উচ্চ আদালতে রেকর্ডসংখ্যক মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে। আর এই রেকর্ডের অংশ হিসেবে গত পাঁচ মাসে হাইকোর্টের ১৬টি দ্বৈত বেঞ্চের বিচারপতিরা নিষ্পত্তি করেছেন অর্ধ লাখের বেশি ফৌজদারি মামলা।
সূত্র মতে, এছাড়া রিট ও দেওয়ানি অন্য বেঞ্চগুলো প্রায় কয়েক হাজার মামলা নিষ্পত্তি করেছেন। যা অতীতের যে কোনো সময়ের তুলনায় বেশি।
সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন বলছে, এই স্বল্প সময়ে যে পরিমাণ মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে তা রেকর্ডসংখ্যক। এছাড়া মামলা দায়েরের বিপরীতে এই প্রথম নিষ্পত্তির হারও বেশি। বিচার বিভাগের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা এটাকে আশার আলো হিসেবে দেখছেন।
সম্প্রতি ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেছেন, আমাদের দেশে অপরাধ করে কেউ দোষ স্বীকার করতে চায় না। সবাই নিজেকে নির্দোষ দাবি করে। যার কারণে ৯০ ভাগ মামলাই বিচারে যাচ্ছে। আর ১০ ভাগ মামলা ট্রায়ালে যাচ্ছে না। বিচারে যাওয়ার যে সংস্কৃতি এটার পরিবর্তন না হলে মামলার জট লেগেই থাকবে।
তিনি বলেন, আমরা শিক্ষিত হচ্ছি, মানসিকতার পরিবর্তন হচ্ছে, এখন যদি এই দোষ স্বীকারের সংস্কৃতি চালু হয় তাহলে মামলা জট থেকে পুরোপুরি বেরিয়ে আসা সম্ভব হবে।
দেশের অধস্তন ও উচ্চ আদালতে মামলা দায়ের ও নিষ্পত্তির হিসাব রাখে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। তারা প্রতি তিন মাস অন্তর মামলার মাসিক বিবরণী প্রকাশ করে।
ওই মাসিক বিবরণী পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০১৮ সাল শেষে হাইকোর্টে বিচারাধীন মামলা ছিল ৫ লাখ ১৬ হাজার ৬৫২টি। চলতি বছরের পহেলা জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত মামলা দায়ের হয়েছে ২৯ হাজার ৭৭৭টি। এই তিন মাসে নিষ্পত্তি হয়েছে ৩৯ হাজার ৮১১টি মামলা।
এর আগে গত অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত হাইকোর্টে মামলা দায়ের হয়েছে ২৫ হাজার ২৬৩টি। এ সময়ে নিষ্পত্তি হয়েছে ১৬ হাজার ৩০৬টি মামলা। মামলা দায়েরের বিপরীতে নিষ্পত্তির হার না বাড়ায় তা ভাবিয়ে তুলছিল বিচার প্রশাসনকে।এ নিয়ে বৈঠকও হয়। পরে প্রধান বিচারপতি মামলা জট কমাতে পুরাতন মামলা নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেন।
এরই ধারাবাহিকতায় হাইকোর্টের ১৬টি দ্বৈত বেঞ্চকে এক লাখ এক হাজার ১৯৬টি মামলা নিষ্পত্তির জন্য এসব বেঞ্চে পাঠান। পরে এসব বেঞ্চের বিচারপতিগণ ৫৭ হাজার ৬০৯টি মামলা নিষ্পত্তি করেছেন। বর্তমানে হাইকোর্টে বিচারাধীন মামলার সংখ্যা ৫ লাখ ৬ হাজার ৬৬৪টি। এর আগে ২০১৫ সালে ৩৭ হাজার ৭৫৩টি, ২০১৬ সালে ৩৯ হাজার ৮৭৮টি, ২০১৭ সালে ৩৫ হাজার ৪৯৬টি মামলা নিষ্পত্তি হয় হাইকোর্টে।
- সরকার খালেদা জিয়াকে রাজনৈতিক কারণে বন্দি করে রেখেছে : মওদুদ
- বিশ্বকাপ : লজ্জার হার দিয়ে পাকিস্তানের মিশন শুরু
আইন বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এভাবে উচ্চ আদালতে মামলা নিষ্পত্তি হতে থাকলে বিচার বিভাগের প্রতি জনগণের আস্থা বাড়বে।
এ প্রসঙ্গে হাইকোর্টের স্পেশাল অফিসার ও সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র ব্যারিস্টার মো. সাইফুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, প্রধান বিচারপতি মহোদয় দায়িত্ব নেওয়ার পর কিছু পদ্ধতি অনুসরণ করে মামলা জট নিরসনে পদক্ষেপ নিয়েছেন। এর ফলে দ্রুত মামলা জট হ্রাস পাচ্ছে।