‘এটি কোনো ধর্মবর্ণের উৎসব নয়। এটি বাঙালির প্রাণের উৎসব। ইউনোস্কো পহেলা বৈশাখের মঙ্গল শোভাযাত্রাকে অন্যতম উৎসবের স্বীকৃতি দিয়েছে। বাঙালির সার্ববজনীন এই উৎসবে সকলেই আনন্দে আত্মহারা।’
বিপুল উৎসাহ উদ্দিপনা আর আনন্দঘন পরিবেশে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বাঙালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। নতুন বছরকে বরণ উপলক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসনের আয়োজনে মঙ্গল শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ রোববার সকাল ৮টায় শহরের লোকনাথ টেংকের পাড় ময়দান থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রাটি বের হয়। পরে শহরের প্রধান- প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে শহরের ফারুকী পার্কে এসে শেষ হয়। শোভাযাত্রা শেষে প্রধান অতিথির বক্তব্যে হায়াত-উদ-দৌলা খাঁন বলেন, এটি কোনো ধর্মবর্ণের উৎসব নয়। এটি বাঙালির প্রাণের উৎসব। ইউনোস্কো পহেলা বৈশাখের মঙ্গল শোভাযাত্রাকে অন্যতম উৎসবের স্বীকৃতি দিয়েছে। বাঙালির সার্ববজনীন এই উৎসবে সকলেই আনন্দে আত্মহারা। নতুন বছরে দেশের সকল মানুষ যেনো ভালো থাকেন এমনটাই প্রত্যাশা করেন।
ফারুকী পার্ক মেলার মাঠে অনুষ্ঠিত হয় বর্ষবরণ অনুষ্ঠান শুরুতে তিতাস সাহিত্য সংস্কৃতি পরিষদের পরিচালক বাছির দুলালের নেতৃত্বে বৃন্দ আবৃত্তি পরিবেশন করেন তিতাস আবৃত্তি সংগঠনের শিল্পীরা। পরে জেলা শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে সমবেত শিল্পীদের কন্ঠে পরিবেশিত হয় এসো হে বৈশাখ সুরে-সুরে বর্ষবরণ সংঙ্গীত। সঙ্গীত পরিবেশনায় নেতৃত্বদেন শিল্পকলা একাডেমীর সংঙ্গীত প্রশিক্ষক সাংবাদিক পীযুষ কান্তি আচার্য।
এদিকে পহেলা বৈশাখকে কেন্দ্র করে শহরের ফারুকী পার্কে বসেছে লৌকজ মেলা। মেলায় নাগরদৌলা, পুতুল নাচ, খাবার এবং মাটির তৈরী তৈজস পত্রের দোকান নিয়ে বসেছে দোকানীরা। এই শিশু কিশোর সহ সব বয়সী সাধারন মানুষ আনন্দে মেতে উঠেন।
বর্ষবরণ অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে র্যাব পুলিশের পক্ষ থেকে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন।
এদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরেও বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্যে দিয়ে বাংলা নববর্ষ উদযাপিত হয়েছে। বৈশাখী উৎসবে অংশ নিতে উপজেলা পরিষদ চত্বরে ভীড় করেছে সব বয়সের মানুষ। বাংলা নববর্ষকে বরণ করতে দিন ব্যাপী বৈশাখী মেলা, সাংস্কৃতিক সন্ধ্যাসহ নানা আয়োজন করেছে। এ উপলক্ষে রোববার সকালে মঙ্গল শোভাযাত্রা হয়েছে। শোভাযাত্রাটি উপজেলার বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে উপজেলা পরিষদ চত্বরে এসে শেষ হয়।
শোভাযাত্রায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার( ইউএনও) মেহের নিগার, উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারী, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সদস্যদের পাশাপাশি সর্বস্তরের মানুষ অংশ নেন।
এছাড়া ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর, আখাউড়া, কসবা সহ বিভিন্ন উপজেলায় শান্তিপূর্ণ ভাবে বর্ষবরণ পালনের খবর পাওয়া গেছে।