ব্রিটেন ও চীনের মধ্যে হংকংয়ে সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারীদের প্রতি সমর্থন দেওয়ার জেরে রাজনৈতিক উত্তেজনা শুরু হয়েছে। ব্রিটিশ সরকারের বক্তব্যকে কাণ্ডজ্ঞানহীন হিসেবে উল্লেখ করে, অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক না গলাতে যুক্তরাজ্যকে সতর্ক করেছে চীন।
দুই দেশের মধ্যকার এমন উত্তেজনার মধ্যেই হংকংয়ে নতুন করে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। এমনকি হংকংয়ের পার্লামেন্টে শোভা পাচ্ছে ব্রিটিশ পতাকা। বিক্ষোভকারীরা পার্লামেন্টে ব্রিটিশ পতাকা লাগিয়ে দিয়েছে।
হংকংয়ের বিক্ষোভ ইস্যুতে চীনকে করুণ পরিণতি ভোগ করতে হবে বলে মঙ্গলবার এক টুইটে সতর্ক করেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেরেমি হান্ট।
এরপরই যুক্তরাজ্যের সমর্থনে নতুন করে বিক্ষোভ শুরু করে প্রতিবাদকারীরা। পার্লামেন্টে সাটিয়ে দেন ব্রিটিশ পতাকা। তারা তাদের দাবি মেনে নিতে চীনা সরকারের প্রতি দাবি জানান। সেইসঙ্গে ব্রিটিশ সরকারের শাসনামলের কথাও স্মরণ করেন তারা।
প্রতিবাদকারীরা বলেন, ১৯৯৭ সালের পূর্বের হংকং সরকারের সময় আমাদের এখানকার পরিস্থিতি পুরোপুরিই ভিন্ন ছিল। ব্রিটিশরা আমাদের নানাভাবে সহায়তা করত। কিন্তু এখনকার অবস্থা একেবারেই বিপরীত।
এদিকে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী হান্টের বক্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে চীন। সংবাদ সম্মেলনে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক না গলাতে যুক্তরাজ্যের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
বেইজিংয়ের দাবি, বিরোধীদের বিক্ষোভ উসকে দেওয়ার অপচেষ্টা চালাচ্ছে লন্ডন।
চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জিং সুয়াং বলেন, হংকং ইস্যুতে জেরেমি হান্ট যে মিথ্যা বক্তব্য দিয়েছেন তা সত্যিই দুঃখজনক। যুক্তরাজ্যের এমন কাণ্ডজ্ঞানহীন বক্তব্য চীন কখনোই মেনে নেবে না। তারা যদি এমন আচরণ অব্যাহত রাখে, তাহলে আমরাও এর জবাব দিতে বাধ্য হব। তাই আমি মনে করি না, ভবিষ্যতে এ ধরনের বক্তব্য দিয়ে আবারও ভুল করবে।
তবে বৃহস্পতিবার বিবিসি রেডিওকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে চীনের দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেরেমি হান্ট। তার দাবি, হংকংয়ে চলমান বিক্ষোভ উসকে দেওয়ার অভিযোগ চীনা গণমাধ্যমের মনগড়া বক্তব্য।
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেরেমি হান্ট বলেন, আমি পরিষ্কার করে বলতে চাই, হংকংয়ে সহিংসতা সৃষ্টিকারীদের কর্মকাণ্ডে আমি নিন্দা জানিয়েছি। আমি কখনোই সহিংসতা সৃষ্টিকারীদের সমর্থন দেইনি। আমি শুধু সাক্ষরিত চুক্তির প্রতি সম্মান জানাতে চীনকে অনুরোধ জানিয়েছি। কিন্তু চীনের এমন প্রতিক্রিয়া আমাকে সত্যিই বিস্মিত করেছে।
অন্যদিকে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে হংকং সঙ্কট দ্রুত সমাধান হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ব্রিটিশ কনজারভেটিভ পার্টির নেতা এবং সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন এ কথা জানিয়েছেন।