পাবনায় শেখ হাসিনাকে বহনকারী ট্রেনে গুলিবর্ষণের মামলায় ৯ জনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। এই একই মামলায় ২৫ জনের যাবজ্জীবন, এবং বাকিদের ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেন আদালত।
আজ বুধবার দুপুর ১২টায় এ রায় ঘোষণা করেন জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক রুস্তম আলী। রাষ্ট্রপক্ষের সিনিয়র আইনজীবী গোলাম হাসনায়েন ও আহাদ বাবু বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
- আরও পড়ুন >> বরগুনায় রিফাত ফরাজীকে গ্রেফতার করল পুলিশ
গত সোমবার (০১ জুলাই) পাবনার অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত-১ এ মামলায় কারাগারে থাকা বিএনপির ৩০ নেতা-কর্মীর উপস্থিতিতে উভয়পক্ষের আইনজীবীরা তাদের যুক্তি তুলে ধরেন। উভয়পক্ষের বক্তব্য শুনে বিচারক রোস্তম আলী এ মামলার রায়ের জন্য বুধবার দিন ধার্য করেন।
এদিকে মামলার রায়ের আগে পলাতকদের মধ্যে হুকুমদাতাসহ আরও দু’জন মঙ্গলবার (০২ জুলাই) আত্মসমর্পণ করেন। তারা হলেন- ঈশ্বরদী পৌরসভার সাবেক মেয়র ও পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি মকলেছুর রহমান বাবলু এবং বিএনপি নেতা আব্দুল হাকিম টেনু। পাবনার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক রুস্তম আলীর আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করলে তিনি জামিন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর খুলনা থেকে ট্রেনে ঈশ্বরদী হয়ে সৈয়দপুরের দলীয় কর্মসূচিতে যাচ্ছিলেন তৎকালীন বিরোধীদলের নেত্রী শেখ হাসিনা। তাকে বহনকারী ট্রেনটি ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংশন স্টেশনে প্রবেশের মুহূর্তে ওই ট্রেন ও শেখ হাসিনার কামরা লক্ষ্য করে গুলি চালায় দুর্বৃত্তরা। স্টেশনে যাত্রাবিরতি করলে আবারও ট্রেনটিতে হামলা চালানো হয়।
এ ঘটনায় পরবর্তীতে দলীয় কর্মসূচি সংক্ষিপ্ত করে শেখ হাসিনা দ্রুত ঈশ্বরদী ত্যাগ করেন। পরে ঈশ্বরদী রেলওয়ে জিআরপি থানার ওই সময়কার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাদী হয়ে তৎকালীন ছাত্রদল নেতা ও বর্তমানে ঈশ্বরদী পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া পিন্টুসহ সাতজনকে আসামি করে মামলা করেন।
১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পর পুলিশ মামলাটি পুনঃতদন্ত করে। তদন্ত শেষে নতুনভাবে স্থানীয় বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীসহ ৫২ জনকে এ মামলার আসামি করা হয়।
এদিকে মামলা করার পর ওই বছর কোনো সাক্ষী না পেয়ে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয় পুলিশ। কিন্তু আদালত ওই প্রতিবেদন গ্রহণ না করে অধিকতর তদন্তের জন্য তা সিআইডিতে পাঠান। তদন্ত শেষে ৫২ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দেয় সিআইডি। এদের মধ্যে গত ২৫ বছরে ৫ জন ইতোমধ্যে মারা গেছেন। ১৫ জন এখনও পলাতক।