বগুড়ায় বিএনপির আহবায়ক কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে আভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ার কারণে এবার যুবদলের জেলা কমিটিকে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার সংগঠনের কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক কামরুজ্জামান দুলাল স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। যুবদলের সদ্য বিলুপ্ত বগুড়া জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক খাদেমুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গত ১৬ মে বগুড়া জেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদকসহ ৬ নেতাকে বহিষ্কার করা হয়। একই দিন কেন্দ্র থেকে বিএনপি, ছাত্রদল এবং স্বেচ্ছাসেবক দলের আরও ৮ নেতার পদ-পদবীও স্থগিত করা হয়।
বৃহস্পতিবার যুবদলের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কর্তব্যে অবহেলা ও নিষ্ক্রিয়তার কারণে যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুল ইসলাম নীরব এবং ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম নয়ন যুবদল বগুড়া জেলা কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেছেন।
বগুড়ায় যুবদলের নেতাকর্মীরা জানান, প্রায় এক বছর আগে ২০১৮ সালের আগস্টে ১৭৮ সদস্য যুবদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়।
বগুড়ায় মেয়াদোত্তীর্ণ বিএনপির জেলা কমিটি বিলুপ্ত করে সাবেক সাংসদ গোলাম মোহাম্মদ সিরাজকে আহবায়ক করে গত ১৫ মে ৩১ সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়।
তবে পদবঞ্চিত নেতা এবং তাদের অনুসারীরা গোলাম মোহাম্মদ সিরাজকে ‘সংস্কারপন্থী’ উল্লেখ করে তার নেতৃত্বে গঠিত কমিটি বাতিলের দাবিতে ওইদিন থেকেই বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল এবং স্বেচ্ছাসেবক দলের একাংশের নেতাকর্মী বিক্ষোভ দেখিয়ে আসছিলেন। এমনকি ওইদিন ইফতারের পরপরই তারা দলীয় কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেন।
ওই ঘটনায় দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের ১৪ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
তারও আগে জেলা বিএনপির আরও দুই নেতার পদবী স্থগিত করা হয়। তবে তার পরেও আহবায়ক কমিটি বিরোধীদের তৎপরতা থামেনি বরং ১৬ মে বিকেলে আবারও দলীয় কার্যালয়ে তালা দেওয়া হয়। পরদিন ১৭ মে বিকেলে আহবায়ক কমিটির নেতৃবৃন্দ তালা খুলে দলীয় কার্যালয়ে প্রবেশ করলেও পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা সন্ধ্যায় আবারও তালা ঝুলিয়ে দেন।
পরবর্তীতে পদবী-স্থগিত এবং বহিষ্কৃত ১৬ নেতার পক্ষে ১৬টি তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। তারপর থেকে পদ বঞ্চিত নেতাকর্মীরা প্রতিদিনই আহবায়ক কমিটি বাতিলের দাবিতে দলীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ দেখিয়ে আসছেন।
সর্বশেষ গত ২২ মে আহবায়ক কমিটির নেতৃবৃন্দ পদবঞ্চিত নেতাকর্মীদের সমঝোতার প্রস্তাব দিলেও তারা তা মেনে নেয়নি। বরং ওইদিন রাতে আহবায়ক কমিটি সমর্থক হিসেবে পরিচিত ছাত্রদল শহর কমিটির সভাপতি সৌরভ হাসানকে প্রতিপক্ষের নেতাকর্মীরা মারপিট করেন। তার জের ধরে বিএনপির সাবেক সভাপতি সাইফুল ইসলামের বাসভবনে হামলা চালানো হয়।
সমঝোতার বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য আলী আজগর হেনা গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা সংগঠনের বৃহত্তর স্বার্থে তাদের সমঝোতার প্রস্তাব দিয়েছিলাম। কিন্তু তারা সেটি মানেনি। এখন সময়ই তাদের কর্মকাণ্ড মূল্যায়ন করবে।
যুবদলের কমিটি বিলুপ্তির কারণ জানতে চাইলে ওই সংগঠনের জেলা কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক খাদেমুল ইসলাম খাদেম বলেন, কি কারণে কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে সেটি আমাদের জানানো হয়নি। তবে যেহেতু কেন্দ্রের নির্দেশ, তাই আমাদের সেটি মানতেই হবে। আশাকরি খুব দ্রুত বগুড়ায় যুবদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হবে।