দুর্নীতি মামলায় কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের বক্তব্য নিয়ে মন্তব্য ও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের মানহানির পৃথক দুই মামলায় জামিন আবেদনের শুনানি হয়নি আজ বুধবার।
হাইকোর্ট এ বিষয়ে শুনানির জন্য ঈদের পর আগামী ১৭ জুন দিন ধার্য করেছেন।
আজ বুধবার হাইকোর্টের বিচারপতি মুহাম্মদ আবদুল হাফিজ ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
দুই মামলায় খালেদার জামিন শুনানির জন্য আজ দিন ধার্য ছিল। কিন্তু রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ফজলুর রহমান খান আদালতে জানান, অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম অসুস্থ, তাই শুনানি মুলতবি করা হোক।
এ সময় খালেদা জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের একটি নির্দেশনার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, খালেদার দুটি মামলাই জামিনযোগ্য, তাই এখানে খালেদা জিয়ার জামিন শুনানিতে আপত্তি থাকার কোনো প্রশ্ন থাকতে পারে না।
তিনি আরও বলেন, শুধুমাত্র খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রেই সুপ্রিম কোর্টের আদেশ অমান্য করা হচ্ছে। পরে আদালত শুনানির জন্য আগামী ১৭ জুন দিন ধার্য করেন।
খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানিতে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, এ জে মোহাম্মদ আলী ও খন্দকার মাহবুব হোসেন। সঙ্গে ছিলেন, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল ও ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন অ্যাডভোকেট ফারুক হোসেন, মাসুদ রানা ও ব্যারিস্টার এ কে এম এহসানুর রহমানসহ অর্ধশতাধিক আইনজীবী।
মামলার বিবরণ সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালের ১৪ অক্টোবর রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে হিন্দু সম্প্রদায়ের শুভ বিজয়ার অনুষ্ঠানে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের এক পর্যায়ে খালেদা জিয়া বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ধর্মনিরপেক্ষতার মুখোশ পরে আছে। আসলে দলটি ধর্মহীনতায় বিশ্বাসী।
ওই বক্তব্যের জের ধরে দণ্ডবিধির ১৫৩ (ক) ও ২৯৫ (ক) ধারায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ঢাকা মহানগর হাকিম মোস্তাফিজুর রহমানের আদালতে ২০১৪ সালের ২১ অক্টোবর নালিশি মামলাটি করেন জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এ বি সিদ্দিকী।
অন্যদিকে, ২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা করেন এ বি সিদ্দিকী। দুই মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন বিচারিক আদালত।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দুর্নীতির দুটি মামলায় মোট ১৭ বছরের সাজা নিয়ে বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।
খালেদার অন্যতম আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, খালেদা জিয়াকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে কারাগারে রাখা হয়েছে। সরকারের সদিচ্ছা ছাড়া তাকে বের করা যাবে না। যার প্রমাণ আজ অ্যাটর্নি জেনারেলের সময় আবেদনে জামিন আবেদনের শুনানি করা যায়নি।
তিনি বলেন, উচ্চ আদালতের এ ধরনের সিদ্ধান্তে আমরা লজ্জিত। আমরা আদালতে বলেছি, মানহানির মামলা জামিনযোগ্য। আপিল বিভাগের সিদ্ধান্ত আছে জামিনযোগ্য মামলায় জামিন প্রার্থনা করলে জামিন দিতে হবে। কিন্তু অ্যাটর্নি জেনারেলের অসুস্থতার কথা বলে সময় নেয়া হয়েছে।