মাদকদ্রব্য পাচার রোধে বিশেষ উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার

ডেস্ক রিপোর্ট

ইয়াবা
ইয়াবা। ফাইল ছবি

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ও পাচার রোধে টেকনাফের নাফ নদীসহ বিভিন্ন সীমান্ত এলাকায় ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা বসান, ড্র্যাগ ডিটেক্টর, স্ক্যানার মেশিনসহ আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহারের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে সরকার। এর অংশ হিসেবে চার বিভাগীয় শহরে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের টেস্টিং ল্যাবরেটরি স্থাপনের প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। শহরগুলো হচ্ছে- রাজশাহী, বরিশাল, সিলেট ও চট্টগ্রাম।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, এজন্য প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৬ কোটি ২০ লাখ ৩১ হাজার টাকা। সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে ২০২১ সালের ৩০ জুনের মধ্যে এসব ল্যাবরেটরি স্থাপনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হয়েছে।

universel cardiac hospital

সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ এ সংক্রান্ত প্রকল্পে প্রশাসনিক আদেশে সম্মতি প্রদানের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। সেই সঙ্গে প্রকল্পটির অনুমোদিত অঙ্গভিত্তিক ব্যয় বিভাজনও দেয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

চারটি টেস্টিং ল্যাবরেটরি নির্মাণের জন্য যন্ত্রপাতি কেনা বাবদ ব্যয় ধরা হয়েছে ২০ কোটি ৬১ লাখ ২২ হাজার টাকা। প্রকল্প দফতরের জন্য ব্যয় ধারা হয়েছে ১২ লাখ ৮১ হাজার টাকা। আউটসোর্সিং কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বাবদ ব্যয় ধরা হয়েছে ২১ লাখ ২৫ হাজার টাকা; দরপত্র প্রস্তুত, স্টেশনারি ক্রয় ইত্যাদি (প্রকল্প পরিচালকের অফিসের জন্য) ব্যয় বাবদ আট লাখ টাকা; কাঠামোগত নকশা প্রস্তুত ও ছাপানো, দরপত্র প্রস্তুত ও ছাপানো, ডিপিপি প্রস্তুত, ছাপানো ও বাঁধাই এবং স্টেশনারি দ্রব্যাদি ক্রয় বাবদ ব্যয় ধরা হয়েছে আট লাখ টাকা।

এছাড়া স্থাপত্য নকশা প্রস্তুত, ছাপানো ও বাঁধাই, প্রকল্পের ত্রিমাত্রিক মডেল প্রস্তুত বাবদ ব্যয় আট লাখ টাকা; পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি বাবদ ব্যয় চার লাখ টাকা; বৈদেশিক প্রশিক্ষণ ও শিক্ষায় ব্যয় এক কোটি ৮৭ লাখ ২৮ হাজার টাকা; সম্মানী ভাতা বাবদ ব্যয় ছয় লাখ টাকা; মাটি ও উপকরণ পরীক্ষা এবং ডিজিটাল সার্ভেতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১০ লাখ টাকা।

প্রকল্পের জন্য তিনটি মোটরসাইকেল কেনার এজন্য ব্যয় ধরা হয়েছে পাঁচ লাখ ৪০ হাজার টাকা। অনাবাসিক ভবন (মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের তিনতলা বিভাগীয় অফিসের ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ) বাবদ ব্যয় ধরা হয়েছে নয় কোটি ৬৬ লাখ দুই হাজার টাকা। কম্পিউটার ও আনুষঙ্গিক সরঞ্জামাদি ক্রয় বাবদ ব্যয় ২১ লাখ টাকা; ক্যামেরা (সিসিটিভি) কেনা বাবদ ১৬ লাখ টাকা; শীতাতপ নিয়ন্ত্রক ক্রয় বাবদ ৩২ লাখ টাকা; অগ্নিনির্বাপণ সরঞ্জামাদি ও ফায়ার এক্সটিংগুইশার বাবদ ব্যয় ধরা হয়েছে ৬০ লাখ টাকা।

অফিস সরঞ্জামাদি কেনা বাবদ ৬ লাখ ১০ হাজার টাকা; সৌর বিদ্যুতায়ন (সোলার প্যানেল) বাবদ ২০ লাখ টাকা এবং আসবাবপত্র বাবদ ব্যয় ধরা হয়েছে ২৮ লাখ টাকা।

এ প্রসঙ্গে সম্প্রতি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, মাদককে চিরতরে নির্মূল করতে ‘অ্যাকশন প্ল্যান’ বাস্তবায়ন হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে গত বছর প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা ১ লাখ ৬১ হাজার ৩২৩ জনকে আসামি করে এক লাখ ১৯ হাজার ৮৭৮টি মামলা দায়ের করেছেন।

তিনি বলেন, ৬ কোটি ৯১ লাখ ২৯ হাজার ৩২৮ পিস ইয়াবা, ৪৫০ কেজি হেরোইন, ৬০ হাজার ৩৪৩ কেজি গাঁজা এবং ৭ লাখ ১৮ হাজার ৩৫৬ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার হয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, মাদকমুক্ত বাংলাদেশ গঠনই সরকারের বড় চ্যালেঞ্জ। তবে বর্তমান সরকার দেশের যুব সমাজকে মাদক ও সব ধরনের নেশা থেকে মুক্ত করার লক্ষ্যে বহুবিধ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করা হয়েছে এবং তা বাস্তবায়ন অব্যাহত রয়েছে।

এ নীতি বাস্তবায়নে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর, পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাব ও কোস্টগার্ডসহ সব আইন প্রয়োগকারী সংস্থা মাদক অপরাধ নির্মূলে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে বলেও জানান মন্ত্রী।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে