ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আগামী সিন্ডিকেট সভায় নিজেদের পাঁচ দফা দাবি মেনে নেওয়ার দাবি করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। দাবি না মানলে ২৯ এপ্রিল কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করবেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় ঢাকা কলেজ ক্যাফেটেরিয়ায় সংবাদ সম্মেলন করে তারা এ ঘোষণা দেন।
সেশনজট নিরসন, একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ, ত্রুটিমুক্ত ফলাফল প্রকাশসহ পাঁচ দফা দাবিতে গত মঙ্গলবার থেকে নীলক্ষেত মোড় অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। গতকাল বুধবারও তাঁরা সড়ক অবরোধ করেন। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এসে তাঁদের দাবি বিবেচনার প্রতিশ্রুতি দিলে অবরোধ তুলে নেন শিক্ষার্থীরা।
সরকারি সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখপাত্র কাজী নাসির সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘গত দুদিন আমরা রাজধানীর একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করেছি। এতে অনেক জনভোগান্তি হয়েছে। আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে যাওয়ায় জনভোগান্তি জেনেও এমন কর্মসূচিতে যাওয়া ছাড়া উপায় ছিল না। তাই আমরা এমন কর্মসূচি পালনে বাধ্য হয়েছি। সাময়িক এ দুর্ভোগের জন্য আমরা ক্ষমাপ্রার্থী।’
তিনি বলেন, ‘এখনো কার্যকর একাডেমিক ক্যালেন্ডার তৈরি না করায় বিভিন্ন বর্ষে সেশনজট লেগে আছে। কোনো সিলেবাস তৈরি না করায় পাঠদানে সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। ফলাফল অবমূল্যায়ন হচ্ছে। দুঃখজনক হলেও সত্য, অনেক আশ্বাস পেলেও আড়াই বছরে তার বাস্তবায়ন আমরা পাইনি। এসব বিষয়ে অভিযোগ দেওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিরা বারবার উপাচার্য মহোদয় ও প্রক্টর মহোদয়ের সঙ্গে সাক্ষাতের চেষ্টা করলেও সুযোগ দেওয়া হয়নি, যা আমাদের রাজপথে নামাতে বাধ্য করেছে।’
নাসির আরো বলেন, ‘গতকাল আন্দোলনের পর উপাচার্য মহোদয় আমাদের ডেকেছেন। আমরা সাত কলেজের ১০ জন প্রতিনিধি দেখা করেছি। তিনি আমাদের কিছু দাবি মেনে নেওয়ার ব্যাপারে আশ্বস্ত করেছেন। আবার কিছু বিষয়ের সমাধান তিনি দিতে পারেননি। তবে ২৮ এপ্রিল তাঁদের সিন্ডিকেট সভায় আমাদের সমস্যা নিয়ে তাঁরা আলোচনা করে সমাধান দেবেন বলে আশা দিয়েছেন।’
নাসির বলেন, ‘আগামী শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ কলেজের অধ্যক্ষের বরাবর স্মারকলিপি দেবে। সিন্ডিকেট সভায় আমাদের পাঁচ দফা দাবি মেনে না নেওয়া হলে সোমবার সংবাদ সম্মেলন করে কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দেওয়া হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনের সমন্বয়ক আবু বকরসহ সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, শিক্ষার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি তিতুমীর কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, সরকারি বাঙলা কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ ও সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়। ২০১৭ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি অধিভুক্ত হয় কলেজগুলো। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীর সংখ্যা আড়াই লাখ।