মফস্বলের শাদা ডাক পিয়ন

ফারহান ইশরাক

ফারহান ইশরাক, এই সময়ের উল্লেখযোগ্য একজন কবি। জন্ম ৩০ জুন ১৯৭৭ সালে মানিকগঞ্জ জেলার গোপীনাথপুর গ্রামে। ইংরেজী দৈনিকের সাহিত্য সম্পাদনাসহ নানা কাজে ব্যাপ্ত থেকে কবিতাকেই সঙ্গী করে নিয়েছেন আমরণ। ৩০ জুন তাঁর জন্মদিন উপলক্ষে আমাদের শুভেচ্ছা…

অপুষ্পক

পিতা বলে ডেকেছিল নিরীহ ইস্পাত
অঙ্গ পটে ইস্কুরু বা পোলিশ করা নাট
যন্ত্র যশে মুগ্ধ গুণে সূক্ষ্ম পরিপাঠ
একটু আগে ঘুমিয়েছি কৎটুকু বা রাত
এরই মধ্যে স্বপ্ন এলো নিদ্রা পরবশ
কল্পতরু অভিষেকে সত্য সুরে ধ্বস–

নেমে গেছে পৃথিবীতে দৃশ্য পটে ধীর
স্বর গ্রামে বলি কথা ভেতরে বিড়বিড়
হয়তো বলি, মিথ্যে কথা কেবলই বিভ্রম
জন্ম বিধি বলেছিল আমি অপুত্রক
সূত্রমতে সবার জানা ভাবতে তবু ধক
করে ওঠে মধ্য বুকে কিংবা এক পাশ
এই কি তবে অবশতা পূর্ণ অধিগ্রাস?

পুত্র নহে কন্যা নহে লিখনি সন্তান
ইতিহাসে পুষ্ট হলে সুষ্ঠু পরিত্রাণ
এ্ই কি তবে বংশকলা জ্যন্ত অভিসার?
এরচে’ সেরা বিজ্ঞচিত বনেদি আক্ষেপ
কে করেছে কোন তরফে হসন্ত বা রেফ
জুড়ে দিয়ে শুদ্ধ করা শব্দের বানান
এই সুরে কি লিখছে নদী চলতি অভিধান?

উদয়ের প্রথম মুদ্রণ

উদয় পথের লাল ছাপাখানা
ভেজা খামে বার্তা দিয়ে গেল
বিস্ফোরকের রঞ্জকে মাখা
রোলার প্রস্তুত…

মফস্বলের শাদা ডাক পিয়ন
কী বলবে চলতি সন্ধ্যায়!
থমকে যাওয়া ফিনকির
অধ্যায়—

একটু হয়তো জমে যাবে
ঘাসে—অপেক্ষাজনিত
তুমি কি ধরবে হে রোদ,
করুণা চিহ্নগুলো,
ক্রমিক পৃষ্ঠায়?

রাত পোহালেই ছাপা হবে
বিস্তারিত পলল ভূমিকা
খোলা যোনি লালসা বিবৃত
ঝরা নক্ষত্রের পুঁজে ভরা
নাভি…

ভাঁজ করা শব্দাবলি,
এমনকি জিভ
শিরা কাটা নদী-অভিধান
হৃৎপিণ্ডের প্রথম খণ্ড
ছিটকে পড়া আলো
পশু জবাইয়ের ভোর!


শিশির ব্যাখাত শস্য ক্ষেত
কব্জার দুই ভাগে
যুক্ত বিভাজিত…ছাপাকলে
আসবে সংহতি
চাষ মৌসুমে এ কোনো
বিচ্ছেদই নয়
যদি চিহ্নের প্রচলিত দায়
মুছে গেল বেগের ধাক্কায়
সাংবাদিকঘন কালরাতে
প্রতিবেদনের সীমিত বেদনা
অকৃত্রিম কাগজের মার্জিন!


ছুরি সমগ্র খুলে শুয়ে আছি
শোক প্রস্তাবে
শব্দহীন বাণীর আক্ষেপে
ভেজা ঘাসে লতানো রোদে
ছাপা হবো কিস্তি ক্রমে
লাল পটে অকপট
ভোরে…

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে