সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গ্যাসের দাম বৃদ্ধি করে এক চুলা ৯২৫ টাকা ও দুই চুলা ৯৭৫ টাকা করা হয়েছে।
বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) আবারও সব পর্যায়ে গ্যাসের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে।
আজ রোববার বিকাল ৪টার দিকে এক সংবাদ সম্মেলনে গ্যাসের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয় বিইআরসি। এ সময় কমিশনের চেয়ারম্যান মনোয়ার ইসলামসহ অন্যান্য কমিশনাররা উপস্থিত ছিলেন।
নতুন দামে ৩২.৮ শতাংশ বেড়েছে গ্যাসের দাম। ফলে গ্রাহকদের আগের চেয়ে প্রায় এক তৃতীয়াংশ বেশি মূল্য পরিশোধ করে গ্যাস ব্যবহার করতে হবে। আগামীকাল সোমবার থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গ্যাসের দাম বৃদ্ধি করে এক চুলা ৯২৫ টাকা ও দুই চুলা ৯৭৫ টাকা করা হয়েছে।
এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে বিইআরসিতে বিতরণ কোম্পানিগুলোর পক্ষ থেকে গ্যাসের দাম গড়ে ১০২ শতাংশ বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়। বাসাবাড়িতে এক চুলার বর্তমান দর ৭৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৩৫০ টাকা এবং দুই চুলার জন্য ৮০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৪৪০ টাকা করার আবেদন করা হয়েছে।
একই সঙ্গে বিদ্যুৎ, সিএনজি, সার, ক্যাপটিভ পাওয়ার, শিল্প-বাণিজ্যসহ সব খাতে দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়। এ নিয়ে গত মার্চে গণশুনানির আয়োজন করা হয়। বিইআরসি আইন অনুসারে শুনানির ৯০ দিনের মধ্যে কমিশনকে সিদ্ধান্ত জানাতে হয়। জুনে সেই সময়সীমা শেষ হচ্ছে।
আইনে আরও উল্লেখ রয়েছে, কমিশন যদি মনে করে কোম্পানির কাছ থেকে আরও তথ্য নিতে হবে তাহলে সময়সীমা বাড়ানো যেতে পারে। তাই জুনে সময়সীমা ফুরালেও গ্যাসের দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত জুলাই মাসে নেয়া হতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এর আগে গত বছরের জুনেও গ্যাসের দাম বাড়ানোর বিষয়টি নিয়ে গণশুনানি হয়েছে। কিন্তু সামনে জাতীয় নির্বাচন থাকায় তখন দাম বাড়ানোয় সরকারের সাড়া মেলেনি। তাই গত ১৬ অক্টোবর সরকারকে তিন হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দেয়ার সুপারিশ করে গ্যাসের দাম না বাড়ানোর ঘোষণা দেয় বিইআরসি।
জ্বালানি বিভাগের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা মত ও পথকে বলেন, বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে এলএনজির দাম অনেক বেশি। আর দেশে গ্যাসের চাহিদাও বাড়ছে দিন দিন।
এ হিসাবে চাহিদা অনুযায়ী এলএনজি আমদানি করতে হলে সরকারকে আরও অনেক বেশি টাকা ভর্তুকি দিতে হবে। কাজেই গ্যাসের দাম বাড়ানো ছাড়া সরকারের সামনে কোনো বিকল্প নেই।
পেট্রোবাংলার এক কর্মকর্তা বলেন, এতদিন আমদানি কম হওয়ায় সরকারের ওপর লোকসানের চাপ বেশি হয়নি। এছাড়া জাতীয় রাজস্ব বোর্ড থেকে এলএনজি আমদানিতে সম্পূরণ শুল্ক, কাস্টমস ডিউটি ও অগ্রিম বাণিজ্য ভ্যাট প্রত্যাহার করায় গ্যাসের দাম অপরিবর্তিত ছিল। আমদানি ১০০০ এমএসিএফডি ছাড়ালে দাম বাড়ানোর তোড়জোড় আরও আগে থেকেই শুরু হতো।
কক্সবাজারের মহেশখালীতে ভাসমান টার্মিনাল নির্মাণের পর আগস্টে বাংলাদেশ এলএনজি যুগে প্রবেশ করে। কাতার থেকে এলএনজি আমদানি করে ওই টার্মিনালের মাধ্যমে গ্যাস জাতীয় গ্রিডে দেয়া হচ্ছে।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির মধ্যে সর্বোচ্চ ১০০০ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করার টার্গেট ছিল সরকারের। কিন্তু দাম বেশি হওয়ায় সরকার এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৩০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস দিচ্ছে জাতীয় গ্রিডে।
- ‘ঈমান বাঁচাতে’ অভিনয় ছাড়ছেন জায়রা!
- জিয়ার কবর নিয়ে খেলবেন না : নজরুল
- রিফাত হত্যা : পুলিশকে তিনবার ফিরিয়ে দিলেন মিন্নি
দাম বাড়ানোর বিষয়ে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ম তামিম বলেন, গ্যাস খাতে লোকসান কমাতে হলে প্রথমে চুরি ঠেকাতে হবে। পাশাপাশি সাগর ও স্থলভাগে গ্যাস অনুসন্ধানের ওপর জোর দিতে হবে। দেশীয় গ্যাস পেলে কম টাকায় সরবরাহ করা যাবে। এলএনজি আমদানি করে গ্যাস-সংকট দূর করা যাবে না।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে সর্বশেষ গ্যাসের দাম গড়ে ২২ দশমিক ৭০ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়। ওই বছরের মার্চ ও জুলাই থেকে তা দুই ধাপে কার্যকর হয়।