সুবীর নন্দীর শারীরিক অবস্থা জটিল, সিঙ্গাপুরে নেওয়া হচ্ছে না

বিনোদন ডেস্ক

সুবীর নন্দী
সুবীর নন্দী। ফাইল ছবি

সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, একুশে পদকপ্রাপ্ত সংগীতশিল্পী সুবীর নন্দীর শারীরিক অবস্থা বিমানে যাওয়ার উপযোগী নয়। তাই আপাতত সেখানে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।

তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে উন্নত চিকিৎসার স্বার্থে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছেন জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের জাতীয় সমন্বয়ক সামন্ত লাল সেন। পরিবারের পক্ষ থেকে তিনি সুবীর নন্দীর সর্বশেষ শারীরিক অবস্থাও গণমাধ্যকে জানান।

সুবীর নন্দী এখন সিএমএইচে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. তৌফিক এলাহির তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন। রোববার সকালে সিএমএইচে সুবীর নন্দীকে দেখতে আসেন সামন্ত লাল সেন ও বরেণ্য গায়ক তপন চৌধুরী।

হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন সামন্ত লাল সেন। তিনি বলেন, ‘সিঙ্গাপুর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ গতকাল রাতেই আমাদের জানিয়েছে, সুবীরকে আপাতত দেশের বাইরে নেওয়া সম্ভব না। ওর অবস্থা একটু জটিলই বলা যায়। মস্তিষ্কের অবস্থাটা এখনও বোঝা যাচ্ছে না, এটার জন্য আরও দুদিন অপেক্ষা করতে হবে।

মস্তিষ্কের এই অবস্থা নিয়ে ফ্লাই করা (আকাশপথে যাত্রা) ডিফিকাল্ট। সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের সঙ্গে আমরা সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছি। তবে সার্বিক অবস্থা খুবই জটিল।’

সপ্তাহখানেক ধরে অসুস্থ সুবীর নন্দী ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন। বরেণ্য এই শিল্পীর সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা প্রধানমন্ত্রীকে জানাতে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় গণভবনে যায় চার সদস্যের প্রতিনিধিদল। ওই দলে ছিলেন সামন্ত লাল সেন, কুমার বিশ্বজিৎ, রফিকুল আলম ও তপন চৌধুরী।

প্রধানমন্ত্রী সুবীর নন্দীর শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে খোঁজখবর নেন এবং উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণের ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেন।

সুবীর নন্দীর জামাই রাজেশ সিকদার জানান, ১২ এপ্রিল পরিবারের সবাই মিলে মৌলভীবাজারে আত্মীয়ের বাড়িতে যান। সেখানে একটি অনুষ্ঠান ছিল। ঢাকায় ফেরার ট্রেনে ওঠার জন্য বিকেলে মৌলভীবাজার থেকে শ্রীমঙ্গলে আসেন তাঁরা। ট্রেনেই অসুস্থ হয়ে পড়েন সুবীর নন্দী। ভাগ্যক্রমে সেখানে একজন চিকিৎসক থাকায় তাঁর পরামর্শে সুবীর নন্দীকে নিয়ে তাঁরা ঢাকার বিমানবন্দর স্টেশনে নেমে যান। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় রাত ১১টার দিকে তাঁকে দ্রুত সিএমএইচে নিয়ে যাওয়া হয়।

দীর্ঘদিন ধরে কিডনি ও হার্টের অসুখে ভুগছিলেন সুবীর নন্দী। দীর্ঘ ৪০ বছরের সংগীতজীবনে আড়াই হাজারের বেশি গানে কণ্ঠ দিয়েছেন তিনি। অসুস্থ হওয়ার আগে পর্যন্ত রেডিও, টেলিভিশন, চলচ্চিত্রে নিয়মিত গান করেছেন। ১৯৮১ সালে তাঁর প্রথম একক অ্যালবাম ‘সুবীর নন্দীর গান’ প্রকাশিত হয়। ১৯৭৬ সালে ‘সূর্যগ্রহণ’ চলচ্চিত্রে তিনি প্রথম গান করেন। সুবীর নন্দী জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন চারবার। সংগীতে অবদানের জন্য এ বছর একুশে পদক পান তিনি।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে