হবিগঞ্জ সদর উপজেলার পাইকপাড়া এলাকায় সাদ পন্থীদের ইজতেমাকে কেন্দ্র করে তাবলীগ জামাতের দুই গ্রুপের মধ্যে চরম উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। পরে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে ইজতেমা বন্ধ ঘোষণা করা হয়। অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে ইজমেতাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, হবিগঞ্জে মাওলানা সাদ পন্থীদের অনুসারীরা হবিগঞ্জ সদর উপজেলার পাইকপাড়ায় তাদের নিজস্ব মার্কাজে আজ বৃহস্পতিবার থেকে থেকে শনিবার পর্যন্ত ইজতেমার আয়োজন করে। এ ব্যাপারে তারা প্যান্ডেল নির্মাণ শুরু করলে ছাদ পন্থীদের বিরোধী তাবলিগ জামাতের অপর একটি গ্রুপ আন্দোলন শুরু করে। গত মঙ্গলবার তারা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। পরে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন ইজতেমা বন্ধের আশ্বাস প্রদান করলে তারা হবিগঞ্জ মার্কাজে তিনদিন যাবৎ অবস্থান নেয়।
বৃহস্পতিবার পাইকপাড়ায় সাদ পন্থীদের ইজতেমা আয়োজনের খবর জানতে পেরে হবিগঞ্জ মার্কাজে থাকা বিরোধী গ্রুপ সেখানে গিয়ে অবস্থানের প্রস্তুতি নিলে চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে সাদ বিরোধী গ্রুপের হবিগঞ্জ বেফাক সভাপতি মাওলানা আব্দুল্লাহ আকিলপুরীসহ ৪ জনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। এ সময় হাজার হাজার আলেম-ওলামা মাঠে নামার প্রস্তুতি নিলে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তারা মাঠে নেমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। তারা পাইকপাড়ায় গিয়ে আয়োজকদেরকে ইজতেমার প্যান্ডেল এবং মাইক খুলে নেয়ার নির্দেশ দেন। খোলা মাঠে ইজতেমার কর্মসূচি পালন থেকে বিরাত থেকে মসজিদের ভিতরে স্থানীয় লোকজনকে নিয়ে গাস্ত করার অনুমতি দেওয়া হয়। পাশাপাশি প্রশাসনের পক্ষ থেকে আন্দোলনরতদের ইজতেমা বন্ধের কথা জানালে তারা হবিগঞ্জ মার্কাজে ফিরে যায়।
এবিষয়ে রোকন উদ্দিন নামের সাদ পন্থীদের এক নেতা জানান, হবিগঞ্জ জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজনকে নিয়ে তারা কর্মসূচি পালন করছেন। বৃহস্পতিবার বাদ আসর ভারতের নিজাম উদ্দিন মার্কাজ থেকে আগত মাওলানা ছানাউল্লাহ বয়ান করবেন এবং বাদ মাগরিব কাকড়াইল মসজিদ থেকে আগত মাওলানা মোহাম্মদ উল্ল্যা বয়ান করবেন। শুক্রবার বিশাল জুম্মার জামাতে হবিগঞ্জের বিভিন্ন জনপ্রতিনিধিসহ নানা এলাকার লোকজন উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত হবে।
আন্দোলনরতদের নেতা মাওলানা আব্দুল্লাহ আকিলপুরী জানান, আমাদের কাউকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেনি। তবে আন্দোলনের ফলে প্রশাসন ইজতেমা বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে। তারা শুধু মসজিদে বৃহস্পতিবার নিয়মতান্ত্রিক শবগুজারীর আমল করতে পারবেন।
হবিগঞ্জের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আনিসুল হক জানান, তিনি উত্তেজনার খবর পেয়ে পাইকপাড়ায় গিয়ে প্যান্ডেল এবং মাইক উচ্ছেদ করতে চাইলে আয়োজকরা নিজেরাই তা সরিয়ে ফেলেন। ইজতেমা বন্ধ করে শুধুমাত্র স্থানীয় লোকজনকে নিয়ে নিয়মতান্ত্রিক কর্মসূচি পালনের অনুমতি প্রদান করা হয়েছে।
হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহিদুর রহমান জানান, পাইকপাড়ায় আয়োজকরা প্যান্ডেল ভেঙে ফেলেছে। তারা বলেছে- কোনো বহিরাগত লোক সেখানে আসবে না। নিয়মতান্ত্রিক কর্মসূচি তারা পালণ করবে। সেখানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তবে কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।