সিআইডি রাসায়নিক পরীক্ষাগার সূত্র জানায়, ফেনীর সোনাগাজি উপজেলার মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে কেরোসিনের আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় জব্দকৃত ৪টি নমুনা পরীক্ষায় দাহ্যপদার্থ (কেরোসিন) ব্যবহারের আলামত মিলেছে।
রাসায়নিক পরীক্ষার পর প্রতিবেদন দাখিল করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ। সেই প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
সিআইডি রাসায়নিক পরীক্ষাগারের প্রধান পরীক্ষক ড. দিলীপ কুমার সাহা গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা গতকাল (সোমবার) পরীক্ষা সম্পন্ন করে প্রতিবেদন পাঠিয়েছি। হত্যা সংশ্লিষ্ট জব্দকৃত আলামতে দাহ্যপদার্থের নমুনা পাওয়া গেছে।
সিআইডি রাসায়নিক পরীক্ষাগার সূত্রটি আরও জানায়, নুসরাত হত্যার জব্দকৃত আলামত পরীক্ষার জন্য গ্যাস ক্রোমাটোগ্রাফি এবং ম্যাস স্পেক্ট্রোফটোমিটার ও অন্যান্য আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে নমুনায় কেরোসিনের উপস্থিতি শনাক্ত করা হয়।
- আরও পড়ুন >> ফেসবুকে শোভন-রাব্বানীকে নিয়ে জারিনের বিস্ফোরক স্ট্যাটাস
- আরও পড়ুন >> খালেদা জিয়া সুস্থ আছেন, রোজা রাখছেন: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
- আরও পড়ুন >> শেষ ম্যাচে একাদশে আসতে পারে তিন পরিবর্তন!
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিআইডি রাসায়নিক পরীক্ষাগারের এক রাসায়নিক পরীক্ষক বলেন, জব্দকৃত নিহতের পরিহিত সালোয়ার ও বোরকার পোড়া অংশ বিশেষ এবং দুটি কালো রঙয়ের পলিথিন আমরা রাসায়নিক পরীক্ষার মাধ্যমে কেরোসিনের উপস্থিতি পেয়েছি। পিবিআই চলতি মাসেই তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের কথা জানিয়েছে। আমাদের রাসায়নিক পরীক্ষার প্রতিবেদন মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিলে কার্যকরী ভূমিকা রাখবে বলে আশা করছি।
প্রসঙ্গত, গত ৬ এপ্রিল সকালে নুসরাত জাহান রাফি আলিম পরীক্ষা দিতে ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসায় যান। ওই সময় মাদরাসার এক ছাত্রী তার বান্ধবী নিশাতকে ছাদের ওপর কেউ মারধর করছে- এমন সংবাদ দিলে তিনি ওই বিল্ডিংয়ের চতুর্থ তলায় যান। সেখানে রাফির ওপর পরিকল্পিতভাবে হামলা চালানো হয়।
মুখোশ পরিহিত চার-পাঁচজন তাকে অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ দৌলার বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে দায়ের করা মামলা তুলে নিতে চাপ দেয়। রাফি অস্বীকৃতি জানালে তারা কেরোসিন নিক্ষেপ করে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়।
গত ১০ এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় নুসরাত। ওই ঘটনায় রাফির মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করেন।
দেশব্যাপী চাঞ্চল্যকর ওই ঘটনায় আদালতের নির্দেশে থানা পুলিশের পরিবর্তে তদন্ত শুরু করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। মামলার তদন্তের স্বার্থে ভিকটিমের পরিহিত সালোয়ার ও বোরকার পোড়া অংশ বিশেষ এবং দুটি কালো রঙয়ের পলিথিন জব্দ করা হয়। আদালতের ক্ষমতাপত্র ও আদেশনামাসহ জব্দকৃত আলামতসমূহ পরীক্ষার জন্য গত ২ মে সিআইডি রাসায়নিক পরীক্ষাগার চট্টগ্রামে পাঠানো হয়।
সিআইডি রাসায়নিক পরীক্ষাগারের প্রধান পরীক্ষক ড. দিলীপ কুমার সাহা রাসায়নিক পরীক্ষার জন্য তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেন। কমিটির সদস্যরা কেন্দ্রীয় ল্যাবরেটরি ও চট্টগ্রামের ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করে আলামত সম্পর্কে মতামত দেন।