রোহিঙ্গা নির্যাতন বিষয়ে ‘ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের’ প্রতিবেদন আগামী সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘে জমা দেয়ার কথা রয়েছে।
জাতিসংঘ মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
খবরে প্রকাশ, রাখাইনে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে হামলার জন্য গঠিত জাতিসংঘের ‘ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন’ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি এ আহ্বান জানিয়েছে।
মিশনটির এক বিবৃতিতে বলা হয়, রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের বিষয়ে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও দেশটির সরকার এখন পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো নির্যাতনের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে চাপ প্রয়োগ করতে হবে, যেন তারা এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেয়।
রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতন বিষয়ক ‘ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের’ প্রধান মারসুকি ডারুসমান মিয়ানমারের প্রতিবেশী দেশগুলোতে ১০ দিনের এক সফর শেষে বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের জন্য মিয়ানমার সরকারের কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার প্রয়োজন ছিল। কিন্তু দুঃখজনক হলো, তারা এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
তিনি আরও বলেন, এমন পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে মিয়ানমারের উপর চাপ প্রয়োগ করতে হবে যেন তারা রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে যথাযথ ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করে।
উল্লেখ্য, পশ্চিমা দেশগুলোর সাথে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সরাসরি কোনো সম্পর্ক নেই। তবে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী দেশটির বেশ কিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত, যেসব প্রতিষ্ঠানের সাথে পশ্চিমা দেশগুলোর বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে।
পশ্চিমা দেশগুলো যদি এ প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে অর্থনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে, তবে তা মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে চাপের মুখে ফেলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতনের ঘটনার পর জাতিসংঘের ‘ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন’ এ বিষয়ে তদন্ত শুরু করে।
ঘটনার এক বছর পর প্রকাশিত তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, রোহিঙ্গাদের ওপর আন্তর্জাতিক আইন ও মানবাধিকার লঙ্ঘন করে অকথ্য নির্যাতন চালানো হয়েছে।
জাতিসংঘের ওই প্রতিবেদনে রোহিঙ্গাদের ওপর নিপীড়নসহ এ সংক্রান্ত বিভিন্ন অপরাধের ঘটনায় জড়িতদের বিচারের আওতায় আনার সুপারিশ করা হয়েছে।
পাশাপাশি নির্যাতনের শিকার মানুষগুলোকে দেশে ফিরিয়ে নেয়া, মিয়ানমারের উপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ, জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রসমূহের সঙ্গে মিয়ানমারের সম্ভাব্য সম্পর্কসহ ১৪ টি বিষয়ে সুপারিশ করেছে ‘ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন।’
সুপারিশগুলো বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখার জন্য সদস্য দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে মিয়ানমার।
রোহিঙ্গা নির্যাতন বিষয়ে ‘ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের’ প্রতিবেদন আগামী সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘে জমা দেয়ার কথা রয়েছে।