মির্জাপুরে কিশোরের চোখ নষ্ট করার ঘটনায় আটক ২

ডেস্ক রিপোর্ট

কিশোর মিলন হোসেন (ছবি সংগৃহীত)

মজুরি চাওয়ায় টেস্টারের আঘাতে কিশোর মিলন হোসেন ওরফে বিল্লালের (১৬) দুই চোখ নষ্ট করার ঘটনায় দুজনকে আটক করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার দুপুরের দিকে মির্জাপুরের দেওহাটা পুলিশ মিলনের চাচাতো ভাই মামুন ও তার সহকারী আলামিনকে আটক করে।

universel cardiac hospital

এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন মির্জাপুরের দেওহাটা পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক রফিকুল ইসলাম। তিনি জানান, মামুন ও আলামিন এখন পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন। তবে কোথা থেকে তাদের আটক করা হয়েছে সে সম্পর্কে কোনো তথ্য দেননি তিনি।

মিলন টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার গোড়াই ইউনিয়নের রাজাবাড়ি বানিয়াচালা গ্রামের গিয়াস উদ্দিন ও জাহানারা বেগম দম্পতির ছেলে। গত ১২ এপ্রিল মিলনের চোখ নষ্ট করে দেওয়ার ঘটনা ঘটে।

মিলনের বাবা গিয়াস কারখানাশ্রমিক। একমাত্র ছেলে মিলন চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ে পড়াশোনা ছেড়ে দেয়। তার ছোট চাচা মজিবর রহমানের ছেলে মামুন (২৫) ডিশ সংযোগের কাজ করেন। তার কাজে সহযোগিতা করত মিলন। তবে কাজের জন্য তাকে কোনো মজুরি দেওয়া হতো না। ঘটনার দিন গত ১২ এপ্রিল বিকেল পাঁচটার দিকে মামুন ফোন করে কাজের জন্য মিলনকে ডেকে নিয়ে যান।

পরে মামুন ফোন করেন মিলনের বাবা মজিবর রহমানকে। বলেন, মিলন কাজ করার সময় ভবনের ছাদ থেকে পড়ে আহত হয়েছে। তাকে মির্জাপুরের কুমুদিনী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মিলনের পরিবারের সদস্যরা ছুটে যান ওই হাসপাতালে। গিয়ে দেখেন, তার অবস্থা খুবই খারাপ। পুরোপুরি অচেতন অবস্থায় আছে। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য মিলনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান তারা।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ফরিদুল হাসান জানান, মিলনের চোখ ঠিক করতে তারা সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়েছেন।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মিলন কথা বলতে পারছিল না। সেখানে ১৯ দিন চিকিৎসার পর ১ মে মিলনের জ্ঞান ফেরে। এরপরই জানা যায় নেপথ্যের ঘটনা—মিলন আসলে পড়ে আহত হয়নি, তাকে পিটিয়ে আহত করা হয়েছে।

মিলন জানায়, ঘটনার দিন তাদের সঙ্গে ছিলেন পাশের বাড়ির আলামিনও (১৯)। তিনজন মিলে পাশের গোড়াই শিল্পাঞ্চলের নিউটেক্স গ্রুপ কারখানাসংলগ্ন আনিস মুন্সির বাসায় ডিশ সংযোগের কাজ করতে যান। একপর্যায়ে মামুনের কাছে কাজের মজুরি দাবি করেন মিলন। এতে ক্ষিপ্ত হন তিনি। একপর্যায়ে পাশের একটি তিনতলা ভবনের ছাদে যান তারা। সেখানে মামুন ও মিলনের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। তখন বিদ্যুতের কাজে ব্যবহৃত টেস্টার দিয়ে মিলনের ডান চোখে সজোরে আঘাত করেন মামুন। আঘাতের প্রচণ্ডতায় নিস্তেজ হয়ে পড়ে মিলন। পরে তার বাঁ চোখেও আঘাত করা হয়।

এ ঘটনায় মিলনের মা জাহানারা বেগম বাদী হয়ে ৯ মে টাঙ্গাইলের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে একটি মামলা করেন। এতে আসামি করা হয় মামুন, আলামিন ও ডিশ ব্যবসায়ী কবির হোসেনকে।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে