নড়াইলে আ.লীগ থেকে উপজেলা চেয়ারম্যানসহ ৪ বিদ্রোহী প্রার্থী বহিষ্কার

ডেস্ক রিপোর্ট

নড়াইলে আ.লীগ থেকে উপজেলা চেয়ারম্যানসহ ৪ বিদ্রোহী প্রার্থী বহিষ্কার
বিপ্লব বিশ্বাস বিলো, শিকদার আবদুল হান্নান রুনু, সৈয়দ ফয়জুল আমীর লিটু ও এসএম হারুনার রশিদ। ছবি : সংগৃহিত

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সদ্য সমাপ্ত নড়াইলের তিন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নৌকার বিরুদ্ধে প্রার্থী হওয়ায় চার পদধারী নেতাদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এদের মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী (বিদ্রোহী) হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিজয়ী হওয়া লোহাগড়া উপজেলা চেয়ারম্যান শিকদার আবদুল হান্নান রুনুর নামও আছে।

আজ শনিবার থেকেই কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ডাকযোগে শোকজ নোটিশ পাঠানো শুরু হয়েছে বলে দলীয় সূত্র নিশ্চিত করেছে। ফলে সারা দেশের মতো নড়াইল আওয়ামী লীগের চার নেতা সাময়িক বহিষ্কার হচ্ছেন।

নড়াইলের এ চার নেতাকে সাময়িক বহিষ্কারের পাশাপাশি কেন স্থায়ীভাবে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে না, এই মর্মে কারণ দর্শানো নোটিশও পাঠানো হচ্ছে।

আগামী ১৫ দিনের মধ্যে নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে। জবাব পাওয়ার পর আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড তা যাচাই-বাছাই করে দলীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থানকারীদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানা গেছে।

সূত্র জানায়, নড়াইল সদর উপজেলায় আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন দেয়া হয় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন খান নিলুকে।

এখানে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন নড়াইল পৌর যুবলীগের সভাপতি বিপ্লব বিশ্বাস বিলো (আনারস প্রতীক)।

নৌকা প্রতীকে নিজাম উদ্দিন খান নিলু ৪১ হাজার ৯৪৫ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নড়াইল পৌর যুবলীগের সভাপতি বিপ্লব বিশ্বাস বিলো (আনারস প্রতীক) ভোট পান ৩৮ হাজার ১৪৮টি।

লোহাগড়া উপজেলায় আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন দেয়া হয় ঢাকায় অবস্থানকারী সাবেক কেন্দ্রিয় ছাত্রলীগ নেতা রাশেদুল বাশার ডলারকে।

এ উপজেলায় দলের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শিকদার আবদুল হান্নান রুনু (আনারস প্রতীক) এবং সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ ফয়জুল আমির লিটু (মোটরসাইকেল প্রতীক) নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।

নির্বাচনে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শিকদার আবদুল হান্নান রুনু (আনারস) প্রতীক নিয়ে ৩৬ হাজার ৩১৭ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকা প্রতীকের প্রার্থী রাশেদুল বাশার ডলার ২১ হাজার ২২৫ ভোট পান।

কালিয়া উপজেলায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণপদ ঘোষকে নৌকা প্রতীক দেয়া হয়। এ উপজেলায় বিদ্রোহী প্রার্থী হিসাবে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এসএম হারুনার রশিদ (আনারস প্রতিক) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।

নৌকা প্রতীকে কৃষ্ণপদ ঘোষ ৪২ হাজার ৮৪৯ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এসএম হারুনার রশিদ (আনারস প্রতীক) ভোট পান ২০ হাজার ৬১৪ ভোট।

সদ্য সমাপ্ত পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দেশের অন্যান্য জেলার মতো নড়াইলেও আওয়ামী লীগ বনাম আওয়ামী লীগ লড়াই হয়েছে।

এবার আওয়ামী লীগের দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে নৌকার বিরুদ্ধে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী জিতেছে। কেন্দ্র থেকে বারবার সতর্ক করা হলেও কোনো কাজ হয়নি। অনেককে সাময়িকভাবে বহিষ্কারও করা হয়।

এরই ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন ‘গণভবনে’ গত ১২ জুলাই সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ ও কেন্দ্রিয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন খান নিলু বলেন, উপজেলা নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি অবগত হয়েছি। কেন্দ্রিয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলাপ হয়েছে।

তবে অফিসিয়ালি কোনো চিঠি এখনও হাতে পাইনি। হাতে পেলে চিঠির নির্দেশনা মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে