২০১৭ সালে রাখাইনে সেনা অভিযানের সময় শিশুসহ ১০ রোহিঙ্গা মুসলিমকে হত্যার দায়ে ১০ বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত সাত সেনা সদস্যকে সাত মাস না যেতেই গোপনে ছেড়ে দিয়েছে মিয়ানমার।
দুই কারা কর্মকর্তা, দুই সাবেক বন্দী ও মুক্তি পাওয়া এক সৈনিকের বরাত দিয়ে সোমবার রয়টার্স এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
ওই দুই বন্দী বলেন, গত নভেম্বরে এই সৈনিকদের মুক্তি দেওয়া হয়। এর অর্থ হলো- ইন ডিন গ্রামে হত্যাকাণ্ডের দায়ে ১০ বছরের কারাদণ্ডের সাত মাস ভোগ না করতে তারা ছাড়া পেলেন।
ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা উন্মোচনকারী রয়টার্সের দুই সাংবাদিকের চেয়েও কম সাজাভোগ করেছেন তারা। সাংবাদিক ওয়া লোন ও কিয়ো সো ও রাষ্ট্রের গোপন তথ্য অর্জনের দায়ে ১৬ মাস তারা কারাভোগ করেছেন। গত ৬ মে রাষ্ট্রীয় ক্ষমার আওতায় তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
সিত্তে কারাগারের চিফ ওয়ার্ডেন ওইন নেইং ও রাজধানী নেপিদোর জ্যেষ্ঠ এক কারা কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন যে, দণ্ডিত ওই জওয়ানরা কয়েক মাস ধরে কারাগারে নেই।
নাম প্রকাশ না করে নেপিদোর ওই কর্মকর্তা বলেন, সামরিক বাহিনী তাদের সাজা কমিয়ে দিয়েছে।
বিস্তারিত তথ্য দিতে অস্বীকার করে ওই দুই কর্মকর্তা বলেন, তাদের কখন মুক্তি দেওয়া হয়েছে তা তাদের জানা নেই, যেটা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশও করা হয়নি।
এ বিষয়ে সামরিক মুখপাত্র জ মিন তুন ও তুন তুন নয়ি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
দুই বছর আগের রাখাইনে সেনা অভিযানের সময় বর্বর নিপীড়নের মুখে সাত লাখ ৩০ হাজার রোহিঙ্গা মুসলিম পালিয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। ওই ঘটনায় এই সাত সৈনিক একমাত্র নিরাপত্তা কর্মকর্তা যাদেরকে সাজা দেওয়া হয়েছে বলে সামরিক বাহিনী জানিয়েছে।
ওই সেনা অভিযানকে ‘গণহত্যা’ আখ্যা দিয়ে জাতিসংঘের তদন্তকারীরা বলছেন, ওই ঘটনায় গণহত্যা, দল বেঁধে ধর্ষণ ও ব্যাপক অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। তবে মিয়ানমার এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে। পাশাপাশি অপরাধ করলে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরাও ছাড় পায়না তা প্রমাণ করতে এই সাত সেনার ঘটনা সামনে হাজির করতো।