আইনি সহায়তা পাওয়া মিন্নির সাংবিধানিক অধিকার : সালমা আলী

ডেস্ক রিপোর্ট

আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি
আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি। ফাইল ছবি

বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী কারো পক্ষে, বিশেষ করে কোন আসামির পক্ষে, আইনজীবী নিয়োগ দেয়া না থাকলে তার পক্ষে আইনজীবী নিয়োগ দেয়া সরকারের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে বলে মন্তব্য করেছেন মানবাধিকার আইনজীবী সালমা আলী। বরগুনায় চাঞ্চল্যকর রিফাত শরীফ হত্যা মামলার প্রধান সাক্ষী আয়শা সিদ্দিকাকে গ্রেপ্তারের পর গতকাল আদালতে নেয়া হলে তার পক্ষে কোনো আইনজীবী লড়তে রাজি হননি।

আয়শা সিদ্দিকা মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেনের অভিযোগ, প্রভাবশালী মহলের চাপে বরগুনার কোনো আইনজীবী তার মেয়ের পক্ষে লড়তে রাজি হননি।

universel cardiac hospital

যদিও মিন্নির বাবার এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বরগুনা জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আব্দুর রহমান নান্টু। বিবিসি’কে তিনি জানিয়েছেন, তারা আইনজীবী পাওয়ার বিষয়ে তাদের সাথে কোনো যোগাযোগই করেননি।

এই প্রেক্ষাপটে মানবাধিকার আইনজীবী সালমা আলী বলেন, কোনো কারণে একজন নাগরিক আইনগত সহায়তা না পেলে তার জন্য আইনগত সহায়তা নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব। এই বিষয়টি যেরকম আমাদের সংবিধানে আছে, সুপ্রিম কোর্ট, হাইকোর্টের অনেক জাজমেন্টে রয়েছে, তেমনি আন্তর্জাতিক আইনের অনেক ধারাতেও স্পষ্ট বর্ণিত রয়েছে।

পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থায় এরকম ক্ষেত্রে অভিযুক্ত হিসেবে একজন নারী থাকলে পরিস্থিতি আরো জটিল হতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি। আরো বলেন, আমাদের সমাজে এরকম ক্ষেত্রে নারীদের অনেক সমস্যার মুখে পড়তে হয়। যেমন ধর্ষণের একজন ভিকটিমকেও নিজের প্রমাণ করতে হয় যে সে ধর্ষিত হয়েছে এবং বিচার চলাকালীন সময় তাকে দোষারোপ করার প্রবণতাও দেখা যায়।

তবে বরগুনার মত অঞ্চলে যথেষ্ট পরিমাণ নারী আইনজীবী না থাকা এবং বাংলাদেশের অধিকাংশ জেলা শহরগুলোর মত সেখানেও আইনজীবীদের মধ্যে রাজনৈতিক প্রভাব ব্যাপক হওয়ায় আয়শা সিদ্দিকার জন্য আইনজীবী পাওয়ার বিষয়টি কঠিন হচ্ছে বলে মনে করেন সালমা আলী।

বরগুনার মত ছোট শহরে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থাকার কারণে অনেক সময় চাইলেও সাহস করে এগিয়ে আসেন না অনেক আইনজীবী, যোগ করেন তিনি।

সালমা আলী আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, একজন ব্যক্তির পক্ষে আইনজীবী নিয়োজিত না থাকলে তার ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার ক্ষুণ্ন হতে পারে। একটা মামলার ক্ষেত্রে দুই পক্ষের সাক্ষীদের বক্তব্য শুনে, বিভিন্ন প্রমাণ পর্যালোচনা করে, দুই পক্ষের সব ধরনের বক্তব্য আলোচনা-পর্যালোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্তে উপনীত হন বিচারক।

এরকম একটি মামলার ক্ষেত্রে আয়শা সিদ্দিকার পক্ষে কোনো আইনজীবী না থাকলে তা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য বা স্বচ্ছ বিচার হিসেবে গৃহীত হবে না বলে মনে করেন তিনি।

সূত্র : বিবিসি

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে