স্বপ্ন পূরণে নামছে বাংলাদেশ দল

ডেস্ক রিপোর্ট

বাংলাদেশ দল
ফাইল ছবি

একের অধিক দেশকে নিয়ে আয়োজিত কোন টুর্নামেন্টে এখন পর্যন্ত ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে বাংলাদেশ ছয়বার ফাইনাল খেলেছে। কিন্তু একবারও ট্রফি ছুঁতে পারেনি। আজ ঠিক সেরকম আরেকটি ফাইনালে বিকেল ৩.৪৫ মিনিটে ডাবলিনের মালাহাইডে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মুখোমুখি টিম টাইগার্স।

এবার আর এ ধরণের টুর্নামেন্ট থেকে খালি হাতে ফিরতে চায় না স্টিভ রোডসের শিষ্যরা। অধরা সেই স্বপ্নের ট্রফি জেতায় এখন একমাত্র লক্ষ্য লাল-সবুজ প্রতিনিধিদের। তারপরও ব্যাপারটি নিয়ে খুব একটা ভাবছেন না ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি। আজকের ফাইনাল ম্যাচ এ ডানহাতি পেসার দেখতে চাইছেন অন্য ম্যাচের মতই।

universel cardiac hospital

মেগা ইভেন্টের কোন ফাইনালে বাংলাদেশ প্রথম উঠেছিল ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে। এরপর ২০১২-২০১৬-২০১৮ এশিয়া কাপ, ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে দেশের মাঠে ত্রিদেশীয় সিরিজ কিংবা কলম্বোয় নিদাহাস ট্রফির শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে জায়গা করে নিয়েছিল ম্যাশ বাহীনি। কিন্তু সেসব টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের খাতায় যোগ হয়েছে শুধুই হতাশার গল্প।

তাই আজকের ফাইনালকে মাশরাফি বিন মর্তুজা একটি সাধারণ ম্যাচ হিসেবেই দেখছেন, ‘গত এশিয়া কাপে সাকিব-তামিম ছিল না, তবুও মনে হচ্ছিল, ম্যাচটা অনেক কাছাকাছি গিয়েছিলাম। এমন আরও একটা এশিয়া কাপের ফাইনালের খুব কাছে গিয়েছিলাম। কয়েকটা ফাইনাল খুব কাছে গিয়ে হেরে যাওয়ায় মনে হয়েছে মানসিকভাবে আমাদের একটা বাধা আছে, ফাইনালে যেটা প্রভাবিত করে।

এ কারণে মিটিংয়ে আজ ফাইনাল নিয়ে আলোচনা করিনি। অন্য ম্যাচগুলো যেভাবে খেলি, যেভাবে মিটিং করি, ওভাবেই করছি। ছেলেদের মধ্যে এই ভাবনাটা যেন না আসে যে ফাইনাল খেলছি, যতটুকু এড়িয়ে চলা যায়, সে চেষ্টা করছি।’

এ ধরণের টুর্নামেন্টে একবার শিরোপা জিতলেই সব ভয় কেটে যাবে বাংলাদেশের। এমনটাই মনে করেন মাশরাফি, ‘যতক্ষণ না কোনো ফাইনাল বা ট্রফি জিতছেন না, এ মানসিক বাধা থাকবেই। যতবারই ফাইনাল হারবেন, আরেকটা ফাইনালে উঠে এ চিন্তাটা থাকবেই।

এটা যখন কেটে যাবে, তখন খুব স্বাভাবিক, ফাইনাল জেতার তীব্র তাড়না কমে যাবে। যখন মানুষের কিছু পাওয়ার ইচ্ছে কমে যায়, ওটা ঘিরে খারাপ চিন্তাগুলোও দূরে থাকে। সিরিজ আপনি অনেক জিতেছেন। সিরিজ জেতা নিয়ে কঠিন চাপ তাই অনুভব করেন না। একটা ফাইনাল জিতলে দেখবেন সামনে দ্রুত আরও কিছু ফাইনাল জিতে গেছেন।’

চলতি সিরিজের লিগ পর্বে একটি ম্যাচও হারেনি বাংলাদেশ। যে কারণে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে থেকেই ফাইনালে ওঠে দলটি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দুটি ম্যাচেই জিতেছে তারা। তবে আজ ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে ম্যাচটা সহজ হবে না বলেই মনে করছেন মাশরাফি, ‘আলাদা করে ভাবনা নেই।

এ সিরিজে তিনটা ম্যাচ যেভাবে খেলেছি, ওভাবেই খেলতে চাই। মনে হয় না বেশি পরিকল্পনা করে অতিরিক্ত চাপ নেওয়ার দরকার আছে। একটা দলের সঙ্গে টানা দুই ম্যাচ জেতার পর সবাই যেটা ভাবে, তিন নম্বর ম্যাচও একই রকম হবে। সে রকম অনেক সময় হয় না। একাই ম্যাচ জিতিয়ে দিতে পারে ওয়েস্ট ইন্ডিজে এমন খেলোয়াড় আছে।

ম্যাচটা আগের দুটির মতো হবে, এটা আশা করা ঠিক না। ম্যাচটা হয়তো আরও কঠিন হবে। একটা দল দুটি ম্যাচ হারের পর তাদের ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা বেশি থাকে। মনে হচ্ছে অনেক কঠিন ম্যাচ হবে। আমরাও সেভাবে চেষ্টা করব।’

শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচের আগে বাংলাদেশকে বাড়তি আত্মবিশ্বাস দিচ্ছে লিগপর্বে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দুইবার পরাজিত করা। তাছাড়া গত দুই ওয়ানডে সিরিজে (হোম ও অ্যাওয়ে) ক্যারিবীয়দের হারিয়েছিল টিম টাইগার্স। সেই ধারাবাহিকতায় আজ ধরে রাখতে মাঠে নামছেন মাশরাফি বিন মুর্তজা।

ফাইনালে আজ বাংলাদেশ শিবিরে কিছুটা শঙ্কা তৈরি করেছে সাকিব আল হাসানের চোট। তবে ম্যাচের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত তার জন্য অপেক্ষা করবে বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত সাকিবকে যদি না পাওয়া যায় তাহলে তার পরিবর্তে তিন নম্বরে ব্যাট করতে নামবেন লিটন কুমার দাস। সৌম্য সরকার ও তামিম ইকবাল করবেন ইনিংসের গোড়াপত্তন।

সাকিবের পাশাপাশি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও কাঁধের ইনজুরি রয়েছে কিছুটা। সেক্ষেত্রে বল হাতে সৌম্য সরকার ও সাব্বির রহমানও ভূমিকা রাখার সুযোগ পেতে পারেন।

ডাবলিনের আবহাওয়া আজ পরিস্কার থাকলেও স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় কিছুটা বৃষ্টির শঙ্কা রয়েছে।

সবশেষ ২০০৮ সালে ত্রিদেশীয় কিংবা বহুজাতিক সিরিজের ফাইনালে জিতেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এরপর গেল ১৩ বছর ধরে ত্রিদেশীয় সিরিজের ট্রফি জিততে পারেনি তারা। সে হিসেবে আজ অধরা ট্রফিটা জিততেই পারে বাংলাদেশ!

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে