কাদের সিদ্দিকীর আল্টিমেটামের সময় বাড়লো

বিশেষ প্রতিনিধি

গতকাল শনিবার শেষ হয়েছে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর ‘অসঙ্গতি’ দূর করার জন্য জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতৃবৃন্দকে বেঁধে দেওয়া আল্টিমেটামের সময়সীমা।

গত ৯ মে তিনি বলেছিলেন, ঐক্যফ্রন্টের মধ্যে অনেক অসঙ্গতি রয়েছে। এসব অসঙ্গতি ও কিছু প্রশ্নের উত্তর আগামী এক মাসের মধ্যে সুরাহা না হলে ৮ জুন ঐক্যফ্রন্ট থেকে বেরিয়ে যাবে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ।

universel cardiac hospital

কিন্তু গতকাল (৮ জুন) ফ্রন্ট ছাড়েননি কাদের সিদ্দিকী। এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে তিনি আরও দুই দিন সময় নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।

আগামী ১০ জুনের পর ঐক্যফ্রন্টের এক জরুরি বৈঠক শেষে জোট ছাড়া বা না ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেবেন। এমনটাই জানালেন তিনি।

এ বিষয়ে শনিবার দুপুরে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেন, জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ৭ জন সংসদ সদস্যের শপথ নেয়ার সঠিক ব্যাখ্যা জানতে চেয়েছিলাম। এরই মধ্যে ড. কামাল হোসেন আমাদের সঙ্গে মিটিং করে আগামী ১০ জুন আ স ম আবদুর রবের বাসায় ফ্রন্টের সবাইকে ডেকেছেন ।

তিনি আরও বলেন, ওই বৈঠক থেকে কী ব্যাখ্যা আসে সেটা আমরা দেখব। তারপর আমাদের সিদ্ধান্ত নিব ঐক্যফ্রন্ট থেকে বেরিয়ে যাব কি যাব না।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, কাদের সিদ্দিকীর প্রশ্নের জবাব দিতে আগামী ১০ জুন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরিক দলগুলোকে নিয়ে বৈঠকে বসবেন ড. কামাল হোসেন। সেখানে ড. কামাল হোসেন ও মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গণফোরামের দুই জন এবং বিএনপির পাঁচ জন প্রার্থীর শপথ নেয়ার বিষয়ে ব্যাখ্যা ও যৌক্তিকতা তুলে ধরবেন।

সুত্র মতে, ওই বৈঠকের পর আগামী ১১ অথবা ১২ জুন আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে দলীয় সিদ্ধান্ত জানাবেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি।

উল্লেখ্য, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সংসদ সদস্যের শপথ নেয়াসহ নানা অসঙ্গতির বিষয়ে ব্যাখ্যা চেয়ে ফ্রন্টের জ্যেষ্ঠ নেতাদের অবহিত করেছিলেন কাদের সিদ্দিকী।

সে সময় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ছাড়ার আলটিমেটাম দেয়ার আগে তিনি জোটের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন, আ স ম আবদুর রব, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মাহমুদুর রহমান মান্না, মোস্তফা মোহসীন মন্টুর সঙ্গে এসব অসঙ্গতির বিষয়ে কথা বলেছিলেন।

গত ৯ মে ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেনের কিছু সিদ্ধান্তে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে উল্লেখ করে কাদের সিদ্দিকী বলেছিলেন, ৩০ ডিসেম্বর বাংলাদেশে নির্বাচনের নামে জঘন্য নাটক হয়েছে, যা শুধু বাংলাদেশে নয়, পৃথিবীর কোনো দেশেই এমন নাটকের নজির নেই। কিন্তু ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করার পরও গণফোরামের সুলতান মনসুর শপথ নিলে তাকে বহিষ্কার করা হয়। মোকাব্বির খান শপথ নিলে ড. কামাল হোসেন তাকে ‘গেট আউট’ বলেন। পরে দেখা যায় গণফোরামের বিশেষ কাউন্সিলে মোকাব্বির খান উপস্থিত। এসব নিয়ে মানুষের মধ্য বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। মানুষ এসব বিষয়ে জানতে চাইলে আমরা জবাব দিতে পারি না।

ওই দিনই রাজধানীর মতিঝিলে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে অসঙ্গতি নিরসন না হলে ৮ জুন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেবে বলে ঘোষণা দেন কাদের সিদ্দিকী।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে