একখণ্ড কাপড় পরিহিত এই বৃদ্ধ নাকি আফ্রিকার দেশ সুদানের সাবেক সহকারী প্রতিরক্ষামন্ত্রী কর্নেল ইব্রাহিম চামসাদিনের! স্বৈরশাসক ওমর আল-বশিরের শাসনামলে ১৯৯৫ সালে তিনি গ্রেফতার হন।
পরে ২০০৮ সালে বিমান দুর্ঘটনায় তিনি মারা গেছেন বলে ঘোষণা দেওয়া হয়। কিন্তু দীর্ঘ এক দশক পর এই বৃদ্ধের ছবি ঘিরে দাবি উঠেছে, তিনিই নাকি কর্নেল ইব্রাহিম চামসাদিন। সম্প্রতি দেশটির একটি মসজিদের নিচে অবস্থিত কারাগারের নির্জন কক্ষে তার সন্ধান পাওয়া গেছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কয়েকটি ছবি ভাইরাল হয়েছে। ছবিতে দেখা যাচ্ছে, একজন কঙ্কালসার বৃদ্ধ একটি নির্জন কক্ষে করুণ দৃষ্টিতে চেয়ে আছেন। শুভ্র চুলের এই লোকটির সারা গায়ে ধুলা। তিনি যেখানে বসে আছেন সেই জায়গাটিও ধুলাবালিতে একাকার।
আফ্রিকাভিত্তিক একটি সংবাদ মাধ্যমের দাবি, দেশটির একটি মসজিদের নিচে অবস্থিত একটি কারাগারের একটি নির্জন কক্ষে কর্নেল ইব্রাহিমের সন্ধান পাওয়া গেছে। অথচ সুদান সরকারের দাবি, বিমান দুর্ঘটনায় ২০০৮ সালের ১১ জুন মারা যান ইব্রাহিম।
তবে ঘটনা আসলে কোনটা সত্য। সাবেক এই প্রতিরক্ষামন্ত্রী কী সত্যিই মারা গেছেন? নাকি সম্প্রতি তাকে নির্জন একটি কক্ষে বন্দি অবস্থায় খুঁজে পাওয়া গেছে। মূলত, ফেমি ফেনি-ক্যাইওড নামে একজন নাইজেরীয় রাজনীতিবিদের টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে একটি পোস্টকে কেন্দ্র করে এই বিতর্কের সূত্রপাত।
পোস্টে ওই রাজনীতিবিদ লিখেছেন, সুদানের সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইব্রাহিম চামসাদিনকে একটি নির্জন কক্ষে সম্প্রতি খুঁজে পাওয়া গেছে। অথচ স্বৈরশাসক বশির সরকার মিথ্যা ঘোষণা দেয়, ২০০৮ সালে বিমান দুর্ঘটনায় তিনি মারা গেছেন।
তবে পূর্ব-আফ্রিকার অর্থনৈতিক ও অন্যান্য ঘটনার সত্যাসত্য অনুসন্ধান নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠান পেসাচেক বলছে, আলোচিত ছবিটি সুদানের সাবেক সহকারী প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইব্রাহিম চামসাদিনের নয়। কেনিয়ায় ভয়াবহ খরা চলাকালে দুর্ভিক্ষের একটি চিত্র এটি। চলতি বছরের মার্চে কেনিয়ার উত্তরাঞ্চলে ভয়াবহ খরার কারণে দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। বিবিসির সাংবাদিক রনক্লিফ ওডিট দুর্ভিক্ষের সংবাদ কভার করতে গিয়ে ছবিগুলো তোলেন।
আসল ঘটনা হলো, ২০০১ সালের এপ্রিলে একটি সামরিক বিমান দুর্ঘটনায় মারা যান ইব্রাহিম চামসাদিন। ওই দুর্ঘটনায় সেনাবাহিনীর আরও ১৩ জন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মারা যান।