে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় তথা বুয়েটের একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার, একজন চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট এবং একজন আইনবিদকে রাখা হবে।

দুপুরে প্রজেক্ট বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক মাহবুবুল আনাম তাদের প্রথম সভা শেষে বলেন, আজ আমাদের প্রজেক্ট ইমপ্লিমেন্টেশন কমিটির প্রথম সভা ছিল। কিছুটা পরিচিতি সভার মতো। কীভাবে আমরা এই পরিকল্পনাটি করব তার একটা রূপরেখা তৈরি করা হয়েছে। এই কমিটির বাইরে থেকে বেশকিছু এক্সপারটিজ আমরা অন্তর্ভুক্ত করব। বুয়েট থেকে প্রতিনিধি নেব। যারা অডিট করে তাদের থেকেও প্রতিনিধি নিয়ে সামনের দিকে অগ্রসর হবো।

তিনি বলেন, আপনারা জানেন যে পূর্বাচলের এ জমিটি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পক্ষে রেজিস্ট্রি হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এই জমিটি বরাদ্দ করেছেন, রাজউকের মাধ্যমে একটা প্রতীকী মূল্যে। এ মাসের মধ্যেই আমরা মাঠের পজেশনে কাজ করব। পজেশন পেলেই কাজ গতিসম্পন্ন হবে। মাঠটি প্রটেক্ট করা, একটা সাইট অফিস করা, অন্যান্য যে পরিকল্পনা রয়েছে সেগুলো সামনের দিকে আগাবো।

এ সময় পূর্বাচলের এ স্টেডিয়ামটিকে বিশ্বের অন্যতম সুন্দর করে গড়ে তোলার ইচ্ছার কথা জানিয়ে মাহবুব আনাম বলেন- আমাদের ইচ্ছা এই স্টেডিয়ামটা এমন একটা স্টেডিয়াম হবে যেটা শুধু এই অঞ্চল কেন, পুরো বিশ্বের মধ্যে সুন্দর স্টেডিয়াম হিসেবে পরিগণিত হবে। যেহেতু এটা গ্রিন ফিল্ড স্টেডিয়াম সেহেতু এখানে আমাদের অনেক কিছু করার সুযোগ রয়েছে। আপনারা জানেন যে, মিরপুর স্টেডিয়ামকে আমরা কনভার্ট করেছি। সেজন্য আমরা আন্তর্জাতিক মানের, যারা স্টেডিয়াম করেছে, তাদের কনসালটিং ফার্মকে নিযুক্ত দেয়ার ব্যাপারে একটা আন্তর্জাতিক প্রক্রিয়া করা হবে এবং স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে টেন্ডার পদ্ধতিতে করা হবে।

দৃশ্যমান কাজ কবে থেকে শুরু হবে? এ প্রশ্নের জবাবে মাহবুব আনাম বলেন, স্টেডিয়ামের ফিজিক্যাল কাজ আগামী শীত মৌসুমের আগে করা হবে না। বিসিবি অলরেডি একটা কনসেপ্ট ড্রয়িং তৈরি করেছে। ওই কনসেপ্ট ড্রয়িংটাকে এনলার্জ করা এবং এর মধ্যে আমাদের অন্য যেই জিনিসগুলো থাকবে, ড্রেসিংরুম বলেন যাই বলেন, সেগুলোকে আরও ডিটেইল করা। বিসিবি বোর্ড ইতোমধ্যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

তিনি বলেন, এখানে একটা স্টেডিয়াম থাকবে। একটা একাডেমি গ্রাউন্ডের মতো থাকবে। তার মানে আমরা দুটো মাঠ পাব। ওই জিনিসগুলো অলরেডি বিসিবি ডিসাইড করেছে। ৩৭ একর জমি আছে, ওখানে কী কী করা সম্ভব সেটা আমরা ভেবে রেখেছি। তো পূর্ণাঙ্গভাবে আমাদের যেই আর্কিটেকচারাল ডিজাইন বলেন, সেভাবেই আমাদের আগাতে হবে।

পূর্বাচলে স্টেডিয়াম হলে বিসিবির অফিস এবং অফিশিয়াল কার্যক্রমও স্থানান্তরিত হবে? উত্তরে মাহবুব আনাম জানান, ওটা পরবর্তীতে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড সিদ্ধান্ত নেবে। এটা খুব শীঘ্রই বলা কঠিন। আর এটা এমন একটা প্রতিষ্ঠান যেটা এখানে আছে। আমি মনে করি না এই মাঠের প্রয়োজনীয়তা ফুরোবে। এটা (শেরে বাংলা স্টেডিয়াম) একটা ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট গ্রাউন্ড। এটাকে সেভাবেই মেইনটেন করা হবে।

পূর্বাচল স্টেডিয়ামের নির্মাণ কাজ শেষ করতে কত বছর লাগবে? তিনি জানান, আমরা আশা করছি কাজ শুরুর দুই বছরের মধ্যেই শেষ করব। তবে আড়াই বছরের মধ্যেই আশা করছি হয়ে যাবে।

মাহবুব আনামের মতোই একই কথা জানান সভার অন্যতম সদস্য মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস। তার মতে ৩০ মাসেই আলোর মুখ দেখবে পূর্বাচলের এ শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম।

‘আমরা আশা করছি ২৮ থেকে ৩০ মাসের মধ্যেই পূর্বাচলে শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামটি উদ্বোধন করে ফেলা যাবে। দেশের তো বটেই, বিশ্বের ইতিহাসেই অন্যতম সুন্দর করে গড়া হবে নতুন এ স্টেডিয়ামটি।’

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে