কুষ্টিয়ার খোকসায় নিখোঁজ হওয়ার তিনমাস পর গত বৃহস্পতিবার রাতে তাঁত শ্রমিক ছানাউল্লাহ বিশ্বাস ওরফে ছানাইয়ের (৪৫) লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় বাবাকে হত্যার পর লাশ গুমের অভিযোগে ছেলে রানা বিশ্বাস আটক করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী রানী খাতুনসহ অন্যরা আত্মগোপন করেছেন।
ভবনীপুড়ে নিজের বাড়ির রান্না ঘরের মেঝে খুঁড়ে তার অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে খোকসা থানার পুলিশ।
নিহতের ভাই আব্দুল বারিক জানান, গত ফেব্রুয়ারি মাসে হঠাৎ করে তার ছোট ভাই ছানাউল্লাহ বিশ্বাস নিখোঁজ হন। কয়েক দিন পর তার স্ত্রী রানী খাতুন দুই মেয়ে সনিয়া ও তানিয়াকে নিয়ে ঢাকায় যাওয়ার কথা বলে বাড়ি ছাড়েন। নিহতের একমাত্র ছেলে রানা বিশ্বাস উপজেলার ভবনীপুড়ের বাড়িতেই ছিলেন।
ভাইয়ের সন্ধানে বারিক নিজে কয়েক দফা রানার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। সম্প্রতি বাড়িতে তালা লাগিয়ে রানা পাশের গ্রাম মুকশিদপুরে শ্বশুর বাড়িতে আত্মগোপন করেন।
এ ঘটনায় বারিকের সন্দেহ ঘনিভূত হলে তিনি খোকসা থানায় গত ৩০ এপ্রিল লিখিত অভিযোগ করেন। এক পর্যায়ে পুলিশ নিখোঁজ ব্যক্তি ও তার স্ত্রী সন্তানদের সন্ধান করতে অভিযোগকারীর ওপর দায়িত্ব দেন।
গত বৃহস্প্রতিবার সন্ধায় আত্মগোপনে থাকা রানাকে স্থানীয়রা আটক করেন। তিনি তার বাবার হত্যার কথা স্বীকার করলে তাকে পুলিশে সপর্দ করে এলাকাবাসী। রানার স্বীকারোক্তির পর রাতেই বাড়ির রান্না ঘরের মেঝেতে পুঁতে রাখা ছানাউল্লাহ বিশ্বাসের অর্ধগলিত মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ ।
বারিক আরো জানান, বড় মেয়ে তানিয়ার তালাকের পর স্বামীর কাছ থেকে পাওয়া দেন মহরের প্রায় দেড় লাখ টাকা ছানাউল্লাহর স্ত্রী তার এক আত্মীয়র কাছে গচ্ছিত রাখেন। এ ঘটনায় পরিবারিক বিরোধের সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে স্ত্রী-সন্তানরা তাকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করে লাশ রান্নাঘরের মেঝেতে পুঁতে রেখেছিল।
নিহত ছানাউল্লা ওরফে ছানাই মৃত আফসার বিশ্বাসের ছেলে।
খোকসা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবিএম মেহেদী মাসুদ গণমাধ্যমকে জানান, নিহত ছানাউল্লাহর ভাইয়ের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে নিখোজের ছেলে রানা বিশ্বাসকে আটক করি। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী নিহতের রান্নাঘরের মেঝে থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। নিহতের ভাইয়ের দেওয়া অভিযোগটি মামলা হিসেবে নেওয়া হয়েছে। এটি একটি চাঞ্চল্যকর মামলা।