বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) পেট্রোল বোমা উদ্ধারের ঘটনার দুই দিন পর সেখানে চিকিৎসাধীন কারাবন্দী খালেদা জিয়ার নিরাপত্তার বিষয়ে আশ্বস্ত করেছেন ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
শনিবার রাজধানীর ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী সামনে রেখে মাসব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে একথা বলেন তিনি।
কাদের বলেন, খালেদা জিয়ার নিরাপত্তার ব্যাপারে সরকার যথেষ্ট সচেতন। খালেদা জিয়াকে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা দিয়ে সেখানে রাখা হয়েছে।
দুর্নীতির দুই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা ১ এপ্রিল থেকে বিএসএমএমইউয়ে চিকিৎসাধীন আছেন। গত বৃহস্পতিবার ভোরে এর প্রশাসনিক ভবনের তৃতীয় তলায় রেজিস্ট্রারের কক্ষের সামনে থেকে একটি পেট্রোল বোমা উদ্ধারের কথা জানায় শাহবাগ থানা পুলিশ। রাতেই বিএনপি জরুরি সংবাদ সম্মেলন দলীয় প্রধানের নিরাপত্তা জোরদারের দাবি জানায়।
এ বিষয়ে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী বলেন, এটা একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা হতেই পারে। আজ টেরোরিজম একটা গ্লোবাল সমস্যা। বাংলাদেশ কোনো বিচ্ছিন্ন দেশ নয়। আমারও কোনো বিচ্ছিন্ন দেশের বাসিন্দাও নই। এসব ঘটনা হতে পারে। তবে উদ্বিগ্ন হওয়ার মত কোনো ঘটনা ঘটেনি। আমরা সতর্ক আছি, সংকিত নই।
সরকার আশ্বস্ত করলেও ঘটনার পেছনের ‘সরকারের উদাসীনতা’ বা ‘নীল নকশা’ কাজ করছে কিনা তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে বিএনপি প্রশ্ন তুলেছে, এতো নিরাপত্তা ভেদ করে সেখানে বোমা গেল কীভাবে।
এ বিষয়ে ইঙ্গিত করে কাদের বলেন, এসব বিষোদ্গার করে বিএনপি তাদের নেতা-কর্মীদের সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করছে। তাই তারা এসব কথা বলছে, তাদের আর কোনো ইস্যু নেই।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিকদের জানান, এবার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে প্রতিটি জেলার আওয়ামী লীগের দু’জন প্রবীণ নেতাকে সংবর্ধনা দেওয়া হবে। এজন্য জেলা শাখাকে দু’জন করে প্রবীণ নেতার নাম পাঠাতে বলা হয়েছে।
আওয়ামী লীগের ৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে মাসব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেন ওবায়দুল কাদের।
তিনি জানান, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিন ২৩ জুন সকালে বঙ্গবন্ধু ভবন ও বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে কেন্দ্রীয় কার্যালয় জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে কর্মসূচি শুরু হবে। পরে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ধানমণ্ডিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানাবেন দলের কেন্দ্রীয় নেতারা।
২৪ জুন বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনে কেন্দ্রে আলোচনা সভা ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠান হবে। ২৫ জুন বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে। ঢাকায় তিন দিনব্যাপী আর সারাদেশে মাসব্যাপী কর্মসূচি চলবে।
২৩ জুন থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত সারা দেশে জেলা-উপজেলায় কর্মসূচি পালন করা হবে। এর মধ্যে রয়েছে- সভা-সমাবেশ, সেমিনার ও র্যালি, আলোচনা সভা, প্রচার, পুস্তিকা প্রকাশ করা, রচনা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা।
ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মাতিয়া চৌধুরী, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, একে এম এনামুল হক শামীম, মুক্তিযুদ্ধ সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, উপ-দফতর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রী বিশেষ সহকারী বিপ্লব বড়ুয়া, কার্যনির্বাহী সদস্য ও শিল্পমন্ত্রী নরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, মারুফা আক্তার পপি ও এস এম কামাল উপস্থিত ছিলেন।