আয়াতুল্লাহ খামেনির কার্যালয়ের ওপর ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

পূর্ব ঘোষণার ধারাবাহিকতায় ইরানের ওপর আবারও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনির কার্যালয়ও এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে।

নতুন নিষেধাজ্ঞাকে ‘কঠোর’ আখ্যায়িত করে ট্রাম্প বলেছেন, ওয়াশিংটন তেহরানের ওপর চাপ প্রয়োগ অব্যাহত রাখবে। মার্কিন ড্রোন ভূপাতিত করাসহ ‘আরও কিছু কারণ’র কথা বলে এই নতুন পদক্ষেপ নিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। তবে ইরান আলোচনায় রাজি থাকলে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে তারা।

সম্প্রতি ওয়াশিংটন-তেহরান ধারাবাহিক উত্তেজনার মধ্য দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে শুরু হয়েছে অস্থিরতা। কয়েকদিন আগেই সেখানে আরও ১ হাজার মার্কিন সেনা পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরইমধ্যে ক’দিন আগে ‘আরকিউ-৪ গ্লোবাল হক’ নামের একটি মার্কিন ড্রোন ভূপাতিত করে ইরান। ঘটনার প্রেক্ষিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানে সামরিক অভিযানের নির্দেশ দিয়েও তা প্রত্যাহার করে নেন। জানান, যুদ্ধবিরোধী মনোভাব থেকে তিনি আক্রমণ করতে চাননি।

তবে ২২ জুন শনিবার ট্রাম্প টুইটারে জানিয়ে রেখেছিলেন, নতুন করে ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে যাচ্ছে তার প্রশাসন। সেই ঘোষণার ধারাবাহিকতায় সোমবার থেকে নতুন করে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়লো ইরানের সর্বোচ্চ নেতার দফতর ও সে দেশের সেনাবাহিনী।

ট্রাম্প ইরানবিরোধী নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করার কিছুক্ষণ পর মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্টিভেন মানুচিন এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ওয়াশিংটন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনির দফতরের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। সেই সঙ্গে ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী বা আইআরজিসি’র আট শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাকেও নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়েছে বলে জানান তিনি। ওই আট কর্মকর্তার মধ্যে রয়েছেন আইআরজিসি’র নৌবাহিনীর কমান্ডার রিয়ার অ্যাডমিরাল আলীরেজা তাংসিরি, আইআরজিসি’র অ্যারোস্পেস ডিভিশনের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমির আলী হাজিযাদে এবং আইআরজিসি’র স্থলবাহিনীর কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মাদ পাকপুর।

মার্কিন অর্থমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, আগামী সপ্তাহে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফকেও নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনবে যুক্তরাষ্ট্র। মানুচিন দাবি করেন, নতুন করে এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার ফলে ইরানের শত শত কোটি ডলারের সম্পদ জব্দ করা হবে। একইসঙ্গে তিনি জানান, ইরান আমেরিকার সঙ্গে আলোচনায় বসলে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হবে।

সম্প্রতি ইরান ঘোষণা দেয় পরমাণু পরীক্ষার ক্ষেত্রে তারা আন্তর্জাতিকভাবে সম্মত মাত্রার চেয়ে বেশি কাজ করবে। ২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের দেশগুলোর সঙ্গে পরমাণু নিয়ন্ত্রণবিষয়ক একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে ইরান। বিনিময়ে দেশটির ওপর থেকে অর্থনৈতিক অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। কিন্তু গত বছর ইউরোপীয় মিত্রদের বাধা সত্ত্বেও ওই চুক্তি থেকে বেরিয়ে যান যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। পরে ইরানের ওপর তেল রফতানিসহ বিভিন্ন বিষয়ে একের পর এক অবরোধ আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। বর্তমানে এ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে