সরকারি একটি জরিপে দেখা গেছে দেশের ৯২ দশমিক ৪ শতাংশ মানুষ জীবনে কখনো মদ্যপান করেননি। এই জরিপ অনুযায়ী ৮২ দশমিক ৯ শতাংশ পুরুষ ও ৯৯ দশমিক ৬ শতাংশ নারী জীবনে কখনো মদ পান করেননি।
‘বাংলাদেশে অসংক্রামক রোগের ঝুঁকিসমূহের জরিপ-২০১৮’ তে এই তথ্য উঠে এসেছে। বুধবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে অসংক্রামক রোগের ঝুঁকির ব্যাপ্তি নিরূপনে স্টেপস জরিপের ফলাফল জাতীয়ভাবে প্রকাশ করা হয়।
এ সময় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে জরিপের প্রধান গবেষক অধ্যাপক ডা. বায়জীদ খুরশীদ রিয়াজ জরিপের ফলাফল তুলে ধরেন।
৩০ দিনের মধ্যে মদ্যপান করেন ১ দশমিক ৩ শতাংশ মানুষ
খুরশীদ রিয়াজ বলেন, বর্তমানে যারা মদ্যপান করেন (৩০ দিনের মধ্যে মদ্যপান করেছেন) তাদের শতকরা হার ১ দশমিক ৩ শতাংশ। এরমধ্যে পুরুষ ২ দশমিক ৯ শতাংশ। এক্ষেত্রে কোনো নারী নেই।
গত ৩০ দিনে এক বৈঠকে ৬ প্রমাণ পাত্র বা এর বেশি মদ্যপানকে অতিরিক্ত মদ্যপান হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে জরিপে। এমন মানুষের শতকরা হার শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ। নারীরা অতিরিক্ত মদ্যপান না করলেও ১ শতাংশ পুরুষ তা করে থাকেন বলে জরিপে উঠে এসেছে।
বর্তমানে মদ্যপান করছেন এমন ব্যক্তিদের মধ্যে অতিরিক্ত মদ্যপানকারী ব্যক্তিদের হার ৩৫ দশমিক ১ শতাংশ উল্লেখ করে ডা. বায়জীদ খুরশীদ বলেন, ‘বর্তমানে মদ্যপানকারীদের মধ্যে অতিরিক্ত মদ্যপানকারীর হারটা উদ্বেগজনক হতে পারে।’
- আরও পড়ুন >> কনস্টেবল পারভেজের কৃত্রিম পা লাগবে ৪ মাস পর
স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ বিষয়ে বলেন, ‘আমরা আনন্দের সঙ্গে বলতে পারি, আমাদের দেশে মদ্যপায়ী লোকের সংখ্যা খুবই কম। জরিপে এটা বেরিয়ে এসেছে। নারীরা মদ পান করেননা বললেই চলে, ৯৯ দশমিক ৬ শতাংশ নারী মদ্যপান করেন না। ৮২ দশমিক ২ শতাংশ পুরুষরা মদ্যপান করেন না। বিশ্বজুড়ে তো এই সংখ্যা অনেক বেশি। কাজেই এই বিষয়ে আমরা সন্তুষ্ট।’
গবেষণা পদ্ধতি তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, জরিপটি ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত সময়ে বাংলাদেশের সকল বিভাগের থানাসমূহে বসবাসকারী ১৮ থেকে ৬৯ বছর বয়সী প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ ও নারীদের মধ্যে পরিচালিত হয়।
সারাদেশে ৪৯৬টি প্রাইমারি স্যাম্পিং ইউনিটের (পিএসইউ) ৯ হাজার জন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষকে জরিপে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। উত্তর দাতাদের দৈবচয়ন পদ্ধতিতে নির্বাচন করা হয়। উত্তরদাতাদের অন্তর্ভুক্ত হওয়া এবং জরিপের অংশগ্রহণ প্রত্যাখ্যান করার সম্ভাবনা ওপর ভিত্তি করে চূড়ান্তভাবে ধাপ-১ এ ৮ হাজার ১৮৫ জন, ধাপ-২ এ ৭ হাজার ২০৪ জন উত্তরদাতা অংশগ্রহণ করেন। ধাপ-৩ তে ৭ হাজার ৫৬ জনের কাছ থেকে রক্ত সংগ্রহ এবং ৭ হাজার ২৮ জনের কাছ থেকে প্রস্রাবের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। ৬ হাজার ৯০১ একজনের রক্ত ও প্রস্রাব উভয় নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পদ্ধতি ও উপাত্তের গুণগতমান এবং গবেষণা সংক্রান্ত বিষয়গুলো প্রতিটি স্তরে সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা হয়।