সারাদেশে গত ছয় মাসে ২ হাজার ১৫৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২ হাজার ৩২৯ জন নিহত ও ৪ হাজার ৩৬১ জন আহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ২৯১ জন নারী এবং ৩৮১ জন শিশু।
গণমাধ্যমকর্মীদের সংগঠন শিপিং অ্যান্ড কমিউনিকেশন রিপোর্টার্স ফোরামের (এসসিআরএফ) জরিপ ও পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এই পরিসংখ্যান তুলে ধরা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত জাতীয় মহাসড়ক, আন্তঃজেলা সড়ক ও আঞ্চলিক সড়কসহ সারাদেশে এসব প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা ঘটে।
ফোরামের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম সবুজের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটি এ প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
২২টি বাংলা ও ইংরেজি জাতীয় দৈনিক, ১০টি আঞ্চলিক সংবাদপত্র এবং ৮টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও সংবাদ সংগ্রহ তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনা করে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, জানুয়ারিতে ৩৮৩টি দুর্ঘটনায় ৫৩ নারী ও ৭১ শিশুসহ ৪১১ জন নিহত এবং ৭২৫ জন আহত হয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে ৪০১টি দুর্ঘটনায় নিহত ও আহত হয়েছে যথাক্রমে ৪১৫ ও ৮৮৪ জন। নিহতের তালিকায় ৫৮ জন নারী ও ৬২ জন শিশু রয়েছে। মার্চে ৩৮৪টি দুর্ঘটনায় ৪৬ নারী ও ৮২ শিশুসহ ৩৮৬ জন নিহত ও ৮২০ জন আহত হয়েছে।
এপ্রিলে দুর্ঘটনা ঘটেছে ৩২৭টি। এতে ৩৪০ জন নিহত ও ৬১০ জন আহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ৩৮ নারী ও ৫৩ শিশু রয়েছে। মে মাসে ২৯৭টি দুর্ঘটনায় ৪৭ নারী ও ৪৪ শিশুসহ ৩৩৮ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে ৫০৪ জন। জুনে দুর্ঘটনার সংখ্যা ৩৬৭টি। এতে ৪৩৯ জন নিহত ও ৮১৮ জন আহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যা যথাক্রমে ৪৯ ও ৬৯।
ফোরামের সভাপতি আশীষ কুমার দে বলেন, দুর্ঘটনা কমাতে যাত্রী ও পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে সড়কের ওপর অধিক নির্ভরশীলতা কমানো প্রয়োজন। এ জন্য নৌ ও রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্প্রসারিত ও আধুনিকায়ন করতে হবে। এছাড়া পর্যক্ষেণে সড়ক দুর্ঘটনার পেছনে ১০টি প্রধান কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে বলে এসসিআরএফ সভাপতি জানান।
সেগুলো হলো-
১. চালকদের প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব ও বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো;
২. চালক, কন্ডাক্টর বা হেল্পারের কাছে দৈনিক ভিত্তিতে গাড়ি ভাড়া দেয়া;
৩. অদক্ষ ও লাইসেন্সবিহীন চালক নিয়োগ;
৪. সড়কে চলাচলে পথচারীদের অসতর্কতা;
৫. বিধি লঙ্ঘন করে ওভারলোডিং ও ওভারটেকিং;
৬. দীর্ঘক্ষণ বিরামহীনভাবে গাড়ি চালানো;
৭. ত্রুটিপূর্ণ গাড়ি চলাচল বন্ধে আইনের যথাযথ প্রয়োগের অভাব;
৮. জনবহুল এলাকাসহ দূরপাল্লার সড়কে ট্রাফিক আইন যথাযথভাবে অনুসরণ না করা;
৯. সড়ক-মহাসড়কে মোটরসাইকেলসহ তিন চাকার যানবাহন চলাচল বৃদ্ধি এবং
১০. স্থানীয়ভাবে তৈরি ইঞ্জিনচালিত ক্ষুদ্রযানে যাত্রী ও পণ্য পরিবহন।