জাপানের ২০০ বছরের ইতিহাসে আকিহিতো প্রথম সম্রাট, যিনি স্বেচ্ছায় সিংহাসন ত্যাগ করছেন।
আজ মঙ্গলবার তিনি সিংহাসন ছেড়ে দিচ্ছেন। ৮৫ বছর বয়সী আকিহিতো বার্ধক্য ও অসুস্থতার কথা উল্লেখ করে সম্রাট হিসেবে তার ভূমিকা যথাযথভাবে পালনে অনুপযুক্ত বলে জানালে তাকে সিংহাসন ত্যাগ করার আইনি অনুমতি দেয়া হয়।
তার ছেলে ক্রাউন প্রিন্স নারুহিতো নতুন সম্রাট হিসেবে সিংহাসনে আসীন হচ্ছেন। বুধবার আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে নারুহিতোর দায়িত্ব নেয়ার মধ্য দিয়ে শুরু হবে জাপানের নতুন যুগ।
৫৯ বছর বয়সী নারুহিতো অক্সফোর্ডে পড়াশোনা করেছেন। ২৮ বছর বয়সে তিনি ক্রাউন প্রিন্স হন। ১৯৮৬ সালে এক চায়ের পার্টিতে স্ত্রী মাসাকো ওয়াদার সঙ্গে তার পরিচয় হয়। ১৯৯৩ সালে তারা বিয়ে করেন।
এই দম্পতির আইকো নামে ১৮ বছর বয়সী মেয়ে রয়েছেন। জাপানে নারীরা উত্তরাধিকার হিসেবে সিংহাসনে বসতে পারেন না। তাই রাজকুমারী আইকোর সিংহাসনে বসার সুযোগ নেই।
জাপানে সম্রাটের রাজনৈতিক কোনো প্রভাব না থাকলেও জাতীয় প্রতীক হিসেবে সম্মানিত হয়ে থাকেন।
সম্রাট আকিহিতো ও তার স্ত্রী সম্রাজ্ঞী মিচিকো সাধারণ মানুষের কাছে ছুটে যেতেন। বিশেষ করে প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার ও রোগে ভোগা মানুষের সাহায্যে এগিয়ে যেতেন তারা।
২০১৬ সালে সম্রাট আকিহিতো সিংহাসন ত্যাগ করার ব্যাপারে শক্ত আভাস দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, তিনি আশঙ্কা করছেন- বয়সের কারণে দায়িত্ব পালন করা তার জন্য কঠিন হতে পারে।
এ ব্যাপারে জনমত জরিপে সম্রাটের ইচ্ছার প্রতি দেশটির বেশিরভাগ মানুষ সহানুভূতি প্রকাশ করে সমর্থন জানান। এর এক বছর পর আকিহিতোর সিংহাসন ছাড়ার পথ সুগম করতে আইন পাস করে পার্লামেন্ট।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার বিকাল ৫টায় সম্রাটের সিংহাসন ত্যাগ করার অনুষ্ঠানটি ইম্পেরিয়াল প্যালেসের রাষ্ট্রীয় কক্ষ ‘মাতসু-নো-মা’তে অনুষ্ঠিত হবে।
পুরো অনুষ্ঠানটি ১০ মিনিটে শেষ হবে এবং অনুষ্ঠানটি শেষে হবে সম্রাট হিসেবে আকিহিতোর শেষ ভাষণের মধ্য দিয়ে। রীতি অনুসারে বুধবার সকাল থেকে নারুহিতো উত্তরাধিকার হিসেবে সিংহাসনের দায়িত্ব নেবেন।
ক্রাউন প্রিন্স নারুহিতো জাপানের ১২৬তম সম্রাট হতে যাচ্ছেন। আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি দেশকে ‘রেইওয়া’ যুগে প্রবেশের নেতৃত্ব দেবেন। সেই সঙ্গে শেষ হবে ‘হেইসেই’ যুগ। ১৯৮৯ সালে আকিহিতোর সিংহাসনে আসীন হওয়ার সময় থেকে ‘হেইসেই’ যুগ শুরু হয়েছিল।