খাদ্যপণ্য নিয়ে ঢাবি শিক্ষকদের রিপোর্টের দায় নিচ্ছে না ফার্মেসি বিভাগ

ডেস্ক রিপোর্ট

ঢাবি শিক্ষকদের রিপোর্টের দায় নিচ্ছে না ফার্মেসি বিভাগ
ফাইল ছবি

সম্প্রতি বাজারে প্রচলিত বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ৭টি প্যাকেটজাত (পাস্তুরিত) দুধসহ ৭২টি খাদ্যপণ্য নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফার্মেসি বিভাগের কয়েকজন শিক্ষক যে গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন, খোদ ফার্মেসি বিভাগই ওই প্রতিবেদনের দায় নিচ্ছে না।

এর আগে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্র‌তিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্যও গতকাল বলেছেন, ঢাবি শিক্ষকদের ওই রিপোর্ট মিথ্যা।

ওই প্রতিবেদনের বিষয়ে আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছার স্বাক্ষরিত প্রতিবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত ফলাফলের প্রতিবেদন ওই গবেষকের একান্ত নিজস্ব গবেষণালব্ধ ফল হওয়ায় উপরোক্ত গবেষণা ফলাফলের সাথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফার্মেসি বিভাগের কোনো সংশ্লিষ্টতা না থাকায় ফার্মেসি বিভাগ কোনো প্রকার দায়ভার গ্রহণ করছে না।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, বিষয়টি অত্যন্ত জাতীয় স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ও জনস্বাস্থ্যবিষয়ক বিধায় সরকার ও জনসাধারণের পক্ষ থেকে এতদসংক্রান্ত বিষয়ে ফার্মেসি বিভাগের কাছে যেকোনো ধরনের সহযোগিতা চাওয়া হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তথা ফার্মেসি বিভাগ জাতীয় স্বার্থে সার্বিক সহায়তা প্রদানে বদ্ধ পরিকর।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের ওই প্রতিবেদনে, দুধ ছাড়াও বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ঘি, ফলের জুস, মরিচ ও হলুদের গুঁড়া, পাম অয়েল, সরিষার তেল ও সয়াবিন তেলের নমুনা পরীক্ষা করার কথা বলা হয়েছে।

এ গবেষণায় বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সাতটি প্যাকেটজাত (পাস্তুরিত) দুধের নমুনা পরীক্ষা করে সেগুলোতে মানুষের চিকিৎসায় ব্যবহৃত শক্তিশালী অ্যান্টিবায়োটিকের উপস্থিতি পাওয়ার কথা বলা হলেও বাজারে থাকা ১৪টি ব্র্যান্ডের ১৮টি পাস্তুরিত/ইউএইচটি দুধ পরীক্ষা করে আশঙ্কাজনক কিছু পাওয়া যায়নি বলে ২৫ জুন হাইকোর্টে প্রতিবেদন জমা দেয় বিএসটিআই কর্তৃপক্ষ।

সংগৃহিত

শিক্ষকদের ওই প্রতিবেদনের বিষয়ে জানতে চাইলে ফার্মেসি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক সীতেশ চন্দ্র বাছার বলেন, আমরা সচরাচর যেসব গবেষণা করে থাকি, তার রিপোর্ট কখনও সংবাদ সম্মেলন করে গণমাধ্যমের কাছে প্রকাশ করি না। এটা আমাদের কাজ না। আমরা সেগুলো বিভিন্ন জার্নালে প্রকাশ করি।

তিনি বলেন, এরপর সরকার যদি মনে করে এসব তাদের দরকার, তাহলে তারা আমাদের কাছে আসে। তখন আমরা তাদের কাছে ডাটাগুলো সরবরাহ করি। আমরা কখনও সেগুলো তাদের কাছে গিয়ে দিই না। কিংবা সংবাদ সম্মেলন করে গণমাধ্যমকেও জানাই না। যারা এগুলো করে আমার মনে হয় কোনো একটি বিশাল উদ্দেশ্য থাকে এসবের পেছনে।

ঢাবি শিক্ষকদের ওই প্রতিবেদনের বিষয়ে বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট সম্পর্কে সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী বলেন, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী দুধের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। আপনারা জানেন গত পরশু বাংলাদেশের কিছু অসৎ ব্যবসায়ী ঢাকা ইউনিভার্সিটির একটি টেস্ট রিপোর্ট দিয়ে বলছে, মিল্কভিটায় আর্সেনিক আছে। মিল্কভিটা দুধের মধ্যে না-কি ফরমালিন আছে। এটি একটি সর্বস্ব মিথ্যা কথা।

এদিকে গবেষক দলের প্রধান ওষুধ প্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক আ ব ম ফারুকের দাবি- ল্যাব রিপোর্ট অন্যের কাছে সরবরাহ করতে আইনি জটিলতা রয়েছে। তিনি তা করতে পারেন না।

বিভাগের চেয়ারম্যানের প্রতিবাদের বিষয়ে জানতে চাইলে গণমাধ্যমকে তিনি সরাসরি তার কোনো জবাব না দিয়ে বলেন, আমরা তো কাউকে দায় নিতে বলিনি। উনি যা বলছেন সেটিও ঠিক, আমরা যা বলেছি সেটিও সঠিক… পুরো বিষয়টাকে ইতিবাচকভাবে নিতে হবে। আমাদের প্রতিবেদনে যে অ্যান্টিবায়োটিক-ডিটারজেন্ট পাওয়ার কথা বলা হয়েছে এ বিষয়ে কোম্পানিগুলো একটু সতর্ক হলেই ঠিক হয়ে যাবে।

একইসঙ্গে দুধের প্যাকেটজাত কোনো নমুনায় ফরমালিনের উপস্থিতি না পাওয়ার বিষয়টিও বেশ ইতিবাচক বলে মন্তব্য করেন তিনি।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে