বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন খুন-ধর্ষণ থেকে সমাজকে মুক্ত করতে সব রাজনৈতিক দলকে নিয়ে সংলাপ ডাকতে রাষ্ট্রপতির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, এখনই যেটা করা যেতে পারে, দেশকে রক্ষা করার জন্য মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে বলতে পারি, তিনি জাতীয় একটি সংলাপ আহ্বান করে শিগগিরই একটা উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারেন।
আজ শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। নাগরিক অধিকার আন্দোলন ফোরামের উদ্যোগে ‘গুম-হত্যা-ধর্ষণের মহামারীর কবলে বাংলাদেশ আতঙ্কিত নাগরিক জীবন ও সরকারের ভূমিকা’ শীর্ষক এ আলোচনা সভা হয়।
তিনি বলেন, গুম-খুন-হত্যা-ধর্ষণ আজ মহামারি আকার ধারণ করেছে। সমাজে মূল্যবোধের অবক্ষয় ঘটেছে, পচন ধরেছে। এই মহামারি থেকে দেশকে রক্ষা করতে হলে দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে।
এ সময় তিনি সব রাজনৈতিক দলকে নিয়ে সংলাপ ডাকতে রাষ্ট্রপতির প্রতি আহ্বান জানান।
আলোচনা সভায় ঢাকা ও চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিয়েও কথা বলেন খন্দকার মোশাররফ।
তিনি বলেন, দেশের প্রধান দুই নগর ঢাকা ও চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতা সরকারের উন্নয়নের জোয়ারের ফসল। উন্নয়নের নজির তো আমরা দেখছি। ফ্লাইওভার ঠিকই হয়েছে, কিন্তু ফ্লাইওভারের নিচে গত কদিনে দেখা গেল উন্নয়নের জোয়ার, পানির জোয়ার।
বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, উন্নয়নের জোয়ারে গত কদিন ঢাকা-চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতার কারণে মানুষের যে পরিমাণ ক্ষতি এবং দুর্ভোগ হয়েছে, তাহলে এত টাকা খরচ করে কার জন্য উন্নয়ন করলেন? এই জনগণের জন্য।
উন্নয়নমূলক বিভিন্ন কাজে দুর্নীতির ইঙ্গিত করে সাবেক মন্ত্রী মোশাররফ বলেন, আমরা বুঝি কাদের জন্য এই উন্নয়ন করেছেন।
সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, পদ্মা সেতু নিয়ে কে বা কারা ফেসবুকে কী একটা লিখেছে- এখানে মাথার দরকার হবে ইত্যাদি। সেটার ব্যাপারে আমরা শুনছি যে, গ্রেপ্তারও হচ্ছে কয়েকজন।
খন্দকার মোশাররফ বলেন, সরকার বলে দিল, এর পেছনে বিএনপি আছে। এই যে একটা অপপ্রচার সব কিছুতে। অপপ্রচার করে মিথ্যা বা অসত্য দাবি করে, উন্নয়নের মহীসোপানে বাংলাদেশ, এসব বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করা যাচ্ছে না। জনগণ এই সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের কারণে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে, জনগণের পকেট থেকে টাকা দিতে হচ্ছে।
ভ্যাটের আওতা বৃদ্ধি, গ্যাসের দাম বৃদ্ধি ও মোবাইল ফোন ব্যবহারে খরচ বাড়ানোর দিকে ইঙ্গিত করে বিএনপি নেতা বলেন, প্রধানমন্ত্রী গতকাল গণভবনে দলের একসভায় বলেছেন যে, আওয়ামী লীগ জনগণকে সঙ্গে নিয়ে দেশ চালায়, জনগণকে অবহেলা করে না। আমি বলতে চাই, মোবাইল ফোনে যে পরিমাণ ভ্যাট বসিয়েছেন, গ্যাসের দাম বৃদ্ধি করেছেন-এটা কী জনগণের পক্ষে না বিপক্ষে। জনগণকে আপনারা অবহেলা করেন বলেই নির্দয়ভাবে এসব কর্মকাণ্ডগুলো করতে পারছেন।’
সংগঠনের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোজাম্মেল হক মিন্টুর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, বিলকিস ইসলাম, শাহ নেছারুল হক, এলডিপির যুগ্ম মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, কল্যাণ পার্টির সাহিদুর রহমান তামান্না প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।