বিশ্বকাপের প্রথমপর্ব থেকে বিদায় নিশ্চিত হয়ে গেছে আগেই। তারপরও একটি ‘বড় মাছ’ শিকারের আশায় সর্বস্ব দিয়ে লড়াই করছে আফগানিস্তান। তাই হাড্ডাহাড্ডি লড়াই শেষে আফগানিস্তানের বিপক্ষে জিতল পাকিস্তান। সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়ন পাকিস্তানের কাছে ৩ উইকেটে হেরেছে আফগানিস্তান।
এ জয়ের ফলে ৯ পয়েন্ট নিয়ে দলটি পৌঁছে গেল টেবিলের চার নম্বরে। সেই সাথে সেমিফাইনালের পথটা কঠিন সমীকরণে পড়ে গেল বাংলাদেশ, ইংল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কার।
আজ শনিবার ইংল্যান্ডের লিডসে টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন গুলবাদিন নায়েব। প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ২২৭ রান সংগ্রহ করে আফগানিস্তান। জবাবে মাঝপথে হোঁচট খেলেও ইমাদ ওয়াসিমের দৃঢ়তায় লক্ষ্যে পৌঁছে যায় ৩ উইকেট হাতে রেখেই। খেলতে হয়েছে ৪৯ ওভার ৪ বল।
২২৮ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে প্রথম ওভারেই ফাখর জামানকে (০) হারায় পাকিস্তান। মুজিব উর রহমানের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি। দ্বিতীয় উইকেটে ৭২ রানের জুটিতে সে ধাক্কা সামলে নেন ইমাম উল হক আর বাবর আজম। ১৬তম ওভারের শেষ বলে ৩৬ রান করা ইমামকে স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে ফেলেন মোহাম্মদ নবী। নিজের পরের ওভারে এসে বাবরকেও (৪৫) বোল্ড করেন আফগান এই অফস্পিনার।
শেষ দুই ওভারে পাকিস্তানের দরকার ছিল ১৬ রান। রশিদ খানের ওভারের প্রথম বলটি মিস করলেও পরের বলেই বড় এক ছক্কা হাঁকিয়ে বসেন ওয়াহাব রিয়াজ। ওই ওভারে ১০ রান নেয় পাকিস্তান।
শেষ ওভারে দরকার ছিল মাত্র ৬ রান। আফগান অধিনায়ক গুলবাদিন নাইব বেশ টাইট বোলিংই করছিলেন। প্রথম তিন বলে একটি ওভার থ্রো হওয়ার পরও ৪ রানের বেশি আসেনি। কিন্তু চতুর্থ বলে ঠিকই বাউন্ডারি হাঁকিয়ে দেন সেট ব্যাটসম্যান ইমাদ ওয়াসিম। উল্লাসে মেতে উঠে পাকিস্তান শিবির।
৫৪ বলে ৫ বাউন্ডারিতে শেষ পর্যন্ত ৪৯ রানে অপরাজিত থাকেন ইমাদ ওয়াসিম। ৯ বলে ১৫ রান নিয়ে তার সঙ্গে বিজয়ীর বেশে মাঠ ছেড়েছেন ওয়াহাব রিয়াজ। আফগানিস্তানের পক্ষে ২টি করে উইকেট নিয়েছেন মুজিব উর রহমান আর মোহাম্মদ নবী।
এর আগে টসে জিতে আগে ব্যাটিং করতে নেমে ৯ উইকেটে ২২৭ রানেই থেমে যায় আফগানিস্তানের ইনিংস। পাকিস্তান বোলারদের তোপে একসময় ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়া আফগানরা এই সংগ্রহ পায় আসগর আফগান ও নাজিবুল্লাহ জাদরানের ব্যাটিং দৃঢ়তায়।
আগে ব্যাট করতে নামা আফগানিস্তান তাদের ইনিংসের শুরু থেকেই নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে। ইনিংসের ৪র্থ ওভারে পরপর দুই বলে দুই উইকেট হারায় তারা। উইকেট দুটি নেন পেসার শাহিন আফ্রিদি। বাঁহাতি এই পেসার প্রথমে ফেরান গুলবাদিন নাইবকে। পরের বলেই হাশমতউল্লাহ শহিদিকেও সাজঘরে ফেরান তিনি।
আফ্রিদির করা প্রথম ওভারের চতুর্থ বলে ১৫ রান করা গুলবাদিন ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে থাকা সরফরাজ আহমেদের গ্লাভসে। যদিও আম্পায়ার প্রথমে আউট দেননি। তবে পাকিস্তান রিভিউ নিলে দেখা যায় বল ব্যাটের কানা ছুঁইয়ে প্রবেশ করে সরফরাজের গ্লাভসে। আম্পায়ার তাই সিদ্ধান্ত বদল করে নাইবকে আউট দিতে বাধ্য হন।
- বাজেটে কিছু পরিবর্তন আনতে প্রধানমন্ত্রীর সুপারিশ
- ‘সারা বিশ্বের মানুষকে ঋণ দেব আমরা’
- ২০ ছাত্রীকে ধর্ষণকারী ‘শিক্ষক’ ৬ দিনের রিমান্ডে
আফ্রিদি-রিয়াজ-ইমাদ ওয়াসিমদের বোলিংয়ে তখন ২০০ রানই আফগানদের জন্য অনেক বড় সংগ্রহ বলে হচ্ছিল। তবে আসগরের পর আফগানদের ত্রাতা হয়ে দাঁড়িয়ে যান নাজিবুল্লাহ জাদরান। বাকিরা একের পর এক ব্যর্থতার পরিচয় দিলেও, তিনি খেলেন দায়িত্বশীল এক ইনিংস। আসগরের মতো তিনিও ফিফটি না করার আক্ষেপ নিয়ে আউট হন। ফেরেন সমান ৪২ রান করে। তবে এই ইনিংসেই ২০০ পার করার মতো শক্তি পেয়ে যায় আফগানিস্তান।
নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে ৯ উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ২২৭ রান তোলে দলটি। পাকিস্তানের হয়ে সেরা বোলিং পেসার শাহিন আফ্রিদির। ৪৭ রান খরচায় নেন ৪ উইকেট। এ ছাড়াও ইমাদ ওয়াসিম ও ওয়াহাব রিয়াজ পান ২টি করে উইকেট।