রশিদ খান বাংলাদেশকে ভালোবাসা জানালেন!

ক্রীড়া ডেস্ক

রশিদ খান
ছোট দেশের বড় তারকা রশিদ খান। ছবি: এএফপি

সাউদাম্পটনের স্টেডিয়াম-লাগোয়া হোটেল হিলটনে আছে আফগানিস্তান। আফগান ক্রিকেটারদের রুম থেকেই দেখা যায় মাঠ, পিচ, গ্যালারি—স্টেডিয়ামের প্রায় সবকিছুই। কাল আফগানিস্তান কোনো অনুশীলন করেনি। আফগান ক্রিকেটাররা দিনটা কাটিয়েছেন ছুটির মেজাজে।

বিকেলে প্রেসবক্স থেকে বেরোনোর সময় হঠাৎ ‘একটু হেল্প করবেন?’ বলে দৃষ্টি আকর্ষণ করলেন এক ভদ্রলোক। তিনি কোনো বিপদে-টিপদে পড়েননি। ‘সহায়তা’ বলতে তাঁকে একটা ছবি তুলে দিতে হবে। ভদ্রলোক একজন ট্যাক্সিচালক। তাঁর গাড়িতে করে রশিদ খান যেন কোথা থেকে হোটেলে ফিরলেন। প্রিয় তারকার কাছে কোনো ভাড়া নিলেন না, তাঁর চাওয়া শুধু একটা ছবি। রশিদ ট্যাক্সিচালকের আবদার মেটালেন হাসিমুখে। আজ বাংলাদেশের বিপক্ষে তাঁর এ হাসি থাকবে তো?

বাংলাদেশের দর্শকেরা অবশ্য মনেপ্রাণে চাইছে রশিদের হাসিটা কেড়ে নিন সাকিব-তামিম-মুশফিকরা। নানা কারণে আফগানিস্তানের এই লেগ স্পিনার বাংলাদেশে খুবটা একটা নন্দিত নন। ওল্ড ট্রাফোর্ডে ইংল্যান্ডের কাছে যেদিন বেধড়ক পিটুনি খেলেন, বাংলাদেশের দর্শকেরা কতভাবে যে তাঁকে ব্যঙ্গ করল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে! ‘এই ম্যাচে মাশরাফিরা আপনার হাসি কেড়ে নিতে চাইবেন, রশিদ’—কথাটা শুনে মুচকি হাসলেন এবং যা বললেন, তাতে বেশ চমকেই যেতে হলো! পরিষ্কার বাংলায় বললেন, ‘ভালোবাসি বাংলাদেশ!’ কিন্তু তাঁর এই ভালোবাসা কি আর বাংলাদেশের বিপক্ষে থাকবে? এবার রশিদের উত্তর, ‘রোজ রোজ ভালোবাসা!’

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) নিয়মিত খেলেন। বাংলাদেশের অনেক ক্রিকেটার, কোচ, সংগঠকের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক খুব ভালো। দু-একটা বাংলা ভাষা হয়তো তাঁদের কাছ থেকেই শেখা। আগামী বিপিএলেও তিনি খেলবেন, জানিয়ে রাখলেন। অবশ্য বিপিএলের আগেই আফগানিস্তানের হয়ে আগস্ট-সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ সফরে আসার কথা আছে তাঁর।

আলাপচারিতার মধ্যেই অটোগ্রাফ সংগ্রহের উদ্দেশ্যে এক বাংলাদেশি সাংবাদিক তাঁর হাতে একটা বল দিলেন। কিন্তু কলমের কালি ঠিক ঠিক বের হচ্ছিল না। আরেকটি কলমের খোঁজ যখন করা হচ্ছে, রশিদ কয়েকবার গ্রিপ ধরলেন, যেন হোটেল লবিতেই বোলিং শুরু করে দেবেন! ‘ভারতের বিপক্ষে ম্যাচটা আমাদের জেতা ছিল’—পরশু ভারতকে এত কাছে পেয়ে হারাতে না পারার আফসোস যাচ্ছে না রশিদের। সেদিন অবশ্য উইকেট থেকে সহায়তা পেয়েছিলেন। শোনা যাচ্ছে, আজও একই উইকেটে খেলা হবে। পার্থক্যটা হচ্ছে, সেদিন ছিল রৌদ্রোজ্জ্বল, কাল থেকে আবহাওয়ার চেহারা গেছে বদলে। সূর্য চলে গেছে মেঘের আড়ালে। মেট অফিসের পূর্বাভাস বলছে, আজও সেটি বজায় থাকার সম্ভাবনা।

আবহাওয়া এমন থাকলে কি স্পিন-জাদু দেখা যাবে? ‘ডব্লিউ-ডব্লিউ প্রবাদ শোনেননি! ইংলিশ ওয়েদারের কোনো নিশ্চয়তা আছে? স্বাভাবিক থাকুন, উপভোগ করুন, আরাম করে একটা ঘুম দিন, এটাই আমার ভাবনা’—বোঝা গেল রশিদ আবহাওয়া নিয়ে মোটেও চিন্তিত নন। তবে সাকিব আল হাসানকে নিয়ে চিন্তা থাকার কথা। বিশ্বকাপে দুর্দান্ত ছন্দে আছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। আফগানদের জন্যও তিনি নিশ্চয়ই বড় হুমকি। আচ্ছা, কে বেশি ভয়ংকর—সাকিব আল হাসান, না রশিদ খান? গুগলিটা দারুণভাবে সামলালেন আফগান লেগ স্পিনার, ‘আমরা দুজন দুই ধরনের ক্রিকেটার। দুজনের খেলার ধরনও তাই দুই রকম।’

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে