বরগুনায় প্রকাশ্যে রিফাত শরীফকে তার স্ত্রীর সামনে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িতরা যাতে দেশ ছেড়ে পালাতে না পারে সেজন্য তাদের বিরুদ্ধে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে।
শুক্রবার পুলিশ সদর দফতরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) সোহেল রানা এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, আসামিদের দেশত্যাগ ঠেকাতে সব বিমানবন্দর, স্থলবন্দর এবং নৌবন্দরে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। এ ঘটনাটিকে সর্বোচ্চ গুরুত্বের সাথে নিয়েছে পুলিশ।
সোহেল রানা আরও বলেন, এ পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারে সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
গত বুধবার সকালে বরগুনা শহরে রিফাত শরীফকে (২২) প্রকাশ্যে তার স্ত্রীর সামনে কুপিয়ে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। পাশে থাকা অনেকে এ তাণ্ডব দেখলেও কেউ সন্ত্রাসীদের ঠেকানোর চেষ্টা করেনি।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, দুই মাস আগে রিফাত শরীফের সঙ্গে আয়শা আক্তার মিন্নি নামের ওই তরুণীর বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই পৌরসভার ক্রোক এলাকার নয়ন বন্ড নামে এক যুবক তাকে উত্ত্যক্ত করতে শুরু করে। ওই যুবক নিজেকে তরুণীর সাবেক স্বামী এবং প্রেমিক হিসেবে পরিচয় দিতে থাকে। এ নিয়ে রিফাতের সঙ্গে নয়নের বচসা হয়।
এর জের ধরে বুধবার বরগুনা শহরে দেশি অস্ত্রসহ সদলবলে ওতপেতে থাকে নয়ন। রিফাত ও তার স্ত্রী মিন্নি সকালে ওই পথ দিয়ে যাওয়ার সময় তারা রামদা নিয়ে রিফাতের ওপর চড়াও হয়। এ সময় মিন্নি তাদের বাধা দিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেন। তার বাধা সত্ত্বেও সন্ত্রাসীরা রিফাতের সারা শরীরে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে।
এ হামলার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর নিন্দার ঝড় ওঠে। ভিডিওতে দেখা যায়, হাতে থাকা একটি প্লাস্টিকের ব্যাগ দিয়ে কোনো রকমে আত্মরক্ষার চেষ্টা চালান রিফাত। কিন্তু তা যথেষ্ট ছিল না। দুই যুবক রামদা দিয়ে তার সারাশরীরে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। মিন্নি এ সময় একবার নয়নকে, আরেকবার নয়নের সহযোগী রিফাত ফরাজীকে আটকানোর চেষ্টা করেন। তিনি ‘বাঁচাও’, ‘বাঁচাও’, ‘না’ ‘না’ বলে চিৎকার করতে থাকেন। কিন্তু ততক্ষণে রামদার কোপে গুরুতর জখম হন রিফাত।
নিহত রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ জানান, দুই মাস আগে রিফাত বরগুনার পুলিশ লাইন এলাকার কিশোরের মেয়ে আয়শা আক্তার মিন্নিকে বিয়ে করে। এর পর থেকেই নয়ন মিন্নিকে উত্ত্যক্ত ও ফেসবুকে আপত্তিকর ছবি পোস্ট করে। এ নিয়ে রিফাতের সঙ্গে নয়নের বিরোধ সৃষ্টি হয়। এর জেরে ছেলেকে কুপিয়ে হত্যা করেছে নয়ন ও তার লোকজন।