সাধারণ ঝড়ে পরিণত হয়ে ফণী এখন বাংলাদেশের মেহেরপুর, চুড়াডাঙ্গা ও এর পাশ্ববর্তী এলাকাগুলোয় অবস্থান করছে। এটি আজ বিকেল বা সন্ধ্যা নাগাদ বাংলাদেশ অতিক্রম করবে। এরপর ভারতের হিমালয় বা তৎসংলগ্ন এলাকায় গিয়ে দুর্বল হয়ে পরে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে।
শনিবার সকাল ১০টায় সংবাদ ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানিয়েছেন বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক সামছুদ্দিন আহমদ।
তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় ফণী সকাল ৬টায় খুলনাঞ্চল দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের পর থেকেই দুর্বল হয়ে পড়ছে। তবে, দুর্বল হলেও এটি এখনও ঘূর্ণিঝড় হিসেবে আছে। ফণী এখন দেশের মধ্যবর্তী স্থান মেহেরপুর, চুড়াডাঙ্গা ও মানিকগঞ্জ এবং এর আশেপাশের এলাকায় অবস্থান করছে। ৫৪ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে অবস্থানের কারণে ঘন্টায় ৬২ থেকে ৮৮ কিলোমিটার গতিতে বাতাস বইছে। ফণী আরও ৫ থেকে ৬ ঘন্টা বাংলাদেশে অবস্থান করবে। বিকেল বা সন্ধ্যা নাগাদ বাংলাদেশের মধ্যবর্তী স্থান থেকে উত্তর ও উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে ভারতের হিমালয় বা তৎসংলগ্ন এলাকায় পৌঁছবে। ততক্ষণে এটি আরও দুর্বল হয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটির গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে আবহাওয়া অফিস যে পূর্বাভাস দিয়েছে তাতে যদি এর প্রথম দিকের যে গতিপথ ছিল, সেটি আঘাত হানতো তাহলে বাংলাদেশে বড় ক্ষতির আশঙ্কা ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে এটির গতিপথ পরিবর্তন হওয়ায় সে ক্ষতির আশঙ্কা থেকে আমরা বেঁচে গেছি। এখন যেসব স্থান দিয়ে এটি অতিক্রম করছে সেসব স্থানগুলোতে ঝড়ো হাওয়া ও হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এটির ফলে ক্ষতির সম্ভাবনা থাকলেও বড় ধরনের কোনো ক্ষতির সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন তিনি।
ঘূর্ণিঝড় ফণী বাংলাদেশে অবস্থান নেয়ার ফলে এর প্রভাবের বিষয়ে তিনি বলেন, সকাল থেকে চাঁদপুরে ১২৭ মিলিমিটার বৃষ্টি পাত হয়েছে। রংপুর -রাজশাহীসহ কোথাও কোথাও ভারী বৃষ্টিপাতের পাশাপাশি দমকা বাতাসও বইছে। এর প্রভাবে বরিশালে ৭৪ কিলোমিটার গতিবেগে বাতাস বইছে। পিরোজপুর, ঝালকাঠি, ভোলা, নোয়াখালী লক্ষীপুরসহ বিভিন্ন উপকূলীয় অঞ্চলে স্বাভাবিকের চেয়ে ২ থেকে ৪ ফুট জলোচ্ছ্বাস হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ফণীর প্রভাবে আগামীকাল বিকেল পর্যন্ত বৈরি আবহাওয়া থাকবে। এরপর আস্তে আস্তে আবহাওয়ার পরিবর্তন ঘটবে। তবে, পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত যারা আশ্রয় কেন্দ্রে আছেন তারা সেখানে অবস্থান করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। সেই সঙ্গে মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৭ নম্বর এবং চট্টগ্রামকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত ও কক্সবাজারকে ৪ নাম্বার হুশিয়ারী সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।