রানা প্লাজায় আহত শ্রমিকরা ১১ দফা দাবিতে অনশনে

ডেস্ক রিপোর্ট

রানা প্লাজায় আহত শ্রমিকরা ১১ দফা দাবিতে অনশনে
রানা প্লাজায় আহত শ্রমিকরা অনশনে। ছবি : সংগৃহিত

সাভারে বহুতল ভবন ধসে পড়া রানা প্লাজায় আহত শ্রমিক কর্মচারীরা ক্ষতিগ্রস্ত প্রত্যেককে ৪৮ লাখ টাকা প্রদান, পুনর্বাসন, আজীবন চিকিৎসা সেবা, দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করাসহ ১১ দফা দাবিতে অনশন শুরু করেছে ।

রানা প্লাজা সার্ভাইবারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ এর ব্যানারে সোমবার দুপুর থেকে এ কর্মসূচি শুরু হয়। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ভবন ধসের স্থানে আহত, নিহত ও নিখোঁজদের স্মরণে তাদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনায় মোমবাতি প্রজ্জলন এবং দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

ব্যানারে উল্লেখিত ১১ দফা দাবিগুলো হচ্ছে- রানা প্লাজার সব ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে ৪৮ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ, পুনর্বাসন, আজীবন চিকিৎসা সেবা প্রদান, জাতীয় রানা প্লাজা শোক দিবস ঘোষণা, আহত, নিহত ও নিখোঁজদের বাচ্চাদের লেখাপড়ার দায়িত্ব গ্রহণ, আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদান, তাদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা, উদ্ধারকর্মীদের চিকিৎসা প্রদান, রানা প্লাজার স্থানে স্থায়ী স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ, আহত নিহত ও নিখোঁজদের পরিবারকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা প্রদান এবং রানা প্লাজায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের চাকরি দিতে হবে।

রানা প্লাজা সার্ভাইবারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-এর সভাপতি অনশনরত মাহমুদুল হাসান হৃদয় গণমাধ্যমকে বলেন, ১১ দফা দাবি আদায়ের জন্য আমরা অনশন শুরু করেছি। যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের দাবি মেনে নেয়া না হবে ততক্ষণ আমরা এখান থেকে সরব না, অনশন চালিয়ে যাব।

এই রানা প্লাজায় আমি জীবনের সবকিছু হারিয়েছি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভবন ধসের ঘটনায় আমি পঙ্গু হওয়ায় হাঁটতে পারছি না। অনেক ওষুধ খেতে খেতে এখন ওষুধ দেখলে ভয় লাগে। প্রশ্রাবে ইনফেকশনসহ বুকে এবং পিঠে প্রচণ্ড ব্যথা এবং জ্বালাপোড়া করে। অর্থের অভাবে দুই বেলা দুই মুঠো পেট ভরে খেতে পারি না।


মাহমুদুল হাসান হৃদয় বলেন, দাবি আদায়ে রানা প্লাজার সামনে এলে আমাদের দাঁড়াতে দেয়া হয় না। গতকালও রানার লোকজন এসে আমাদের হুমকি দিয়ে গেছে। কালু নামে একজন নিজেকে রানার লোক পরিচয় দিয়ে আমাদের উঠে যেতে বলে, নইলে মেরে গুম করে ফেলার হুমকি দিয়েছে।

ক্ষতিপূরণের বিষয়ে তিনি বলেন, সরকার আমাদের কোনো অনুদান দেয়নি। বিভিন্ন সংস্থা সহায়তার নামে আমাদেরকে নিয়ে ব্যবসা করেছে। নামমাত্র যা অনুদান পেয়েছিলাম যা চিকিৎসার পেছনে খরচ হয়ে গেছে।

আহত এই শ্রমিক বলেন, রানা প্লাজায় ক্ষতিগ্রস্ত অনেক শ্রমিক ও তার স্বজনেরা ক্ষতিপূরণ থেকে বঞ্চিত হয়েছে। এছাড়া যাদের কারণে এত বড় দুর্ঘটনা ঘটলো সেই ভবন মালিকসহ জড়িতদের বিচারকার্য বিলম্বিত করা হচ্ছে। তাই বাধ্য হয়েই এবার রানা প্লাজার ছয় বছর পূর্তি উপলক্ষে ধসে পড়া ভবনের সামনে অনশন করছি।

জানা যায়, অনশনরত মাহমুদুল হাসান হৃদয় রানা প্লাজার অষ্টম তলায় নিউ স্টাইল লিমিটেড কারখানায় কাজ করতেন। বর্তমানে তিনি পৌর এলাকার ছায়াবিথী মহল্লায় একটি ফার্মেসি চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে