মতিঝিলে রাজউক ভবনের সামনে মানববন্ধনে দাঁড়িয়ে সিপিবির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, “এই আন্দোলনে শুধু সিপিবির না, এটা সব দলের আন্দোলন। নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলন শেষ হবে না।
মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যার প্রতিবাদে ঢাকায় গণভবন থেকে বঙ্গভবন পর্যন্ত মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে নারী নির্যাতন প্রতিরোধের ডাক দিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি- সিপিবি।
আজ শনিবার সকালে ঢাকার আসাদ গেইট থেকে মতিঝিল পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে মানবন্ধনে দাঁড়ান দলটির নেতা-কর্মীরা। তাদের ডাকে সাড়া দিয়ে নানা সংগঠনও এই কর্মর্সূচিতে যোগ দেয়।
মতিঝিলে রাজউক ভবনের সামনে মানববন্ধনে দাঁড়িয়ে সিপিবির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, “এই আন্দোলনে শুধু সিপিবির না, এটা সব দলের আন্দোলন। নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলন শেষ হবে না।
“আগামী ২০-২৭ তারিখ পর্যন্ত নারী নির্যাতন প্রতিরোধ সপ্তাহ পালন করা হবে।”
প্রতিরোধ সপ্তাহের কর্মসূচির বিস্তারিত পরে জানানো হবে বলে জানান তিনি।
সেলিম বলেন, “যে স্বপ্ন নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ করা হয়েছিল, তা বাস্তবায়ন করতে দেওয়া হয়নি। তখন সবাই পাকিস্তান আমলের জুলুম অত্যাচার নিঃশেষ হয়ে যাবে বলে আশা করছিল। আজকে দেশকে নতুন অন্ধকারের দিকে নিক্ষেপ করা হয়েছে।”
ঢাকার আসাদ গেইটে মানববন্ধনে দাঁড়িয়ে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “আমরা নুসরাত হত্যার ন্যায়বিচার চাই। এই ঘটনার সঙ্গে যারা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত, সবাইকে আইনের আওতায় নিয়ে কঠোর শাস্তি দিতে হবে।
“এই ঘটনার কঠোর শাস্তি দেওয়া সরকারের জন্য একটি অগ্নি পরীক্ষা। নূসরাত হত্যার কঠোর শাস্তি দিয়ে সরকারকে প্রমাণ করতে হবে যে দেশে আইনের শাসন আছে।”
ফেনীর সোনাগাজীর নুসরাত তার মাদ্রাসার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ এনেছিলেন। তাকে সেই মামলা প্রত্যাহারের চাপ দেওয়া হলেও তিনি রাজি না হওয়ায় তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। পাঁচ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে মারা যান এই তরুণী।
নুসরাতের মৃত্যুতে দেশজুড়ে ক্ষোভ-বিক্ষোভের মধ্যে মানববন্ধনের এই কর্মসূচি ডাকে সিপিবি। ঢাকার পাশাপাশি সারাদেশে একই ধরনের কর্মসূচি পালিত হয় বলে দলটির নেতারা জানান।
ধানমণ্ডি ২৭ নম্বর সড়কের মানববন্ধনে কলামনিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, “এই ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত করতে হবে। নুসরাত হত্যার দ্রুত বিচারসহ পূর্বে এ ধরনের সবগুলো ঘটনার বিচার করতে হবে।”
সেখানে দাঁড়িয়ে মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল বলেন, “আমাদের সংস্কৃতি হল ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরে রাস্তায় নামি, তারপর এক সময় সব ঘটনাই ধামাচাপা পড়ে যায়, এ থেকে আমরা পরিত্রাণ চাই।
“নুসরাতের মতো যাতে আর কোনো ঘটনা না ঘটে, এর জন্য আমরা এই ঘটনাসহ সবগুলো নারী সহিংসতায় জড়িতদের কঠোর শাস্তি চাই।”
আসাদ গেইটের মানববন্ধনে হিউম্যান রাইটস ফোরাম বাংলাদেশ, টিআইবি, নারী পক্ষ, কেন্দ্রীয় খেলাঘর, কৃষিবিদ ইউনিয়নসহ ১২-১২ টি সংগঠন যোগ দেয়।
মানববন্ধনে এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক সামসুল হুদা বলেন, “নূসরাতের বিচার করতে সরকার যে ঘোষণা দিয়েছে, তা যেন কথার কথা না হয়। আমরা আইনের শাসন দেখতে চাই।”