সারাদেশে চলমান বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের থেকে ঋণ আদায় স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রকৃত চাহিদা বিবেচনায় এসব অঞ্চলের কৃষকদের মাঝে নতুন করে ঋণ দিতে বলা হয়েছে।
পাশাপাশি তামাদি কৃষি ঋণ আদায়ে সার্টিফিকেট মামলা না করে সমঝোতার মাধ্যমে অর্থ আদায়ের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ২৫ জুলাই (বৃহস্পতিবার) বাংলাদেশ ব্যাংকের কৃষিঋণ ও আর্থিক সেবা ভুক্তি বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়।
সার্কুলারে বলা হয়েছে, সম্প্রতি দেশের উত্তরাঞ্চল ও হাওরাঞ্চলসহ বিভিন্ন জেলায় উজান থেকে আসা পানি এবং ভারী বৃষ্টিপাতে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় কৃষিজাত ফসলের ক্ষতি হয়েছে। এতে করে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন কৃষকরা। বন্য কবলিত কুড়িগ্রাম, বগুড়া, গাইবান্ধা, সিরাজগঞ্জ, শেরপুর, টাঙ্গাইল, জামালপুর, ফরিদপুর, শরীয়তপুর, রাজবাড়ী, মাদারীপুর, মানিকগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, চাঁদপুর, সিলেট, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, চট্টগ্রাম, কপবাজার, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি, ফেনী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নীলফামারী, লালমনিরহাট, নেত্রকোণা ও মৌলভীবাজার জেলার কৃষকদের বিশেষ সুবিধা দিতে বলা হয়েছে।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ক্ষতিগ্রস্থ অঞ্চলের কৃষকদের ক্ষতি কাটিয়ে উঠে কৃষি উৎপাদন কর্মকান্ড অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে ফসল, মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ খাতে প্রকৃত চাহিদা ও বাস্তবতার নিরিখে নতুন ঋণ দিতে হবে। পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের কৃষি ঋণ আদায় স্থগিত রাখতে হবে। সহজ কিস্তি ও ডাউনপেমেন্টের শর্ত শিথিল করে ঋণ পুনঃতফসিলের সুবিধা দিতে হবে। নতুন করে কোন সার্টিফিকেট মামলা না করে তামাদি হওয়া অনাদায়ি ঋণ ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে আদায়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং দায়েরকৃত সার্টিফিকেট মামলার তাগাদা আপাতত বন্ধ রেখে সমঝোতা বা সোলেনামার মাধ্যমে নিস্পত্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
এতে বলা হয়েছে, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা যাতে প্রকৃত চাহিদা মোতাবেক যথাসময়ে নতুন ঋণ সুবিধা নিতে পারেন এবং ঋণ পেতে কোনো ধরনের হয়রানির শিকার না হন সে বিষয়টি নিবিড়ভাবে তদারক করতে বলা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের পুনর্বাসনের লক্ষ্যে বসতবাড়ির আঙিনায় হাঁস-মুরগী ও গবাদী পশু পালন, গো-খাদ্য উৎপাদন ও ক্রয় এবং অন্যান্য আয় উৎসারী কর্মকান্ডে ঋণ দেওয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। এ বিষয়ে ব্যাংকগুলো থেকে গৃহীত কার্যক্রমের অগ্রগতি আগামী ৩১ অক্টোকরের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের কৃষি ঋণ বিভাগে পাঠাতে বলা হয়েছে।